বাংলাদেশের জয়ের পথে যেসব প্রতিবন্ধকতা!
মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টে বাংলাদেশ যে অবস্থানে দাঁড়িয়ে আছে, তাতে অন্য যে কোনো দল থাকলে চোখ বুঝে জয়ের কথা ভাবত। নিউ জিল্যান্ডও হারের কথা মাথায় নিয়ে শেষ দিন মাঠে নামত। মাত্র ১৭ রানে এগিয়ে থেকে হাতে ৫ উইকেট নিয়ে খেলতে নেমে কতদূরই বা যাবে? আর কতক্ষণই টিকে থাকবে? ড্রেসিং রুমে নেই প্রতিষ্ঠিত ব্যাটসম্যানরা। ভরসার শেষ আশ্রয়স্থল ক্যারিয়ারে শেষবারের মতো ব্যাট করতে নামা রস টেলর। তিনি ৩৭ রানে অপরাজিত। তাকে কতোটা আর সহায়তা দিতে পারবেন ৬ রানে অপরাজিত থাকা রাচিন রবিন্দ্র। কিংবা পরে আসা জেমিসন-সাউদি-ওয়েগনার-বোল্ট। চতুর্থ দিন শেষে কথা বলতে আসা লিটন কুমার দাস জানালেন, ‘জিততেই হবে এমন কোনো কথা নেই। আমরা একটা প্রসেসের ভেতর দিয়ে যাচ্ছি। এ পর্যন্ত সেই প্রসেসটা ধরে রেখে সফল হয়েছি। সামনেও সফল হবো আশা করছি।’
নিউ জিল্যান্ডের মাটিতে বাংলাদেশের বিবর্ন ইতিহাস লিটনদের আশাবাদী করে তুলতে পারছে না। তাছাড়া নিউ জিল্যান্ড যদি তাদের লিড শতরান ছাড়িয়ে নিতে পারে তাহলে বাংলাদেশের জন্য ম্যাচটা জেতা কঠিন হয়ে উঠবে। তবে একটা বিষয় বাংলাদেশ নিশ্চিত করতে পেরেছে এই টেস্ট হারবে না।
লিটনের কথার গভীরে গেলে এই টেস্ট জয়ে বাংলাদেশের জয়ের পথে কিছু প্রতিবন্ধকতা সামনে আছে। প্রথমেই হলো ১৭ রানে এগিয়ে থাকা নিউ জিল্যান্ড সেই লিড কতোদূর টেনে নিয়ে যেতে পারে। আগামীকালের তিন সেশনে নিউ জিল্যান্ড যতো বেশি রান করতে থাকবে, একদিকে যেমন লিড বাড়তে থাকবে অপরদিকে কমে আসতে থাকবে সময়। এই দুইটিই বাংলাদেশের জন্য চ্যালেঞ্জিং ব্যাপার। কারণ লিড বাড়লে সময় কমে যাওয়ার কারণে বাংলাদেশের জন্য দেখে-শুনে খেলা কঠিন হয়ে যাবে। এমন দেখা যেতে পারে জিততে হলে কিছুটা ঝুঁকি নিয়ে খেলতে হবে। আর এমন ঝুঁকি নিয়ে খেলতে গেলে নিউ জিল্যান্ডের চার পেসার লুফে নেবেন। দেখা যাবে রান আসছে, আবার উইকেটও পড়ছে। শেষ পর্যন্ত কী হয় কে জানে? এদিকে আবার অতীত ইতিহাস বলে প্রথম ইনিংসে ভালো করার পর দ্বিতীয় ইনিংসে ভালো করার নজির নেই দেশটির।
প্রতিবন্ধকতা আছে আরো। ইনুজরির কারণে ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয় ব্যাট করতে না পারা। হাতের ইনজুরির কারণে কনকাশন সাবও পাবে না। তাই টার্গেট যাই থাকুক ১০ জন নিয়ে অতিক্রম করার লড়াইয়ে নামতে হবে। অথচ এই জয় প্রথম ইনিংসে নান্দনিক ব্যাটিং করে সবার নজর কেড়েছিলে। ২২৮ বল খেলে করেছিলেন ৭৮ রান।
আরকেটি প্রতিবন্ধকতা হচ্ছে ‘রিভিউ’ না থাকাতে। তিনটি রিভিউ বাংলাদেশ আজ চতুর্থ দিনই নষ্ট করে ফেলেছে। যেসব রিভিউ নিয়েছে তা নিয়ে বিস্তর হাসাহাসি পর্যন্ত হয়েছে। তাসকিনের বলে রস টেলরের ব্যাটে লাগার পরও মিরাজের আশ্বাসে মুমিনুল রিভিউ নিয়েছিলেন। আর এই রিভিউ নিয়েই ধারাভাষ্যকাররা পর্যন্ত হাসাহাসি করেছেন। টুইটারে লেখা হয়েছে বিদ্রুপ। আগামীকাল যদি কখনো রিভিউ নেয়ার প্রয়োজন পড়ে বাংলাদেশকে শুধু আফসোস করতে হবে।
সব প্রতিবন্ধকতাই জয় করা যাবে যদি নিউ জিল্যান্ডের লিডকে বেশি হতে না দেওয়া যায়। শতরানের নিচে থাকলে লাল-সবুজের বিজয় নিশান নিউ জিল্যান্ডের মাটিতে প্রথমবারের মতো উড়তে দেখা যাবে।
এখন শুধুই অপেক্ষার পালা। তীরে এসে বাংলাদেশ তরী ডুবাবে না-এমনিই আশা দেশের ক্রিকেট প্রেমীদের।
এমপি/এসআইএইচ