জিতেও উত্তরাঞ্চলের ফাইনাল অনিশ্চিত!
শেষ রাউন্ডের ম্যাচ তিনদিনেই ইসলামী ব্যাংক মধ্যাঞ্চলের বিপক্ষে ৬ উইকেটে জিতেও ফাইনালে যাওয়ার জন্য অপেক্ষাই থাকতে হচ্ছে বিসিবি উত্তরাঞ্চলকে।
বিসিএল-এর তৃতীয় রাউন্ডের অপর ম্যাচের দিকে তাকিয়ে থাকতে হচ্ছে তাদের। যেখানে অংশ নিচ্ছে বিসিবি দক্ষিণাঞ্চল ও ওয়ালটন মধ্যাঞ্চল। এই দুই দলের খেলায় জয়-পরাজয় নিষ্পত্তি হলে বিসিবির দুই দল দক্ষিণাঞ্চল ও উত্তরাঞ্চল খেলবে ফাইনালে। আর ড্র হলে উত্তরাঞ্চল বাদ পড়বে। জায়গা করে নিবে ওয়ালটন মধ্যাঞ্চল। উত্তরাঞ্চল পয়েন্ট ৩ ম্যাচে ১০। খেলা ড্র হলে দক্ষিণাঞ্চলের পয়েন্ট হবে ১২ ও মধ্যাঞ্চলের পয়েন্ট ১১। বর্তমানে এই দুই দলের পয়েন্ট ২ ম্যাচে দক্ষিণাঞ্চলের ১০ ও মধ্যাঞ্চলের ৯। তৃতীয় দিন শেষে ম্যাচের যে দৃশ্য তাতে এই ম্যাচের গতিপথ ড্রয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। মধ্যাঞ্চলের ৪৮১ রানের জবাব দিতে নেমে দক্ষিণাঞ্চল তৃতীয় দিন শেষে করেছে ৫ উইকেটে ৩৮১। তৌহিদ হৃদয় ১২২ ও অমিত হাসান ১১৭ রান করেন। এই দুইজনেই আগের ম্যাচে বিসিবি দক্ষিণাঞ্চলের বিপক্ষেও সেঞ্চুরি করেছিলেন। তৌহিদ হৃদয় ডাবল সেঞ্চুরি করে আউট হয়েছিলেন ২১৭ রান করে। অমিত হাসান করেছিলেন ১৩১ রান।
চট্টগ্রামে তৃতীয় রাউন্ড শুরুর আগে উত্তরাঞ্চলের পয়েন্ট ছিল ২ ও পূর্বাঞ্চলের ৮। ফাইনালে যাওয়ার পথে পূর্বাঞ্চলই বেশি সুবিধাজনক অবস্থানে ছিল। উত্তরাঞ্চলের অবস্থা ছিল নাজুক। ম্যাচ জিতে সেখানে তারা এখন ফাইনালের দাবীদার। বিদায় হয়ে গেছে পূর্বাঞ্চল। তৃতীয় দিন এই ম্যাচে উইকেট পড়েছে ১৪টি ।পূর্বাঞ্চলের সবকটির সঙ্গে উত্তরাঞ্চলের চারটি।
১৪৪ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় দিন ব্যাট করতে নেমে পূর্বাঞ্চল বিনা উইকেটে করেছিল ১৭ রান। ম্যাচ নিজেদের অনুকূলে নিতে হলে প্রয়োজন ছিল বড় ইনিংস গড়া কিন্তু সে কাজটি দলের কোনো ব্যাটসম্যানই করতে পারেননি। হাফ সেঞ্চুরির ইনিংস একটিও নেই। দিনের শুরুতেই বিদায় নেন বিপিএলে দল না পাওয়া আশরাফুল। এরপর ব্যাটিংয়ে ধস নামেনি। কিন্তু কেউই বড় ইনিংস খেলতে পারেননি। আসলে এই কাজটি করতে দেননি বাঁহাতি স্পিনার সানজামুল ইসলাম। তিনি একাই তলে নেন ৮ উইকেট। রান খরচ করেন ৯৮। বাকি দুই উইকেট নেন শফিকুল। ইমরুল কায়েসকে আউট করে সানজামুল শুরু করেন উইকেট পাওয়ার মিছিল। এরপর তা চলতেই থাকে। যেনো হয়ে উঠেছিলেন হ্যামিলনের সেই বাঁশিওয়ালা। ব্যাটসম্যানরা ক্রিজে আসবেন আর তিনি উইকেট নেবেন। যখনই যে ব্যাটসম্যান মাথা তুলে দাঁড়াতে চেয়েছেন তাকেই তিনি ‘বধ’ করেছেন। যেমন ইনিংসের সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী নাঈম হাসান (৪৫) কিংবা আফিফ গোসেন (৩৫)। এরফলে২৫৪ রানেই অলআউট হয় তারা। পূর্বাঞ্চল এগিয়ে থাকে মাত্র ১১০ রানে।
টার্গেট খুব বেশি, নয়। কিন্তু এই রান তাড়া গিয়েও ভালোই প্রতিরোধের মুখে পড়েছিল উত্তরাঞ্চল। শুরুতেই ওপেনার তানজিদের সাথে ওয়ান ডাউনে নামা তানবিরকে ফিরিয়ে দেন পেসার তানভীর। দলের রান তখন ৩৪। কিন্তু তৃতীয় উইকেট জুটিতে জুনায়েদ ও নাঈম ইসলাম মিলে দলের রানকে শতরানের কাছাকাছি নিয়ে যান। ৯৩ রানে গিয়ে জুটি ভাঙ্গে। নাঈমকে ২৮ রানে ফিরিয়ে দেন আফিফ। ৩ রান পর জুনায়েদকে ৩৮ রানে আউট করেন নাঈম হাসান। এরপর আর কোনো উইকেটের পতন দেননি দলপতি মার্শাল আইয়ুব (১২*) ও মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন (৫*)।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ইসলামী ব্যাংক বনাম পূর্বাঞ্চল বনাম বিসিবি উত্তরাঞ্চল
পূর্বাঞ্চল: ১৬৬ ও ২৫৪/১০ (আগের দিনের ১৭/০), ওভার ৫১ ( নাঈম হাসান ৪৫, আফিফ হেসেন ৩৫,প্রিতম কুমার ৩৩, কানভীর ইসলাম ৩০, শাহদাত গোসেন ২৭, ইমরুল কায়েস ২৩, মোহাম্মদ আশরাফুল ১৮, শামসুর রহমান ১৮, সানজামুল ইসল/৫৮)।
উত্তরাঞ্চল: ৩১০ ও ১১১/৪, ওভার ২৮ ( জুনায়েদ সিদ্দিক ৩৮, নাঈম ইসলাম ২৮, তানজিদ হাসান ১৯, মার্শাল আইয়ুব ১২, তানভীর ইসলাম ২/৩৫)।
ওয়ালটন মধ্যাঞ্চল বনাম বিসিবি দক্ষিণাঞ্চল
মধ্যাঞ্চল: ৪৮১।
দক্ষিণাঞ্চল: ৩৮১/৫ ( আগের দিনের ৯২/১) ওভার ১২০ ( তৌহিদ হৃদয় ১২২, অমিত হাসান ১১৭, পনিাক ঘোষ ৭৪, জাকির হোসেন ৩৬*, নাহিদুল ইসলাম ১৮*, হাসান মুরাদ ২/৮১, নাজমুল ইসলাম ২/৮৯)।
এমপি/এমএমএ/