নিউ জিল্যান্ডকে গুটিয়ে জবাব দিচ্ছে বাংলাদেশ
টেস্টের দ্বিতীয় দিন নিউ জিল্যান্ডকে খুব বেশি দূর যেতে দেননি বাংলাদেশের বোলাররা। ৭০ রান যোগ করতে দিয়েই স্বাগতিকদের শেষ ৫ উইকেট তুলে নেন বাংলাদেশের বোলাররা। ফলে তাদের ইনিংস শেষ হয় ৩২৮ রানে।
আগের দিন নিউ জিল্যান্ড করেছিল ৫ উইকেটে ২৫৮ রান। বল হাতে বোলাররা নিজেদের আলো ছড়ানোর পর ব্যাটসম্যানরাও বেশ ভালোভাবে সামাল দিচ্ছেন নিউ জিল্যান্ডের আগুন ঝরানো পেস আক্রমন। সাউদি-বোল্ট-ওয়েগনার-জেমিসনের আক্রমণ মোকাবেলা করে চা বিরতি পর্যন্ত বাংলাদেশের সংগ্রহ ১ উইকেটে ৭০। মাহমুল হাসান ৩২ ও নাজমুল হোসেন ১২ রানে অপরাজিত। ২২ রান করে আউট হন সাদমান। ৪৩ রানে ওপেনিং জুটি ভাঙেন ওয়েগনার নিজের বলে নিজেই ক্যাচ ধরে।
আগের দিন শেষ সেশনে বাংলাদেশের বোলারদের যে দাপট শুরু হয়েছিল তা অব্যাহত ছিল আজ দ্বিতীয় দিনের প্রথম সেশনেও। এক সেশসনেই নিউ জিল্যান্ড হারায় ৫ উইকেট। প্রথম দুই সেশনে তারা হারিয়েছিল ২ উইকেট। রান যোগ করেছিল ১৪৭। সেখানে পরের দুই সেশনে হারায় ৮ উইকেট। রান যোগ করে ৮১। বাংলাদেশের বিপক্ষে নিজের মাটিতে নিউ জিল্যান্ডের ৩২৮ রান সর্বনিম্ন। এর আগের সর্বনিম্ন ছিল ৩৫৪। ২০১৭ সালে ক্রাইস্টচার্চে করেছিল তারা।
নিউ জিল্যান্ডের পেস বান্ডব পিচে প্রথম দিন বাংলাদেশের পেসাররা ছড়ি ঘোরালেও ৫ উইকেট কিন্তু ভাগাভাগি করে তারা নিতে পারেননি। সেখানে দুইটি উইকেট ছিল স্পিনারদের। আজও কিন্তু পেসাররা কাঁপন ধরিয়েছেন। কিন্তু উইকেট নেয়ার ক্ষেত্রে তারা পিছিয়ে ছিলেন। আজকের পতন হওয়া ৫ উইকেটের ৪টিই ছিল তাদের। অফ স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ আগের দিন ভালো বোলিং করার পরও কোনো উইকেট নিতে পারেননি। আজ ৩টি নিয়েছেন। ১ উইকেট ছিল মুমিনুলের কব্জায়। প্রথম দিন ২ উইকেট নিয়ে সফল বোলার শরিফুলের। বোলারদের এ রকম শাসনের দিন ফিল্ডিংয়ে ৪টি ক্যাচ ধরে আলো ছড়িয়েছেন সাদমান ইসলামও। ছুঁয়েছেন সৌম্য সরকারের রেকর্ড। এক ইনিংসে উইকেট কিপার ছাড়া এ রকম কীর্তিতে এটাই সেরা অর্জন।
নিউ জিল্যান্ডের আজকের সগ্রহের বেশি অবদান ছিল আগের দিনের অপরাজিত ব্যাটসম্যান হ্যানরি নিকোলাসের। অর্ধেকেরও বেশি আসে তার ব্যাট থেকে। যোগ হওয়া ৭০ রানের ৩৭ রান করেন তিনি। আগের দিন অপরাজিত ছিলেন ৩৮ রানে। আউট্ হন শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে। তাকে শিকার করেন মুমিনুল। ইনিংসের সর্বোচ্চ দুই রান সংগ্রহকারিই মুমিনুলের শিকার হন। প্রথম দিন আউট করেছিলেন সেঞ্চুরিয়ান কনওয়েকে। ৯৭ বলে তিনি দ্বাদশ ফিফটি। মুমিনুল শেষ আঘাত করার আগে প্রথম আঘাত হানেন প্রধম দিনের মতেই শরিফুল। রাচিন রবীন্দ্রকে সাদমান ইসলামের সহায়তায় আউট করেন (৪)। থার্ড স্লিপে দাঁড়িয়ে ক্যাচ ধরেন সাদমান। তখন নিউ জিল্যান্ড যোগ করতে পেয়েছিল ৭ রান।
কাইল জেমিসনের (৪) সাপোর্টে নিকোলাস বেশ ভালোই এগিয়ে নিচ্ছিলেন দলকে। সপ্তম উইকেট জুটিতে তারা ৩২ও রান যোগ করেন। জুটি ভাঙ্গেন মেহেদী হাসান মিরাজ। একবার ব্যক্তিগত ৫ রানে তারই বলে মাহমুদুল হাসান জয়ের কল্যাণে বেঁচে যান। কিন্তু সেই মিরাজেরই পরের ওভারে ছক্কা মারতে গিয়ে লং অনে সাদমান ইসলামের তালুবন্দি হন। এই মিরাজই পরে পরপর দুই বলে টিম সাউদি ও নেইল ওয়েগনারকে ফিরিয়ে দিয়ে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন। মিড উইকেটে সাউদির (৬) ক্যাচ ধরেন মুমিনুল।
ওয়েগনারকে আউট করেন রিভিউ নিয়ে। ব্যাটের কানায় লেগে উইকেটের পেছনে লিটন দাসের হাতে জমা পড়ে। কিন্তু আবেদনে সাড়া দেননি আম্পায়ার। দলপতি মুমিনুলি রিভিউ নিয়ে আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত বদল করেন। লং অনে দাঁড়িয়ে সাদমান বোল্টের ক্যাচ নিতে পারলে মিরাজ হ্যাটট্রিক করতে পারতেন। কিন্তু সাদমান ফেলে দেন। হয় বাউণ্ডারি। পরে বোল্টকে আর আউট করা যায়নি। কারণ অপরপ্রান্তে থাকা নিকোলাস (৭৫) শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হয়ে যান মুমিনুলের বলে সাদমানের হাতে ধরা পড়ে। তার ২২৭ বলের ইনিংসে ছিল ১২টি বাউণ্ডারি। শরিফুল ৬৯ ও মিরাজ ৮৬ রানে নেন ৩টি করে উইকেট। মুমিনুল ৬ রানে নেন ২ উইকেট। এবাদত ৭৫ রান দিয়ে নেন ১ উইকেট।
এমপি/এসএ/