সৌম্য সরকারের সেঞ্চুরি বিপদে পূর্বাঞ্চল
বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগে ( বিসিএল) চারটি দলেরই ফাইনালে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সর্বোচ্চ ১০ পয়েন্ট নিয়ে কিছুটা সুবিধাজনক অবস্থানে থাকা বিসিবি দক্ষিণাঞ্চল। আবার ২ পয়েন্ট সবার নিচে থাকা বিসিবি উত্তরাঞ্চলও কঠিন লক্ষ্য নিয়ে শামিল আছে। উত্তরাঞ্চলের সামনে একটিই পথ খোলা আর তা হলো সরাসরি ম্যাচ জেতা। সেই কঠিন সমীকরণকে তারা নিজেদের সুবিধাজনক অবস্থানে নিয়ে এসেছে শেষ রাউন্ডের প্রথম দিনই। প্রতিপক্ষ ইসলামী ব্যাংক পূর্বাঞ্চল ৮ পয়েন্ট নিয়ে আছে বেকায়দায়।
রাজশাহীতে প্রথম দিন পূর্বাঞ্চল মাত্র ১৬৬ রানে অলআউট হয়ে যায়। উত্তরাঞ্চল ব্যাট করতে নেমে আছে বড় সংগ্রহের দিকে। বিনা উইকেটে তাদের সংগ্রহ ৭১। চট্টগ্রামে বিসিবি দক্ষিণাঞ্চল খেলছে ৮ পয়েন্ট পাওয়া ওয়ালটন মধ্যাঞ্চলের বিপক্ষে। সৌম্য সরকারের অপরাজিত ১২৮ রানের সুবাদে তারা আছে ভালো অবস্থানে। ৪ উইকেটে সংগ্রহ ২৯৩। তবে আজ মাত্র ম্যাচের প্রথম দিন। বাকি তিন দিনে অনেক পরিবর্তন আসতে পারে দৃশ্যপটে।
রাজশাহীতে টস জিতে পুরো ফায়দা তুলে নেন উত্তরাঞ্চলের দলপতি মার্শাল আইয়ুব। তার দলের বোলারদের তোপে পড়ে মোহাম্মদ আশরাফুল ছাড়া বাকি সবাই আসা-যাওয়ায় শামিল হন। শফিকুলের তোপে পড়ে মাত্র ১০ রানে হারায় ৩ উইকেট। আফিফ হোসেনকে নিয়ে আশরাফুল ধস ঠেকানোর চেষ্টা করেছিলেন। জুটিতে ৫৫ রানে আসার পর বিচ্ছেদ আসে আফিফ আউট হয়ে গেলে। তাকেও ব্যক্তিগত ৩৭ রানে ফিরিয়ে দেন শফিকুল। একটু পর আবার আঘাত হানেন সেই শফিকুল। এবার তিনি ফিরিয়ে দেন মাহমুদুল হাসান জয়কে (৫)। তুলে নেন ইনিংসের পঞ্চম উইকেট। অপরপ্রান্তে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে অভিজ্ঞ আশরাফুল দেখছিলেন সতীর্থদের আসা-যাওয়া। ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে প্রীতম কুমারকে নিয়ে আশরাফুল আবারও ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেন। এবার তারা যোগ করেন ৪৭ রান। কিন্তু শফিকুল ঝড় থেমে যাওয়ার পর এবার শুরু হয় সানজামুল ঝড়। এই দুই জনকেই তিনি ফিরিয়ে দেন। প্রথমে প্রীতমকে ২৬ রানে। পরে আশরাফুরকে ৭০ রানে। উইকেটের পেছনে ক্যাচ ধরেন মহিদুল ইসলাম অঙ্কন। তার ১৬০ বলের ইনিংসে ছিল এক ছক্কা আর ৯ চার। এ জুটি ভেঙে যাওয়ার পর ৪ রানে পড়ে বাকি ৩ উইকেট। সানজামুল নাঈমকে (১৫) আউট করার পর শরিফুল ৩ বলের ১ রানের ব্যবধানে তুলে নেন শেষ দুই উইকটে। শফিকুল ৩৫ রানে নেন ৫ উইকেট। সানজামুল ৩ উইকেট নিতে খরচ করেন শরিফুলের ২ উইকেট খরচ ছিল ১৯ রান।
ব্যাট করতে নেমে উত্তরাঞ্চলের ব্যাটসম্যানদের ওপর আর সেভাবে প্রভাব বিস্তার করতে পারেননি পূর্বাঞ্চলের বোলাররা। তানজিদ হাসান ও জুনায়েদ দিন পার করে দেন ৭১ রান যোগ করে। তানজিদ ৩৫ ও জুনায়েদ ৩০ রানে অপরাজিত থাকেন ।
রান খরায় ভুগে সৌম্য সরকার নিউ জিল্যান্ড সফরে দল থেকে বাদ পড়েন। নিজেকে ফিরে পাওয়ার মঞ্চ হিসেবে বেছে নেন এই বিসিএলের আসরকে। প্রথম ম্যাচে সেঞ্চুরি (অপরাজিত ১০৪) করার পর দ্বিতীয় ম্যাচে করেছিলেন ২ ও ৭৩। তৃতীয় ম্যাচে এসে পেলেন আবারও সেঞ্চুরির দেখা। এখনো অপরাজিত আছেন ১১২ রানে। সেখানে আরও রান স্ফীত করতে পারবেন আগামীকাল দ্বিতীয় দিন।
টস হেরে ব্যাট করতে নামার পর মধ্যাঞ্চল বিপদেই ছিল দারুণ ফর্মে থাকা নাসুমের তোপে পড়ে। দলীয় ২৩ রানের মাঝেই প্রথম ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান মোহাম্মদ মিঠুন (১২) ও মিজানুর রহমানকে (৭) হারিয়ে। এই বিপর্যয়কে ঘনীভূত হতে দেননি সৌম্য। সালমান হোসেনকে নিয়ে তিনি তৃতীয় উইকেট জুটিতে ১৪৪ রান যোগ করে দলকে ভালো অবস্থানে নিয়ে যান। সালমান ৭০ রান করে আউট হওয়ার পর তাইবুরও দ্রুত ফিরে যান। এরপর পঞ্চম উইকেট জুটিতে দলপতি শুভাগত হোমকে নিয়ে সৌম্য দিনের বাকি সময় পার করে দেন। জুটিতে যোগ হয় ১১৬ রান। ২৪৭ বলে ৩ ছক্কা ও ১০ চারে সৌম্য ১১২ ও শুভাগত হোম ৮৮ বলে ৯ চারে ৬২ রান নিয়ে আগামীকাল আবার ব্যাট করতে নামবেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ইসলামী ব্যাংক বনাম পূর্বাঞ্চল বনাম বিসিবি উত্তরাঞ্চল
পূর্বাঞ্চল: ১৬৬/১০, ওভার ৫৫.৫ ( মোহাম্মদ আশরাফুল ৭০, আফিফ হোসেন ৩৭,প্রীতম কুমার ২৬, নাঈম হাসান ১৫, শফিকুল ইসলাম ৫/৩৫, সানজামুল ইসলাম৩/৪৭, শরিফউল্লাহ ২/ ১৯)
উত্তরাঞ্চল:৭১/০, ওভার ২৮ ( তানজিদ হাসান ৩৫*, জুনায়েদ সিদ্দিক ৩০*)
ওয়ালটন মধ্যাঞ্চল বনাম বিসিবি দক্ষিণাঞ্চল
মধ্যাঞ্চল: ২৯৩/৪, ওভার ৯০ ( সৌম্য সরকার ১২৮*, সালমান হোসেন ৭০, শুভাগত হোম ৬২*, রিসাদ হোসেন ২/৭৭, নাসুম আহমেদ ২/৯১)।
এমপি/এমএমএ/