ব্যাটিংয়ে ছিল বিজয়-নাঈমের লড়াই
নতুন চ্যাম্পিয়নকে বরণ করার মাধ্যমে শেষ হয়েছে চলতি মৌসুমের প্রিমিয়ার বিভাগ ক্রিকেট লিগ। নতুন চ্যাম্পিয়ন হয়েছে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব। রানার্সআপ হয়েছে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ।
২২ গজে ব্যাট-বলের লড়াই এবার দ্যুতি ছড়িয়েছেন দেশি ক্রিকেটারাই। অবশ্য এমনটিই হওয়ার কথা। কারণ এক সময়কার জনপ্রিয় এই আসরে এখন আর সে রকম উচ্চমানের বিদেশি ক্রিকেটাররা আসেন না। তারপরও ক্লাবগুলো যে সব বিদেশি ক্রিকেটার নিয়ে আসে, তারাও গোটা মৌসুম খেলার সুযোগ পান না। কেউ বাদ পড়েন ভালো করতে না পরার কারণে, কেউবা ব্যস্ততার কারণে চলে যান। এদিকে ২০০০ সালে টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার পর জাতীয় দলের ক্রিকেটাররাও অনিয়মিত হয়ে পড়েছেন এই আসরে। তারা খেলে থাকেন জাতীয় দলের খেলা না থাকলে। এবার যেমন কয়েকজন সাকিব-মুশফিক-মিরাজের মতো ক্রিকেটারদের দলে নেওয়া হলেও তারা কোনো ম্যাচই খেলার সুযোগ পেতেন না, যদি তাদের নিজস্ব বোঝাপড়ার মাধ্যমে মোহামেডান থেকে শেখ জামাল ও লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ তাদের না নিত।
এবারের প্রিমিয়ার লিগ যেমন নতুন চ্যাম্পিয়ন পেয়েছে, তেমনি দেখেছে বিশ্ব রেকর্ডও। এক মৌসুমে লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে এনামুল হক বিজয় প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে বিশ্বে এক হাজার রান করার গৌরব অর্জন করেছেন। ১৫ ম্যাচে তার রান ১১৩৮। ৩টি সেঞ্চুরির সঙ্গে আছে ৯টি হাফ সেঞ্চুরিও। এনামুলের সেঞ্চুরি ৫টি হতে পারত। ২টি ম্যাচে তিনি নব্বইর ঘরে গিয়ে আউট হয়েছেন ৯৬ ও ৯৪ রানে।
২২ গজে ব্যাটে-বলের লড়াইয়ে এবার ব্যাটসম্যানরাই বেশি আলো ছড়িয়েছেন। সেঞ্চুরি হয়েছে ৩২টি। এনামুল হক বিজয় যেমন সর্বোচ্চ রান সংগ্রহ করেছেন, তেমনি লিগ পর্বে নাঈম ইসলামের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রান সংগ্রহ করেছেন। দুই জনের লড়াই বেশ জমে উঠেছিল। একবার নাঈম শীর্ষে উঠেন, আরেকবার বিজয়। এভাবেই চলে প্রথম লিগে। প্রথম পর্বে নাঈম ইসলামই সর্বোচ্চ রান সংগ্রহ করেছিলেন। কিন্তু সুপার লিগে গিয়ে তিনি আর নিজের ফর্ম ধরে রাখতে পারেননি। ফলে পিছিয়ে পড়েন। আর বিজয় নিজের ফর্ম ধরে রেখে রেকর্ড গড়েন। ১৫ ম্যাচে তার রান ৮৫৯। সেঞ্চুরি ২টি ও হাফ সেঞ্চুরি ৫টি। এই পাঁচ হাফ সেঞ্চুরির প্রথম চারটিই ছিল তার প্রথম চার ম্যাচে। যার তিনটিতেই তিনি নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে আউট হয়েছিলেন।
আবাহনীর অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ব্যাটে-বলে ছিলেন আলোকিত। ১৫ ম্যাচের সব কটিতে খেলে তিনি কোনো সেঞ্চুরি করতে না পারলেও হাফ সেঞ্চুরি করেছেন ৭টি। ৬৫৮ রান করে তিনি আছেন তিনে। এক থেকে তিনে তিন ক্রিকেটারই কিন্তু অভিজ্ঞ। সেখানে চতুর্থ স্থানে আছেন রূপগঞ্জ টাইগার্স ক্রিকেট ক্লাবের জাকির হাসান। ১৫ ম্যাচে ব্যাট করে তিনি ৬৩৬ রান করেছেন। ২টি সেঞ্চুরি ও ৩টি হাফ সেঞ্চুরি আছে তার ঝুলিতে। উইকেট নিয়েছেন ১৬টি
বিদেশি ক্রিকেটার নিয়মিত না খেলার কারণে সেরা দশে কিন্তু দেশিদেরই দাপট বেশি। নিয়মিত খেলার কারণে সেরা পাঁচে আছেন লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের হয়ে খেলতে আসা ভারতের চিরাগ জানি। ১৫ ম্যাচর ১৪ ইনিংসে ব্যাট করে ১ সেঞ্চুরি ও ৩ হাফ সেঞ্চুরিতে তার রান ৫৯৭। তিনি আছেন পঞ্চম স্থানে। বল হাতে তিনি ছিলেন এক কাঠি বেশি সরস। ২৭ উইকেট নিয়ে আছেন তৃতীয় স্থানে।
দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের কারণে জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের লিগের শুরু থেকে খেলার সুযোগ ছিল না। ওয়ানডে সিরিজ শেষে কিছু ক্রিকেটার নিজ নিজ দলের হয়ে খেলার সুযোগ পান। বাকিরা টেস্ট সিরিজ শেষে। এখানে সবচেয় বেশি ভালো করেন তামিম ইকবাল। মাত্র ৪ ম্যাচ খেলে দুই সেঞ্চুরি ও এক হাফ সেঞ্চুরিতে তিনি রান করেন ৩৪৪। মাহমুদউল্লাহ, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদুল হাসান জয়, মুমিনুল হক নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি।
এমপি/আরএ/