ইনজুরিতে শঙ্কায় নেইমারের বিশ্বকাপ
ইনজুরি আর নেইমার যেন মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। এমনিতেই ইনজুরির কারণে ক্লাব ফুটবলে তাকে প্রায় সময় মাঠের বাইরে থাকতে হয়। বিশ্বকাপ ফুটবলের আসরে ইনজুরি যেন মাথা চাড়া দিয়ে উঠে। গত দুই আসরের মতো এবারও ইনজুরি এসে বাসা বেঁধেছে নেইমারের সঙ্গে। সার্বিয়ার বিপক্ষে নান্দনিক খেলা উপহার দিয়ে ২-০ গোলে জয়ের ম্যাচে পুরো সময় মাঠে থাকতে পারেননি ব্রাজিলিয়ানদের প্রাণভোমরা নেইমার। ডান পায়ের গোড়ালিতে ইনজুরির কারণে ৭৯ মিনিটের সময় তিনি এক প্রকার মাঠ ছাড়তে বাধ্য হন। মাঠ ছাড়ার আগে ১১ মিনিট খেলেছেন ইনজুরি নিয়ে।
২০১৪ সালে নিজ দেশ বিশ্বকাপে নেইমার যাদুতে দারণ শুরু করা ব্রাজিল সেমি ফাইনালে গিয়ে থমকে যায়। কারণ ইনজুরির কারণে নেইমার ছিলেন মাঠের বাইরে। এই সুযোগে সেমি ফাইনালের মতো ম্যাচে জামার্নির কাছে হারতে হয়েছিল ৭-১ গোলের শোচনীয় ব্যবধানে। এরপর তৃতীয় স্থান নির্ধারনী ম্যাচেও নেদারল্যান্ডসের কাছে হার মেনেছিল ব্রাজিল ৩-০ গোলে। এরপর ২০১৮ সালে রাশিয়া বিশ্বকাপেও তিনি পুরোপুরি ফিট ছিলেন না। কোয়ার্টার ফাইনালে বেলজিয়ামের কাছে ২-১ গোলে বেজেছিল বিদায় ঘণ্টা।
কাতার বিশ্বকাপ শুরু হওয়ার আগে নেইমার ছিলেন পুরোপুরি ফিট। তার সেই ফিট হওয়ার ঝলক দেখা গেছে সার্বিয়ার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে। গোল পাননি। কিন্তু কয়েকটি সুযোগ নষ্ট করেছেন। আর সার্বিয়ার রক্ষণভাগকে রেখেছেন ব্যতীব্যস্ত করে। রিচার্লিসনের দ্বিতীয় গোলে ভিনিসিয়াস জুনিয়রের শট গোলরক্ষক ফিরিয়ে দেওয়ার পর গোলের বিষয়টি উঠে এলেও আসল নায়ক ছিলেন নেইমারই। কারণ বল নিয়ে বক্সে ঢুকে তিনি শট নেওয়ার আগেই অপেক্ষাকৃত সুবিধাজনক অবস্থানে থাকা ভিনিসিয়াস জুনিয়র শট নিয়েছিলেন।
ডিব্রলিং মাস্টার নেইমার ম্যাচে ৯টি ফাউলের শিকার হন। যার একটি তার জন্য কাল হয়ে উঠে। নিকোলা মিলানকোভিচের ফাউলটিই তার জন্য সর্বনাশ ডেকে আনে। ইনুজরিতে পড়ার পরও তিনি ১১ মিনিট খেলে গেছেন। আর এই খেলে যাওয়াটাই তার জন্য কাল হয়ে উঠে। পরে ৭৯ মিনিটের সময় তাকে মাঠ ছাড়তে হয়। মাঠ ছাড়ার সময় তার চোখে ছিল পানি। এমনকি ম্যাচ শেষে ব্রাজিলিয়ান শিবির যখন আনন্দে মাতোয়ারা, নেইমারের চোখে তখন জল।
ব্রাজিল দলের ডাক্তার জানিয়েছেন নেইমার ইনজুরি নিয়ে এখনই কিছু বলা যাবে না। ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা সময় লাগবে তার ইনজুরি সেরে উঠতে। তবে ইনজুরি মুক্ত হলেও ২৮ নভেম্বর সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে মাঠে নামা সম্ভব হবে কি না তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। টিভি ফুটেজ ও স্টিল ছবিতে দেখা গেছে নেইমারের পায়ের গোড়ালি ফুলে গেছে। অবশ্য কোচ তিতে নেইমারে খেলা নিয়ে আশাবাদী। তিনি বলেন, আশা নেইমার খুব দ্রুত সেরে উঠবে বিশ্বকাপের ম্যাচও খেলবে। তার ইনজুরি যতটা খারাপ মনে হচ্ছে, ততটা খারাপ নয়।
নেইমার এবারের বিশ্বকাপ শুরু করেছেন ফুটবল যাদুকর পেলেকে পেছনে ফেলার লক্ষ্য নিয়ে। পেলের করা ৭৭ গোলের চেয়ে তিনি ২ গোল পেছনে আছেন। ২ গোল হলে পেলের পাশে দাঁড়াবেন, ৩ গোল করলে নিজেই রেকর্ডের মালিক বনে যাবেন।
এমপি/এসএন