১১ গোলের ম্যাচে পাকিস্তানকে হারিয়ে ফাইনালে কোরিয়া
আরেকটি ভারত-পাকিস্তান লড়াই হলো না। এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির প্রথম সেমি ফাইনালে কোরিয়ার কাছে ৬-৫ গোলে হেরে বিদায় নিয়েছে পাকিস্তান। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আসরে কোরিয়ার এটি ছিল প্রথম ফাইনাল। এদিকে ২০১১ সালে শুরু হওয়ার পর পাকিস্তান এবারই প্রথমবারের মতো ফাইনালে উঠতে ব্যর্থ হলো পাকিস্তান। তারা তিনবারের চ্যাম্পিয়ন ছিল।
গোল লাইনের স্কোর দেখে মনে হবে খেলার মিমাংসা হয়েছে টাইব্রেকারে। ১১ গোলের ম্যাচে সমতা এসেছিল চারবার। একবার পাকিস্তান ও তিনবার কোরিয়া এগিয়ে ছিল। দলের হয়ে জ্যাং জং ইয়োন হ্যাটট্রিকসহ চার গোল করেন। অপর গোল দুইটি করেন ইয়াং জি হুন, জিং জুন উ। পাকিস্তানের হয়ে মুবাশার আলী দুইটি ও ওমর ভুট্টো, জুনাইদ মানজুর, আফরোজ একটি করে গোল করেন।
প্রথম কোয়ার্টার (২-১)
তৃতীয় মিনিটে ওমর ভুট্টার ফিল্ড গোলে দারুণ সূচনা পায় পাকিস্তান । ১১ মিনিটে জ্যাং জং ইয়োন পেনাল্টি স্ট্রোক থেকে গোল করে কোরিয়াকে সমতায় ফেরান। পরের মিনিটে আরেক পেনাল্টি স্ট্রোক থেকে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন ২০০৪ সালে এথেন্স অলিম্পিক দিয়ে সিনিয়র দলের হয়ে ক্যারিয়ার শুরু করা এ ডিফেন্ডার।
দ্বিতীয় কোয়ার্টার (৪-৩)
২২ মিনিটে জুনাইদ মঞ্জুর ফিল্ড গোল করে পাকিস্তানকে সমতায় ফেরান। ২৫ মিনিটে পেনাল্টি কর্নার গোলে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করে কোরিয়াকে ফের এগিয়ে নেন ৩৭ বছর বয়সি জ্যাং জং ইয়োন। ২০০৭ ও ২০১১ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সর্বোচ্চ গোলদাতার এটি ছিল প্রতিযোগিতার সপ্তম গোল। ৩০ মিনিটে আফরাজের ফিল্ড গোল স্কোর লাইন ৩-৩ করে পাকিস্তান। ৩০ প্লাস মিনিটে ইয়াং জি হুনের পেনাল্টি কর্নার গোলে ৪-৩ গোলের লিড নিয়ে প্রথমার্ধ শেষ করে কোরিয়া।
তৃতীয় কোয়ার্টার (৫-৩)
প্রথম দুই কোয়ার্টারে পাকিস্তান একবার ও কোরিয়া দুইবার এগিয়ে থাকলেও কোনো দলই এক গোলের বেশি ব্যবধানে এগিয়ে ছিল না। কিন্তু তৃতীয় কোয়ার্টারে এক গোলে এগিয়ে থেকে খেলতে নামা কোরিয়া গোল করে ব্যবধান দুই গোলে নিয়ে যায় (৫-৩)। ৩২ মিনিটে পেনাল্টি কর্নার থেকে আবু মাহমুদের ফ্লিক রুখে দিয়ে কোরিয়ার লিড ধরে রাখেন গোলরক্ষক কিম জা হিয়োন। ৩৯ মিনিটে পেনাল্টি কর্নারে বাইরে ফ্লিক করে ব্যবধান বড় করার সুযোগ হারান জ্যাং জং ইয়োন। ৪৪ মিনিটে জিং জুন উ ফিল্ড গোল করে স্কোর লাইন ৫-৩ করেন।
চতুর্থ কোয়ার্টার (৬-৫)
চতুর্থ ও শেষ কোয়ার্টারে এসে দারুনভাবে খেলা জমে উঠে। দুই গোলে পিছিয়ে থাকা পাকিস্তান মোবাশ্বের আলীর দুই গোলে খেলায় সমতা নিয়ে আসে (৫-৫)। ৪৭ মিনিটে দুটি পেনাল্টি কর্নার পায় পাকিস্তান। প্রথমটি বিফলে গেলেও দ্বিতীয় প্রচেষ্টায় গোল করে স্কোর লাইন ৫-৪ করেন মুবাশার আলী। ৫১ মিনিটে মুবাশার আলীর পেনাল্টি কর্নার গোলে স্কোর লাইন ৫-৫ হয়। খেলা শেষ হওয়ার ৯ মিনিট বাকি। টানটান উত্তেজনা মাঠে। ১০ গোল দেখে ফেলেছেন দর্শকরা। শেষ ৯ মিনিটে কী হয়- এই ভাবনা সবার মাঝে। জিতবে কোন দল কোরিয়া, না পাকিস্তান। এ রকম ভাবনার মাঝেই আবারো এগিয়ে যায় কোরিয়া। ৫৬ মিনিটে পেনাল্টি কর্নার থেকে প্রতিযোগিতায় নিজের অষ্টম গোল করে কোরিয়াকে ম্যাচে আরেকবার এগিয়ে নেন জ্যাং জং ইয়োন। শেষ পর্যন্ত এটি হয়ে থাকে দুই দলের ব্যবধান সূচক গোল।
এমপি/এএস