‘আমরা ইতিহাস রচনা করেছি’
প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ খেলা। লিগ পদ্ধতিতে। ৮ দলের সবার সঙ্গে হবে খেলার সুযোগ পাবে বাংলাদেশের মেয়েরা। যেখানে কয়েকটি দলের বিপক্ষে হবে প্রথমবারের মতো খেলা।
প্রথমবার অংশহগ্রহণ হলেও সব সময় ভালো করার একটা বার্তা ছিল নিগারদের কাছ থেকে। প্রথম ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষেতো জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়েও হেরে যায়। পরের ম্যাচে স্বাগতিক নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ভালো শুরু করেও পরে হার মেনেছিল। কিন্তু পাকিস্তানের বিপক্ষে তৃতীয় ম্যাচে মাঠে নামার আগেই বাংলাদেশ দলের মাঝে একটা জয়ের জিঘংসা ছিল।
আগে ব্যাট করে ৭ উইকেটে ভান্ডারে ২৩৪ রান জমা করার পর সেখানে আত্মবিশ্বাসের পালে আরও বেশি করে হাওয়া লাগে। কিন্তু পাকিস্তানের দুই ওপেনারের সাবলিল সুচনায় বাংলাদেশের জয়ের স্বপ্ন গুড়ে বালি হওয়ার পথে ছিল। কিন্তু তিন কাঠির খেলায় নিশ্চয়তা বলে কোনো কথা নেই। যে কোনো সময় বাক নিতে পারে ম্যাচের গতিপথের। এবার যেমন হলো পাকিস্তানের ইনিংসে। ২ উইকেটে ১৮৩ থেকে হঠাৎই ছন্দপতন। ১৩ বলে ৫ রানে নেই ৫ উইকেট। ফলে স্কোর দাঁড়ায় ৭ উইকেটে ১৮৮। ব্যস পাকিস্তানের গ্রিপ থেকে ম্যাচ বের হয়ে চলে আসে বাংলাদেশের কব্জায়। ৯ রানে জয় পায় বাংলাদেশ। রচিত হয় ইতিহাস। উচ্ছ্বাসে ভাসতে থাকেন ক্রিকেটাররা। সঙ্গে দেশবাসীও। স্বাধীনতার মাসে মেয়েদের ইতিহাসে প্রথম জয়।
তাইতো অধিনায়ক নিগার সুলতানার কন্ঠে গর্বিত উচ্চারন, ‘আমরা ইতিহাস রচনা করেছি আজ।’
তিনি বলেন, ‘কেমন আনন্দ হচ্ছে তা আমি ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না। বিশ্বকাপে এটা আমাদের প্রথম জয়। আমরা ইতিহাস রচনা করেছি আজ। এই ধারাবাহিকতা টুর্নামেন্টে আমরা পুরো ধরে রাখতে চাই।’
বাংলাদেশকে অবিস্মরণীয় জয় এনে দেন প্রথমবারর মতো বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পাওয়া লেগ স্পিনার ফাহিমা খাতুন। হ্যামিলটনের উইকেট দেখে পেসার লতা মন্ডলকে বাইরে রেখে ফাহিমাকে সুযোগ দেওয়া হয়। এই পরিবর্তন দারুণভাবে কাজে লাগান অধিনায়ক নিগার সুলতানা। পাকিস্তানের গ্রিপে চলে যাওয়া ম্যাচকে তিনি বের করে নিয়ে এসে দলকে জয় উপহার দেন দুই ওভারে ৩ উইকটে নিয়ে।
যেখানে ছিল আবার পরপর ২ বলে ২ উইকেট। সেই ওভারে আবার একটি রান আউটও ছিল। এমন বোলিংয়ে ফাহিমা হন ম্যাচ সেরা। আর এ নিয়ে নিগার সুলতানা বলেন, ‘এই মাঠে আমরা দুইটি ম্যাচ দেখেছি। স্পিনারদের সুবিধা ছিল বেশি। আমার মনে হলো সে যদি নিজের সেরাটা দিতে পারে তাহলে তাকে আমরা কাজে লাগাতে পারি।’ নিগারের এই পরিকল্পনা একেবারে সফল বাস্তবায়ন হয়েছে।
পাকিস্তানের বিপক্ষে এই জয়ে নিগারের দৃষ্টি এখন আসরের সামনের দিকে। তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানের বিপক্ষে আমরা অনেক ম্যাচ খেলেছি। ওদের সর্ম্পকে আমাদের ধারনা ভালো আছে। সর্বশেষ ম্যাচে তাদের আমরা হারিয়েছিলাম বিশ্বকাপ বাছাই ম্যাচে। আজকের জয়ে আমরা দারুণভাবে রোমাঞ্চিত। জয় সবসময়ই আত্মবিশ্বাস জোগায়। আমরা এরকম কিছুই চাচ্ছিলাম। আমাদের দলটি ভালো। মেয়েরা অনেক কঠোর পরিশ্রম করছে। আমরা জানি আমাদের সামর্থ্য আছে। এখন আমরা সামনের দিকে এগুতে চাই।’
এমপি/এমএমএ/