সেনেগালকে হারিয়ে শেষ আটে ইংল্যান্ড
গ্রুপ পর্বে অনেক অঘটন ঘটলেও নকআউট পর্বে এসে সে রকম কোনও অঘটন এখন পর্যন্ত ঘটেনি। প্রত্যাশিত দলগুলোই জায়গা করে নিচ্ছে কোয়ার্টার ফাইনালে। এই ধারায় চতুর্থ দল হিসেবে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছে ১৯৬৬ সালের চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড। আল বায়াত স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত আজকের ম্যাচে তারা আফ্রিকার দেশ সেনেগালকে হারিয়েছে ৩-০ গোলে। প্রথমার্ধে তারা ২-০গোলে এগিয়ে ছিল। হেন্ডারসন, হ্যারিকেন ও বুকাওয়ো সাকা গোল করেন। ৯ ডিসেম্বর কোয়ার্টার ফাইনালে তাদের জন্য অপেক্ষা করছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স।
গ্রুপ পর্ব থেকেই গোছালো ফুটবল খেলে আসা ইংল্যান্ড নতআউট পর্বে এসেও সেই ধারা ধরে রেখেছে। গোল করার আগে সেনেগাল তাদের বেশ চেপেই ধরেছিল। দুইটি নিশ্চিত গোলের সুযোগও তৈরি করে হাতছাড়া করে। গোল হজম করার হাত থেকে রক্ষা পেয়েই ইংল্যান্ড তেড়ে ফুড়ে উঠে। ১০ মিনিটের ব্যবধানে পেয়ে যায় গোল দুইটি।
খেলার প্রথম সুযোগ তৈরি করেছিল ইংল্যান্ড। ১২ মিনিটে হ্যারিকেন বাম প্রান্ত থেকে ফাঁকায় ক্রস করেছিলেন সাকাকে উদ্দেশ্য করে। কিন্তু সাকা সময় মতো পৌছাতে না পারলে সুযোগ হাতছাড়া হয় ইংল্যান্ডের।
২৩ মিনিটে সেনেগাল গোল করার সুবর্ন সুযোগ নষ্ট করে। হ্যারি ম্যাগুয়েরির দুর্বল পাস থেকে বল পেয়ে সেনেগালের একজন খেলোয়াড় বক্সে ক্রস করলে সেই বলে বাউলায়া দিয়ার ভলি শট ইংল্যান্ডের জন স্টয়নেস হাঁটু দিয়ে ব্লক করে রক্ষা করেন। ফিরতি বলে ইসমাইলা সারের শট গোলরক্ষক পিকফোর্ড ডাইভিং দিয়ে রক্ষা করেন। ৩১ মিনিটে আবারও নিশ্চিত গোল বঞ্চিত হয় সেনেগাল। এবার তাদের গোল বঞ্চিত করেন পিকফোর্ড। ইসমাইলা সারের কাছ থেকে বল পেয়ে বক্সের ভেতর থেকে বাউলায়া দিয়ার বাম পায়ের শট পিকফোর্ড এক হাত দিয়ে আটকে দেন।
৩৮ মিনিটে পরিকল্পিত আক্রমণ থেকে গোল করে এগিয়ে যায় ইংল্যান্ড। নিজেদের সীমান থেকে গড়ে উঠে আক্রমণ। বাম প্রান্ত থেকে হ্যারিকেনের পা থেকে বল পেয়ে বেলিংহ্যাম বক্সে হেন্ডারসনকে লক্ষ করে বল পাস দিলে হেন্ডারসন চলন্ত বলে বাম পায়ের শটে সেনেগালের গোলরক্ষক মেন্ডিকে পরাস্ত করেন। ৪১ মিনিটে ডান প্রান্ত দিয়ে সাকার পাস থেকে বক্সের ভেতর বল পেয়ে হ্যারিকেনের নেয়া শট বারের উপর দিয়ে চলে যায়। পরের মিনিটে বামপ্রান্ত দিয়ে বল নিয়ে ডুকে শ বিলম্ব করে ফেলাতে সুযোগ হাতছাড়া করে ইংল্যান্ড। গোলরক্ষকের মাথার উপর দিয়ে বল ক্রস করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বল গোলরক্ষখ মেন্ডির গায়ে লেগে কর্নার হয়ে যায়।
প্রথমার্ধের ইনজুরি টাইমে ইংল্যান্ড পেয়ে যায় দ্বিতীয় গোল। রাশিয়া বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ গোলদাতা হ্যারিকেন নকআউট পর্বে এসে দেখা পান প্রথম গোলের। এই গোলের আক্রমণটিও গড়ে উঠে নিজেদের রক্ষণ থেকে। সেনেগালের সীমানায় বল আসার পর ফোডেন অনেকটা ফাঁকায় থাকা অধিনায়ক হ্যারিকেনের দিকে বল বাড়িয়ে দেন। তিনি বক্সের উপর থেকে ডান পায়ের তীব্র শটে দ্বিতীয় বার দিয়ে নিশানাভেদ করেন।
দ্বিতীয়ার্ধে প্রথম সুযোগ পায় ইংল্যান্ড। ৫৫মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে একজন খেলোয়াড়ের দুই পায়ের ফাঁক দিয়ে ডান পায়ের তীব্র শট গোলরক্ষক মেন্ডি বাঁচিয়ে দেন। কিন্তু পরোক্ষনেই আবার গোল হজম করতে হয়। ৫৭ মিনিটে আবারও নিজেদের সীমান থেকে আক্রমণ গড়ে উঠে। বাম প্রান্ত দিয়ে ফোডেনের ক্রস থেকে বুকাওয়া সাকা গোল করেন। হ্যারিকেনের গোলেও ফোডেনের সহায়তা ছিল। নকআউট পর্বে দুই গোলে সহযোগিতা করা ফোডেন হলেন ২০০২ সালের পর ইংল্যান্ডের প্রথম খেলোয়াড়। ২০০২ সালে শেষ ষেোল ম্যাচে ডেনমার্কের বিপক্ষে ইংল্যান্ডের দুইটি গোলে ডেভিড বেকহ্যাম দুইটি সহায়তা ছিল।
ক্লাব ফুটবলে বক্সের সামনে ফ্রি কিক থেকে অহরহ গোল হলেও বিশ্বকাপ তা সোনার হরিন হয়ে উঠেছে। ৭৩ মিনিটে সেনেগালের ইসমাইলা সারের ডান পায়ের নেয়া ফ্রি কিকও ব্যর্থ হয়। বল সাইড বার ঘেষে বাইরে চলে যায়। ৭৯ মিনিটে বক্সের ভেতর থেকে হ্যারিকেন পা ছুঁয়াতে ব্যর্থ হওয়া ইংল্যান্ড গোলের সংখ্যা বাড়াতে পারেনি।
এমপি/এএস