দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বাংলাদেশের রানের পাহাড়

হোক মন্থর শুরু। ভীতটা মজবুত হলে সেখানে দাঁড়িয়ে শক্ত পুঁজি দাঁড় করানো যায়। দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে প্রথম ওয়ানডে ম্যাচে বাংলাদেশ তাই করেছে। তামিম (৪১)-লিটনের (৫০) উদ্বোধনী জুিিটতে ২১.৩ ওভারে ৯৫ রানের জুটির উপর দাঁড়িয়ে সাকিবের ৭৭ আর ইয়াসির আলীর ৫০ রানে বাংলাদেশ ৭ উইকেটে করেছে ৩১৪ রান। এই রান দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দলগত সর্বোচ্চ এবং বাংলাদেশের তেরতম সর্বোচ্চ ইনিংস। দক্ষিণ আফ্রিকার ব্পিক্ষে বাংলাদেশের আগের সর্বোচ্চ রান ছিল ২০১৭ সালে কিম্বারলিতে ৭ উইকেটে ২৭৮।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশের শুরুটা ছিল খুবই মন্থর। ব্যাটিং পাওয়ার প্লেতে আসে মাত্র ৩৩ রান। ৫০ রানে আসে ১৫.১ ওভারে। শতরান ২১.৫ ওভারে। এ সময় উইকেট পড়ে শুধুই একটি তামিম ইকবালের। পরবর্তিতে রানের চাকা সচল হয় সাকিব ও ইয়াসির আলী ব্যাটে আর জুটিতে। দুই জনেই খেলেন মারমুখি ইনিংস। পরবির্ততে মাহমুদউল্লাহ, আফিফ, মিরাজম তাসকিনও একশর উপরে স্ট্রাইক রেটে রান সংগ্রহ করলে বাংলাদেশের সংগ্রহ তিনশ ছাড়িয়ে যায়। ৩০ ওভার শেষে রান ছিল ৩ উইকেটে ১৩৫। সে হিসেবে পরের ২০ ওভার রান যোগ হয় ১৭৯। শেষ ১০ ওভার ৯১। শেষ ৫ ওভারে ৪৮। এভাবেই রানের পাগলা ঘোড়া ছুটে।
দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে বাংলাদেশের রেকর্ড মলীন। সেখানে মলীনতা দূর করার একটা সুপ্ত ইচ্ছে মনে লালন করে মাঠে নামে বাংলাদেশ দল। সেঞ্চুরিয়ানের এই মাঠে টস জিতে বোলিং করাটাকেই বেছে নেন ক্যাপ্টেনরা। দক্ষিণ আফ্রিকার কাপ্তান টেম্বা তাই করেন। অবস্থা বুঝে তামিম-লিটনও সাবধানী সূচনা করেন। উদ্বোধনী জুটিতে তাদের ৯৫ রান দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে যে কোনো জুটিতে সেরা। তামিম রান খরা কাটিয়ে ৪১ রান করে ফেরুকাওয়ের নিচু হয়ে আসা বলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়ে বিদায় নিলেও লিটন দাসন হাফ সেঞ্চুরি করেই ফিরেন। আফগানিস্তানের বিপক্ষে শেষ দুই ওয়ানডেতে ১৩৬ ও ৮৬ রান করার পর সেই ফর্ম টেনে নিয়ে যান দক্ষিণ আফ্রিকাতেও। ৬৬ বলে পঞ্চম হাফ সেঞ্চুরি করার পরের বলেই তিনি আউট হয়ে যান কেশব মহারাজের বলে বোল্ড হয়ে। মুশফিক (৯) এসে টিকতে না পারলেও সাকিব ও ইয়াসির আলী মিলে উপহার দেন শতরানের জুটি। দুই জনে মারমুখি ইনিংস খেলেন। দুই জনে জুটিতে ২৩.৩ ওভারে যোগ করেন ১১৪ রান।
শারীরিক ও মানসিক অবসাদের কারণে দক্ষিণ আফ্রিক সফরে যেতেই চাননি সাকিব। অনেক নাটকের পর শেষ পর্যন্ত গেলেন। আর প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমেই করলেন ৭৭ রানের ইনিংস। তাও ৬৪ বলে ৩ ছক্কা ও ৭ চারে। ৫০ বলে ক্যারিয়ারের ৫০তম ৫০ করেন সাকিব। আইপিএলে দল না পাওয়ার পর বিপিএলের শেষ দুই ম্যাচ ও আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজে রানই পাননি। সেই দুঃসময় বেশ ভালোভাবেই কাটিয়ে উঠেছেন বাংলাদেশের ক্রিকেটের এই পোস্টার বয়। ৫০তম ফিফটি করার পর সাকিব আরো বেশি মারমুখি হয়ে উঠেন। আউট হওয়ার আগে ১৪ বলে যোগ করেন আরো ২৭ রান। আউট হন এনগিডির বলে এলবিডব্লির ফাঁদে পড়ে। সাকিব আউট হওয়ার ৪ রান পরই ইয়াসির আলীও ৪৩ বলে ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটি কওেন আউট হয়ে যান পরের বলেই রাবাদার বলে তারই হাতে ক্যাচ দিয়ে। তার ইনিংসে ছিল ২টি ছক্কা ও ৪টি চার। এরপর ইনিংসে তিনশ ছাড়িয়ে নেয়ার কাজটি করেন মাহমুদউল্লাহ ১৭ বলে ১টি করে চার ও ছক্কা মেরে ২৫, আফিফ ১৩ বলে ১টি করে চার ও ছক্কা মেরে ১৭, মিরাজ ১৩ বলে ২ ছক্কায় অপরাজিত ১৯ ও তাসকিন ৫ বলে ১ চারে অপরাজিত ৭ রান করে। দক্ষিণ আফ্রিকার মার্কো জেনসন ৫৭ ও কেশব মহরাজ ৫৬ রানে ২টি করে উইকেট। রাবাদ ৫৭, ফেলুকাওয়ে ৬৩ ও এনগিডি ৭৫ রানে নেন ১টি করে উইকেট।
এমপি/এএস
