মধ্যাঞ্চলের জয় কেড়ে নিল পূর্বাঞ্চল
ক্রিকেট মানে অনিশ্চয়তার খেলা। তিন কাঠির খেলায় কখন কি ঘটে যায় তার কোনো ইয়ত্তা নেই। যেকোনো সময় বদলাতে পারে রং। পরিবর্তন আসে দৃশ্যপটে। এমনি ঘটনা ঘটেছে মিরপুরে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগে (বিসিএল) ওয়ালটন মধ্যাঞ্চল ও ইসলামী ব্যাংক পূর্বাঞ্চলের ম্যাচে। নিশ্চিত জেতা ম্যাচ দক্ষিণাঞ্চলের। সেই ম্যাচ তারা জিততে পারেনি। যেনো মুখের খাবার কেড়ে নেওয়া হলো। হার মেনেছে ১০ রানে। এই হারের ফলে চার দলের ফাইনালে উঠার লড়াই জমে উঠল। জিতলে মধ্যাঞ্চলের ফাইনাল নিশ্চিত হতো। এখন শেষ রাউন্ডে বিসিবি দক্ষিণাঞ্চলের বিপক্ষে ম্যাচের পর নির্ধারিত হবে ভাগ্য।
পূর্বাঞ্চলের এটি ছিল প্রথম জয়। প্রথম ম্যাচে তারা হেরেছিল বিসিবি দক্ষিণাঞ্চলের কাছে। পরের ম্যাচ তারা খেলবে বিসিবি উত্তরাঞ্চলের বিপক্ষে।
১৯৯ রানের টার্গেট নিয়ে খেলতে নেমে তৃতীয় দিন শেষে ১ উইকেটে করেছিল ৮৭ রান। দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান সৌম্য সরকার ও মোহাম্মদ মিঠুন সেই রানকে নিয়ে যান ১৪৫ পর্যন্ত। জয় থেকে দূরে ৫৪ রানে। অথচ সেই ম্যাচ জিততে পারেনি মধ্যাঞ্চল। মিঠুন-সৌম্য জুটি ভেঙ্গে যাওয়ার পর হুড়মুড় করে পড়তে থাকে উইকেট। মাত্র ৪৩ রান যোগ করতেই হারায় ৯ উইকেট। ১৮৮ রানে থেমে যায় তাদের ইনিংস। ঘাতকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন নাঈম হাসান। ৪৮ রানে তুলে নেন ৬ উইকেট। এর আগে দ্বিতীয় ইনিংসে দলের ব্যর্থতার মাঝেও ব্যাট হাতে তিনি করেছিলেন ৬৮ রান। প্রথম ইনিংসে ৭০ রানে ২ উইকেট নেয়ার পাশাপাশি ব্যাট হাতে করেছিলেন অপরাজিত ৪০ রান। ম্যাচ সেরাও হয়েছেন তিনি।
শেষ দিনে মধ্যাঞ্চলের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ১১২ রান। হাতে ৯ উইকেট। মিঠুন ৪২ ও সৌম্য ৩৩ রান নিয়ে খেলতে নামেন। এই জুটি নির্ভরতার সাথে খেলে দলকে বড় জয়ের দিকে নিয়ে যাচ্ছিলেন। মিঠুন ৭৭ ও সৌম্য ৯২ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন। হাফ সেঞ্চুরি করার পরও দুজনে এগিয়ে যেতে থাকেন। তারা যেভাবে খেলছিলেন তাতে মনে হচ্ছিল আর কোনো উইকেটই পড়বে না। কিন্তু নাঈম হাসান তখন অন্য অংক কষছিলেন। ১ রানের ব্যবধানে দুজনকে তিনি আউট করেন। জুটিতে আসে ১২০ রান। প্রথমে সৌম্য ৭৩ রানে, পরে মিঠুন ৬০ রানে ফিরে যান। মিঠুনের ৯৮ বলের ইনিংসে ৭টি চার ও ১টি ছয়।
সৌম্যর ১৩৯ বলের ইনিংসে ১১টি চারের সঙ্গে ১টি ছক্কা ছিল। ১ রানের ব্যবধানে দুই ব্যাটসম্যান ফিরে গেলেও মধ্যাঞ্চলের জয় নিয়ে শঙ্কা ছিল না। কারণ তখনও হাতে ৭ উইকেট। রান প্রয়োজন ৫৩ রান। খুব বেশি দূরে নয় জয়। কিন্তু তাইবুর (৪) ও অনিককে(১) ফিরিয়ে দিয়ে ম্যচে উত্তেজনা নিয়ে আসেন নাঈম । সেই উত্তেজনায় বারুদ মিশিয়ে দেন তানভীর। তিনি দলপতি শুভাগত হোম (৪) ও আবু হায়দারকে (০) ফিরিয়ে দেন। অপরদিকে নাঈম আবারো আঘাত হেনে ফিরিয়ে দেন মৃত্যঞ্জয় চৌধুরীকে (১)। দলের রান ৮ উইকেটে ১৬৯। তখনও মধ্যাঞ্চলের জয়ের সম্ভাবনা ছিল। কারণ উইকেটে ছিলেন চারে নামে সালমান। এ সময় তিনি রবিউলকে নিয়ে নবম উইকেট জুটিতে দাঁড়িয়ে যান। ধীরে ধীরে জয়ের দিকে ছুটতে থাকেন তারা। কিন্তু এখানেও আঘাত হানেন সেই নাঈম। তিনি ব্যক্তিগত ১৯ রানে ফিরিয়ে দেন সালমানকে। এরপর আর মধ্যাঞ্চলের জয় কঠিন হয়ে পড়ে। শেষ ব্যাটসম্যান রবিউলকে (১৪) আউট করে তানভীর পূর্বাঞ্চলেকে জয়ের আনন্দে মাতিয়ে তুলেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ওয়ালটন মধ্যাঞ্চল বনাম ইসলামী ব্যাংক পূর্বাঞ্চল:
পূর্বাঞ্চল: ২৪৫ ও ১৮০।
মধ্যাঞ্চল: ২২৭/১০, ও ১৮৮/১০, (আগের দিনের ৮৭/১) ওভারও ৫৯.১ ( সৌম্য ৭৩, মোহাম্মদ মিঠুন ৬০, সালমান ১৯, রবিউল ১৪, নাঈম ৪৮/৬, তানভীর ৩/৫৩)।
মিজানুর ১২, এনামুল ১/৩৮)
এমপি/এসআইএইচ