কোনো দলকেই ছোট করে দেখছেন না রকিবুল
যুব বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ। এই শিরোপা এবারও তারা ধরতে চায়। তার জন্য করোনা পরিস্থিতির মাঝেও যতোটা সম্ভব নিজেদের প্রস্তুত করে তুলেছে। প্রস্তুতির অংশ হিসেবে কিছুদিন আগে ভারতের মাটিতে জিতেছে শিরোপা। প্রতিপক্ষ ছিল ভারতেরই দুই দল। এবারের আসরে অংশ নেওয়ার আগে খেলবে এশিয়া কাপ অনূর্ধ্ব-১৯ আসর। যেটি হবে প্রস্তুতির চূড়ান্ত ধাপ। এরপরই উড়াল দেবে ওয়েস্ট ইন্ডিজে মূল আসর খেলতে।
শিরোপা ধরে রাখার মিশনে এবার দলের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে গত আসরের শিরোপা জয়ী দলের সদস্য রকিবুল হাসানের উপর।
আগামীকাল মঙ্গলবার (২১ ডিসেম্বর) অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ খেলতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের উদ্দেশ্যে দেশ ছাড়বেন তারা। তার আগে সোমবার (২০ ডিসেম্বর) মিরপুরে সাংবাদিকদের সঙ্গে নিজেদের প্রস্তুতি ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন দলপতি। যেখানে রকিবুল আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন ভালো করার।
তিনি বলেন, ‘গতবার যখন আমরা গিয়েছিলাম তখন ভালো প্রস্তুতি নিয়ে গিয়েছি। খেলোয়াড় হিসেবে আমি নতুন ছিলাম, এবার পুরোনো। গতবার যে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি সেটাই দলের ক্রিকেটারদের সাথে ভাগাভাগি করার চেষ্টা করেছি। আর আমাদের দলটাও ভালো আছে, আশা করি আমরা ভালো করবো।’
বর্তমান শিরোপাধারী হওয়াতে সবার নজর ধাকবে বাংলাদেশের দিকে। যারাই শিরোপা জিততে চাইবে তাদের কাছে বাংলাদেশ হবে বড় চ্যালেঞ্জ। তাই বর্তমান চ্যাম্পিয়ন হলেও কোনো দলকেই হালকা করে দেখছেন না রকিবুল। তিনি বলেন, ‘দেখেন বিশ্বকাপের মতো মঞ্চে কোনো দলই ছোট না। আমরা সব দলকেই সম্মান জানাই। আমাদের সেরা ক্রিকেট খেলতে হলে ছোট বড় সব দলকেই হারাতে হবে। আমরা আমাদের সেরা প্রস্তুতি নিয়েই ভালো কিছু করার চেষ্টা করবো।’
কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে প্রস্তুতি ভালোভাবে হয়নি। এটিকে আবার রকিবুল বড় সমস্যা হিসেবে দেখছেন না। কারণ করোনার কারণে সব দেশেরই প্রস্তুতিতে সমস্যা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘কোভিডের কারণে আমরা যেমন এবার প্রস্তুতি নিতে পারিনি, তেমনি বাকি দলগুলো ওরকম। আমরা গত ২/৩ মাসে কয়েকটা সিরিজ খেলেছি এবং আমি মনে করি এটাও খারাপ না। আমাদের ভালো প্রস্তুতি হয়েছে এবং এশিয়া কাপের আগে যে ক্যাম্পটা করলাম সেটাও ভালো হয়েছে।’
জাতীয় দলে যেমন লেগ স্পিনারের ঘাটতি আছে, একই ঘাটতি যুব দলেরও। কিন্তু যা নেই, তা নিয়ে আফসোস করতে নারাজ রকিবুল। বরঞ্চ যা আছে তাই নিয়ে তিনি ঝাঁপিয়ে পড়তে চান যুদ্ধের ময়দানে। এই দল নিয়ে তিনি আত্মবিশ্বাসী। রকিবুল বলেন, ‘ লেগ স্পিনার থাকলেতো অবশ্য ভালো হতো। কিন্তু আমাদের যে দলটা আছে এটা নিয়েই আমরা আত্মবিশ্বাসী। আমাদের যে স্পিনাররা আছে দলে তাদের নিয়েই ফোকাস করছি। কীভাবে ভালো পারফরম্যান্স করা যায় সেদিকেই নজর দিচ্ছি।’
প্রতিপক্ষ নয়, নিজেদের খেলার দিকে ফোকাস দিতে বেশি মনযোগী তিনি। রকিবুল বলেন, ‘আমরা শুধু আমাদের খেলায় ফোকাস করতেছি। আমরা কীভাবে পরিকল্পনা অনুযায়ী সেখানে গিয়ে খেলবো, আমাদের যে পরিকল্পনাগুলো আছে সেগুলো কীভাবে প্রয়োগ করবো আর সেরা প্রস্তুতি নিয়ে যাওয়া যায় সে চেষ্টাই করবো।’
ক্রিকেটে ভারত এখন পরাশক্তি। যে কোনো ফরম্যাটে, যে কোনো আসরে। তাদের যুব দলও তার ব্যতীক্রম নয়। কিন্তু রকিবুল ভারতকে একমাত্র প্রতিদ্বন্দি হিসেবে ভাবছেন না। তিনি বলেন, ‘বিশ্বকাপে শুধু ভারত না, অন্যান্য আরও ভালো ভালো দল আছে। আমরা চেষ্টা করবো আমাদের সেরা খেলাটা খেলে ভালো পারফর্ম করার।’
এদিকে যুব এশিয়া কাপ শুরুর তারিখের কোনো পরিবর্তন না আসলেও বাংলাদেশের খেলার পরিবর্তন এসেছে। তাদের মাঠে নামার তারিখ একদিন পিছিয়ে গেছে। আগে আসর শুরুর দিনই ২৩ ডিসেম্বর মাঠে নামার কথা ছিল নেপালের বিপক্ষে। এখন তা একদিন পিছিয়ে মাঠে নামবে ২৪ ডিসেম্বর। প্রতিপক্ষ পরিবর্তন হয়নি। ২৫ তারিখ কুয়েত ও ২৮ তারিখ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলবে। ৮ দলের আসরে বাংলাদেশ খেলবে ‘বি’ গ্রুপে। ‘এ’ গ্রুপের চার দল হলো ভারত; পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। দুই গ্রুপের সেরা চার দল খেলবে সেমি ফাইনাল। ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত হবে বছরের শেষ দিন ৩১ ডিসেম্বর।
এমপি/এএস