তামিম ইকবাল বললেন ‘আমরাও পারি’
পঞ্চপাণ্ডবের বাংলাদেশ এখন আর নেই। নিউ জিল্যান্ড সফরে ছিলেন এক পাণ্ডব। তিনিই সবচেয়ে অভিজ্ঞ। তার পরের অভিজ্ঞ দলপতি মুমিনুল। মিরাজের ৩০ ও আর লিটনের ২৮ টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা আছে। বাকিদের কচি-কাঁচার আসরই বলা যায়। এমন দল নিয়ে নিউ জিল্যান্ড সফর। যেখানে আবার অতীত ইতিহাস বিবর্ণ। নেই কোনো জয়। এবারও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে–এটাই সহজে অনুমেয়। কারণ এ সবের সঙ্গে ছিল বাংলাদেশের সাম্প্রতিক সময়ে বাজে খেলা।
মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে বাংলাদেশ খেলতে নেমেছিল ড্র করার মানসিকতাই নিয়েই। সেরা একাদশের দিকে দৃষ্টি ফেরালে তা সহজেই বোঝা যায়। চার পেসার। অলরাউন্ডার নিয়ে ব্যাটসম্যান আটজন। আট ব্যাটসম্যান মিলে রান হয়তো বেশি করা সম্ভব; কিন্তু চার বোলার নিয়ে নিউ জিল্যান্ডকে তাদের মাটিতে বশ করা কঠিনই। অথচ সেই কঠিনেরেই যেন জয় করল বাংলাদেশ ৮ উইকেটে ম্যাচ জিতে। রচিত হলো ইতিহাসে। যে ইতিহাসে মাঠের বাইরে থেকে নাড়া দিয়ে গেছে পঞ্চপাণ্ডবের দুই পাণ্ডব সাকিব আর তামিমকে। দুই জনেই সামাজিক যোগযোগমাধ্যমে নিজেদের অনুভুতি ব্যক্ত করেছেন।
তামিম ইকবাল তার ফেইসবুক ভেরিফাইড পেইজে লিখেছেন দীর্ঘ এক পোস্ট। তিনি লিখেছেন, ‘অসাধারণ জয়, ঐতিহাসিক জয়। গোটা দলকে অভিনন্দন।’ তার পোস্টে আছে নিউ জিল্যান্ড থেকে খালি হাতে ফেরার কথা। তিনি লিখেছেন, ‘বছরের পর বছর, সফরের পর সফর আমরা নিউ জিল্যান্ড থেকে খালি হাতে ফিরেছি। এবার অনেক কারণেই পরিস্থিতি ছিল আরও কঠিন; কিন্তু সব বাধা দূর করে দারুণ এক জয় এনে দিল এই দল।’
নিউ জিল্যান্ডকে তাদের মাটিতে হারানো যে কী পরিমাণ কঠিন এক কাজ তাও উল্লেখ আছে তামিমের পোস্টে। তিনি লিখেছেন, ‘নিউ জিল্যান্ডে গিয়ে নিউ জিল্যান্ডকে হারানো এখন ক্রিকেট বিশ্বে সবচেয়ে কঠিন কাজগুলোর একটি। আমরা দেখালাম, আমরা পারি!’
এই জয়কে দলীয় প্রচেষ্টার ফসল হিসেবে উল্লেখ করে তামিম ইকবাল লিখেছেন, ‘সবচেয়ে ভালোলাগার বিষয়, সর্ম্পূণ দলীয় প্রচেষ্টার জয় এটা। দারুণ স্পিরিটেড ক্রিকেট খেলেছে দল। ইবাদতের অসাধারণ বোলিংয়ে কোনো প্রশংসাই যথেষ্ট নয়। জয় থেকে শান্ত, লিটন থেকে মিরাজ, ইয়াসির, শান্ত এমনকি বদলি নেমে দুর্দান্ত শেষ ক্যাচটি নেওয়া তাইজুল এবং দলের প্রতিটি সদস্য, সবার সম্মিলিত অবদানের জয় এটি।’ উল্লেখিত নামের তালিকায় নেই দলপতি মুমিনুলের নাম। সেই মুমিনুলকে নিয়ে তিনি আলাদাভাবে অনুভুতি ব্যক্ত করেছেন।
মুমিনুলকে টুপিখোলা অভিনন্দন জানিয়ে তামিম লিখেছেন, ‘আমি তবু আলাদা করে বলব একজনের কথা। যখন চরম দুঃসময় এসেছে, কেউ যখন দলের ওপর বিশ্বাস রাখেনি, দলের ভেতরেও অনেকের যখন সংশয় জেগেছে নিজেদের নিয়ে, তখনও বিশ্বাস হারাননি একজন। সে সবসময় বিশ্বাস করে গেছে এবং প্র্রবল বিশ্বাস নিয়েই দলকে বিশ্বাস জোগানোর চেষ্টা করেছে 'আমরা পারি, আমরা অবশ্যই পারি। বাজে দিন এসেছে, খারাপ পারফরম্যান্স হয়েছে। তারপরও সে কখনও দলের ওপর বিশ্বাস হারায়নি। টেস্ট ক্রিকেটের প্রতি তার আবেগ তীব্র। টেস্ট ক্রিকেটকে সে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দেয় সব সময়। মুমিনুল হক, আমাদের অধিনায়ককে টুপি খোলা অভিনন্দন!’
ব্যক্তিগত কারণে সাকিব নিউ জিল্যান্ড সফরে ছুটি নিয়ে যাননি। বর্তমানে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে আছেন পরিবারের সঙ্গে। জয়ের আগে পরি তিনি দুইটি টুইট করেন। জয়ের বন্দরে ভেড়তে থাকার আগে সাকিব টুইট করে লিখেন ‘বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের জন্য কী চমৎকারভাবে শুরু হলো বছরটা। অধিনায়ক, খেলোয়াড় ও কোচিং স্টাফকে বড় অভিনন্দন।’
জয়ের পর তিনি দলকে অভিনন্দন জানিয়ে লিখেন, ‘আমাদের ফাস্ট বোলাররা চমৎকার নৈপুণ্য দেখিয়েছে। ব্যাটসম্যানরাও দারুণ খেলেছে। দিনটা উপভোগ করো। তোমাদের সব কৃতিত্ব।’
এমপি/এসএ/