দক্ষিণ আফ্রিকা যাওয়ার আগে যা বলে গেলেন সাকিব
নিজস্ব প্রতিবেদক:
সেই হযরত শাহজালাল আর্ন্তজাতিক বিমানবন্দর। সেই রাত। পরিবর্তন তারিখের আর গন্তব্যস্থলের। ৬ মার্চ সাকিবের গন্তব্যস্থল ছিল দুবাই। উদ্দেশ্য ছিল ব্যক্তিগত। যাওয়ার আগে বোমা ফাটিয়েছিলেন শারীরিক ও মানসিক অবসাদের কারণে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে না যেতে চেয়ে। এরপর ১৩ মার্চ গন্তব্যস্থল দক্ষিণ আফ্রিকা। উদ্দেশ্য জাতীয় দলের হয়ে খেলা। এবার বলে গেলেন, দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে একটি ওয়ানডে ম্যাচ জিততে পারলে তা হবে অনেক বড় অর্জন। বিমানবন্দরে সাকিবের বলা কথা ঢাকাপ্রকাশের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো:
প্রশ্ন: দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে প্রত্যাশা কী?
সাকিব: প্রত্যাশা তো থাকবেই যেন ভালো করতে পারি। সিরিজ জিততে পারলে বেশ ভালো। কিন্তু একটা ম্যাচও যদি জিততে পারি তাহলে আমি মনে করি খুব ভালো একটা অ্যাচিভমেন্ট হবে। আমার ধারণা পুরো দলেরই একই রকমের একটা টার্গেট থাকবে। সেভাবেই আমরা প্রস্তুতি নেব।
প্রশ্ন: এবারের সফর নিয়ে অনেক কিছুই হয়ে গেছে। শেষ পর্যন্ত দলের সঙ্গে যোগ দিতে পারাটা আপনার জন্য কতোটা স্বস্তিদায়ক বলে মনে করছেন?
সাকিব: অনেকটাই স্বস্তি। দলের সঙ্গে থাকাটা সবসময়ই একটা আনন্দদায়ক ব্যাপার। যেটা লাস্ট ১৫ বছর ধরে আছি। সামনে থাকতে পারলে আরও ভালো লাগবে। আশা করি সবাই মিলে একটা ভালো রেজাল্ট আনতে পারব।
প্রশ্ন: এই বিমাবন্দরে এক সপ্তাহ আগে বলেছিলেন আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজে নিজেকে ‘প্যাসেঞ্জার’ মনে হয়েছে। এবার দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে কী ড্রাইভার হতে চান?
সাকিব: হে হে। কে না চায়? অনেক সময় জায়গা পরিবর্তন হলে মাইন্ডসেটের পরিবর্তন আসে। আমি আসলে ওই আশাটাই করছি। আমি শিওর যে সবসময়ই টিম ম্যানেজমেন্ট, কোচিং স্টাফ প্লেয়াররা আমাকে সাপোর্ট করেছে। এবারও তারা সেভাবেই সাপোর্ট করবে, আমি চেষ্টা করব তার প্রতিদান দিতে।
প্রশ্ন: নিউ জিল্যান্ডের মাটিতে টেস্ট জয় এবারের দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে কতোটা অনুপ্রেরণা যোগাবে?
সাকিব: নিউজিল্যান্ডের মতো টাফ কন্ডিশনে আমরা ভালো একটা রেজাল্ট নিয়ে এসেছি হোক সেটা অন্য একটা ফরম্যাট। আমি মনে করি সেটা আমাদের অনুপ্রেরিত করবে ওয়ানডে ও টেস্ট দুই ফরম্যাটেই।
প্রশ্ন: ওখানে সাফল্য পেতে হলে কী করণীয় আছে?
সাকিব: দেখুন ওদের শেষ যে সিরিজটা হয়েছে ভারতের সঙ্গে সেটায় ওরা বেশ ভালোই খেলেছে। তিনটা ম্যাচই জিতেছে তারা। সো সেই কন্ডিশনে বোলিংটা আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জিং হবে। আমাদের বোলিং ডিপার্টমেন্টকে অনেক ভালো করতে হবে। আমাদের অ্যাওয়ে সিরিজগুলাতে আমরা বেশ স্ট্রাগল করি বোলিংয়ে। তাই আমাদের বোলিংটা অনেক ভালো করতে হবে। সেই জায়াগাটাতে উন্নতির অনেক জায়গা আছে বলে আমি মনে করি। পাশাপাশি আমাদের ব্যাটিংটাও ভালো করতে হবে। বড় মাঠে যেটা হয় আমাদের ফিল্ডিংটা ভালো হয় না অনেক সময়। তাই তিনটা ডিপার্টমেন্টেই আমাদের ভালো করতে হবে।
প্রশ্ন: দক্ষিণ আফ্রিকাতো অনেক নতুন দল?
সাকিব: দেখেন নতুন নতুন করতে করতে ওরা এখন একটা ব্যালেন্সড দল হয়ে গেছে। হয়তো কিছুদিন স্ট্রাগল করেছিল কিন্তু রিসেন্ট পারফরম্যান্স, টেস্ট ওয়ানডে টি-টোয়েন্টি সবগুলাই কিন্তু ভালো। ওরা অলরেডি একটা ব্যালেন্সড টিম। তাই ওদের সঙ্গে আমাদের খুবই ভালো ক্রিকেট খেলতে হবে। যদি ওদের সঙ্গে জিততে চাই।
প্রশ্ন: চ্যালেঞ্জিং কী হবে স্পিন না ফাস্ট বোলিং?
সাকিব: স্পিন না, ওয়ানডেতে ফাস্ট বোলারদের জন্যও অনেক চ্যালেঞ্জিং। নতুন বলে যদি তারা উইকেট না নিতে পারে তাহলে সেটি বেশ চ্যালেঞ্জিং হয়ে যায় স্পিনারদের জন্য। তাই একজন আরেকজনকে যদি সাহায্য করতে পারি তাহলে ভালো রেজাল্ট আসবে।
প্রশ্ন: দক্ষিণ আফ্রিকায় গিয়ে অনুশীলন করার সময় কম পাবেন?
সাকিব: আমরা হয়তো ওখানে পাচ-ছয়দিন ট্রেনিং করতে পারব। সেটাতে কিন্তু খুব বেশি ম্যাসিভ ইমপ্রুভমেন্টের জায়গা থাকে না। মানসিকভাবে আমরা যতটা প্রস্তুতি নিতে পারব ততটা আমাদের জন্য ভালো হবে। আমি ভালো করলাম, টিম ভালো করল না, সেটা আসলে ভালো না। আবার টিম পারফর্ম করল আমি করলাম না, সেটাও আসলে ভালো না। সবাই একসঙ্গে পারফর্ম করি, তাহলে সেটা আমাদের দলের জন্যই ভালো হবে।
এমপি/এসআইএইচ