মাঠেই কথা বলবে আলোনসোর উরুগুয়ে
দুইবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন উরুগুয়ে। দুই দশকে দুবার বিশ্বকাপ শিরোপা জয় করেছে তারা। প্রথমবার ১৯৩০ সালে। দ্বিতীয়বার ১৯৫০ সংস্করণে। এরপর থেকে চ্যাম্পিয়ন হওয়া তো দূরের কথা, কখনো ফাইনালেই উঠতে পারেনি দলটি।
আর কত দীর্ঘ হবে তাদের অপেক্ষা? উরুগুয়ের ফুটবলে এটাই এখন সবচেয়ে বড় ও কঠিন প্রশ্ন। যেমনটা জানতে চাওয়া হলো ডিয়েগো আলোনসোর কাছে। উরুগুয়ে কোচ বললেন যে মাঠেই কথা বলবেন তারা।
গত বছর ডিসেম্বরে উরুগুয়ের দায়িত্ব নেন আলোনসো। দীর্ঘ ১৫ বছর জাতীয় দলকে সার্ভিস দেওয়া অস্কার তাবারেজের স্থলাভিষিক্ত হন তিনি। তার বিশ্বকাপ দলে বয়সের পার্থক্য চোখে পড়ার মতো। উরুগুয়ে শিবিরে ৬ খেলোয়াড়ের বয়স ৩৫ বা তারও বেশি। ১৩ খেলোয়াড় প্রথম বিশ্বকাপ খেলার স্বাদ নেবে। যাদের মধ্যে আছেন লিভারপুল স্ট্রাইকার ডারউইন নুনেজ। তবে আক্রমণভাগে তাদের সেরা অস্ত্র দুই অভিজ্ঞ ফরোয়ার্ড লুইস সুয়ারেজ এবং এডিনসন কাভানি।
আগামীকাল শুরু হবে সুয়ারেজ-কাভানিদের বিশ^কাপ অভিযান। আল রায়ানে এডুকেশন সিটি স্টেডিয়ামে তাদের প্রতিপক্ষ দক্ষিণ কোরিয়া। খেলা শুরু হবে বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭টায়। ‘এইচ’ গ্রুপে এটাই দুই দলের উদ্বোধনী ম্যাচ। তার আগে, বুধবার (২৩ নভেম্বর) সংবাদ সম্মেলনে আলোনসো বলেন, ‘আগামীকাল আমরা মাঠে কথা বলব। একটি ভালো টুর্নামেন্ট হলো প্রথম ম্যাচ জেতা। পরে যা আসছে তা নিয়ে আমি ভাবছি না।’
উরুগুয়ে কোচ যোগ করেন, ‘আমরা সত্যিই উত্তেজিত। আমরা জানি আমরা কী করতে পারি, কিন্তু এখন গুরুত্বপূর্ণ হলো আগামীকালের ম্যাচ। উরুগুয়ের খেলোয়াড়রা বিশে^র সেরা, যেকোনো পরিস্থিতিতে আমাদের রক্ষা করে। উরুগুয়ের খেলোয়াড়রা দলকে সম্মান করে, তাই তারা সেরা।’ ৩৬ বছর বয়সে বিশ্ব মঞ্চে জাতীয় দলকে নেতৃত্ব দিতে প্রস্তুত ডিয়েগো গুডিন। তিনি বলেন, ‘আমি মাঠে সবকিছু দেব, শুধু ম্যাচের সময় নয়, অনুশীলনেও। আমি প্রস্তুত।’
অপরদিকে, চোটাক্রান্ত সন হিয়াং-মিনকে নিয়ে উরুগুয়ের মুখোমুখি হওয়ার আশায় পাওলো বেন্তো, ‘সন খেলতে পারে। হ্যাঁ, সে খেলতে পারবে। সে মাস্ক পড়ছে সেটা তার জন্য কোনো অসুবিধা নয়। আমরা সেরা কৌশল ব্যবহার করব যাতে খেলা চলাকালীন সে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। আমরা গ্রুপপর্বের তিন ম্যাচে সম্ভাব্য সেরা উপায়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চাই।’
ম্যাচ ফ্যাক্ট
* বিশ্বকাপে এটা উরুগুয়ে এবং দক্ষিণ কোরিয়ার তৃতীয় সাক্ষাৎ। আগের দুই ম্যাচে জিতেছে উরুগুয়ে: ১৯৯০ গ্রুপপর্বে ১-০ এবং ২০১০ সংস্করণের শেষ ষোলোতে ২-১ গোলে।
* এটা উরুগুয়ের ১৪তম বিশ্বকাপ এবং টানা চতুর্থ। দ্বিতীয়বার তারা টানা চারবার বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করবে। এর আগে খেলেছিল ১৯৬২ থেকে ১৯৭৪ পর্যন্ত।
* উরুগুয়ে তাদের শেষ আট বিশ^কাপ ম্যাচের ৬টিতে জিতেছে। রাশিয়া ২০১৮ সংস্করণে জিতেছিল চার ম্যাচ (মিসর, সৌদি আরব, রাশিয়া ও পর্তুগালের বিপক্ষে)। বিশ্বকাপের এক আসরে যৌথভাবে এটা তাদের সর্বোচ্চ জয়। ১৯৩০ সালে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পথেও চার ম্যাচ জিতেছিল উরুগুয়ে (পেরু, রোমানিয়া, যুগোস্লোভিয়া এবং আর্জেন্টিনার বিপক্ষে)।
* উরুগুয়ে তাদের শেষ ৭ বিশ্বকাপের মাত্র একটিতে উদ্বোধনী ম্যাচ জিতেছে (৩ ড্র, ৩ হার)। একমাত্র জয়টি এসেছিল গত আসরে, মিসরের বিপক্ষে। তবে ওই সাত সংস্করণের প্রত্যেকটিতে গ্রুপপর্বের বাধা পার করতে পেরেছিল উরুগুয়ে।
* এটা দক্ষিণ কোরিয়ার ১১তম বিশ্বকাপ, যা এশিয়ার যেকোনো দলের চেয়ে বেশি। এবার টানা ১০ম বিশ্বকাপ খেলবে তারা।
* জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া যৌথ আয়োজনে হয়েছিল ২০০২ বিশ্বকাপ। ওই সংস্করণে ৬ ম্যাচের ৩টি জিতেছিল কোরিয়া। অপর ৯ অংশগ্রহণে তারা ২৭ ম্যাচের মাত্র ৩টিতে জিতেছে (৭ ড্র, ১৭ হার)।
এমএমএ/