নকআউট পর্বে আর্জেন্টিনার সামনে আজ অজি চ্যালেঞ্জ
অঘটনের প্রথম রাউন্ড শেষ। এবার নকআউট লড়াই। দ্বিতীয় রাউন্ডের প্রথম দিনেই মাঠে নামছে আর্জেন্টিনা। আজ তাদের সামনে অস্ট্রেলিয়া। দুই দলের শেষ ষোলোর ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত ১টায়। ভেন্যু বিন আলি স্টেডিয়াম।
ঐতিহ্য, শক্তি-সামর্থ্য এবং অতীত ও সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স, যেটাই বিবেচনায় নেওয়া হোক আজকের ম্যাচে ‘নিরঙ্কুশ’ ফেবারিট আর্জেন্টিনা। তবে ফুটবলে একটি দিন যে কারো দখলে যেতে পারে। এর বাস্তব প্রমাণ কাতার বিশ্বকাপে সৌদি আরব, জাপান, মরক্কো এবং সবশেষ ক্যামেরুনের জয়।
অপেক্ষাকৃত ছোট দলগুলো দুর্দান্ত ফুটবল উপহার দিয়েছে গ্রুপপর্বে। সৌদির চমকে তো বিপাকেই পড়েছিল আর্জেন্টিনা। তবে লিওনেল স্কালোনির শঙ্কার মেঘ উড়িয়ে দিয়েছেন টানা দুই জয়ে। এবার মেসির শেষ বিশ্বকাপে আলবিসেলেস্তেদের ধাপে ধাপে শিরোপার সঙ্গে দূরত্ব ঘুচানোর পালা।
তবে বিশ্বকাপের শুরুতে নিজেদের এবং অন্যদের সঙ্গে ঘটে যাওয়া অঘটন আরও সতর্ক করেছে আর্জেন্টিনাকে। কোচ স্কালোনি বলেছেন, ‘প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য মাঠে আমরা নিজেদের সর্বোচ্চটা উজাড় করে দেব। বিশ্বকাপ কতটা কঠিন আমরা তা জানি, এটাই ফুটবল।’
শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে আর্জেন্টাইন কোচ আর বলেন, ‘গতকাল (বৃহস্পতিবার) কি হয়েছে আমরা দেখেছি (গ্রুপপর্বেই বিদায় নিয়েছে জার্মানি-বেলজিয়াম)। যদিও এটা অবাক করার মতো ছিল না। বড় দল পরের ধাপে থাকার যোগ্য, এমনটা যখন বলা হয়, আমি বলব, এটা সবসময় হয় না।’
একই দিনে একই মঞ্চে আর্জেন্টিনাকে হুমকি দিয়ে রেখেছেন অস্ট্রেলিয়া কোচ গ্রাহাম আরনল্ড, ‘আর্জেন্টিনা অস্ট্রেলিয়ার সেরাটা বের করে আনে। তাদের বিপক্ষে সবসময় আমাদের পারফরম্যান্স ছিল খুবই শক্তিশালী এবং ভালো। আমরা অনেক বিশ্বাস ও শক্তি নিয়ে মাঠে নামি।’
ম্যাচ ফ্যাক্ট
২০০৭ সেপ্টেম্বরের পর প্রথমবার দেখা হবে আর্জেন্টিনা এবং অস্ট্রেলিয়ার। ওই প্রীতি ম্যাচে ১-০ গোলে জিতেছিল আর্জেন্টিনা। বিশ্বকাপে প্রথমবার মুখোমুখি হবে দুই দল।
সবমিলে সাত বার মুখোমুখি হয়েছে আর্জেন্টিনা এবং অস্ট্রেলিয়া। আলবিসেলেস্তেরা জিতেছে ৫টিতে, সকারুরা ১টিতে এবং ড্র হয়েছে ১টি। অস্ট্রেলিয়ার একমাত্র জয়টি এসেছে ১৯৮৮ সালে, ৪-১ ব্যবধানে। তাদের বর্তমান কোচ গ্রাহাম আরনল্ড ওই ম্যাচটিতে খেলেছিলেন।
লাতিন অঞ্চলের বিপক্ষে এটা অস্ট্রেলিয়ার পঞ্চম বিশ্বকাপ ম্যাচ। আগের চারটিতে জয়হীন সকারুরা (১ ড্র, ৩ হার)।
২০১৮ বিশ্বকাপে শেষ ষোলোতে বিদায় ঘণ্টা বেজেছিল আর্জেন্টিনার, হেরেছিল ফ্রান্সের কাছে। ১৯৮৬ সালের পর কখনোই টানা দুবার কোয়ার্টার ফাইনালের আগে বিদায় নেয়নি আলবিসেলেস্তেরা।
দ্বিতীয়বার বিশ্বকাপে নকআউট পর্ব নিশ্চিত করেছে অস্ট্রেলিয়া। প্রথমবার খেলেছিল ২০০৬ সালে। ওই বছর শেষ ষোলোতে ইতালির কাছে ১-০ গোলে হেরেছিল তারা। ফ্রান্সেসকো টট্টির শেষ মুহূর্তের পেনাল্টি গোল বিদায় করেছিল সকারুদের।
কাতার বিশ্বকাপে সকারুরা তাদের তিন ম্যাচেই প্রথমে গোলের দেখা পেয়েছে।
২০২২ বিশ্বকাপে গ্রুপপর্বের তিন ম্যাচে ১১টি শট মোকাবিলা করেছে আর্জেন্টিনা, যা চলতি টুর্নামেন্টে এখন পর্যন্ত যেকোনো দলের তুলনায় সর্বনিন্ম।
আর্জেন্টিনার হয়ে বিশ্বকাপের নকআউটে এখন অবধি গোলের দেখা পাননি লিওনেল মেসি। তার ৮ গোলের প্রতিটি এসেছে গ্রুপপর্বে। নকআউটে ২৩ প্রচেষ্টার একটিতেও জালের দেখা পাননি তিনি। তবে ২০১০, ২০১৪ এবং ২০১৮ সংস্করণে শেষ ষোলোর প্রতি ম্যাচে অ্যাসিস্ট করেছেন মেসি।
বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার তিন গোলের দুটিতে সরাসরি সম্পৃক্ত ছিলেন ম্যাথু লেকি (১ গোল, ১ অ্যাসিস্ট)। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে একটি বিশ্বকাপে গোল এবং অ্যাসিস্ট করা তিন ফুটবলারের একজন তিনি। অপর দুইজন হলেন— টিম কাহিল (২ গোল, ১ অ্যাসিস্ট) এবং জন অ্যালোইসি (১ গোল, ২ অ্যাসিস্ট)।
পোল্যান্ডের বিপক্ষে আর্জেন্টিনার ২-০ জয়ের ম্যাচে ৫টি সুযোগ তৈরি করেন মেসি, বিশ্বকাপে সব মিলে ৬৩তম। ১৯৬৬ সাল থেকে, ডিয়েগো ম্যারাডোনা একমাত্র খেলোয়াড় যিনি বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি সুযোগ (৬৭ বার) তৈরি করেছেন।
আরএ/