রোনালদো ইস্যু নয়, পর্তুগালের ভাবনায় বিশ্বজয়
কাতার পৌঁছানোর আগ মুহূর্তে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে বড়সড় ধাক্কা দিয়েছেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। বিশ্বকাপ শুরুর আগে রোনালদোকে ধাক্কা দিয়েছে ম্যানইউ। তবে দুই পক্ষের ধাক্কাধাক্কিতে অস্বস্তিতে নেই পর্তুগাল- এমনটা জানালেন মিডফিল্ডার ব্রুনো ফার্নান্দেস। কোচ ফার্নান্দো সান্তোসের স্পষ্ট বার্তা, রোনালদো ইস্যু নয়, পর্তুগালের ভাবনায় বিশ্বজয়।
আগামীকাল দোহায় ৯৭৪ স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হবে পর্তুগাল ও ঘানা। ‘এইচ’ গ্রুপের ম্যাচ দিয়ে বিশ্বকাপ শুরু করবে দুই দল, যা শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত ১০টায়। তার আগে বুধবার (২৩ নভেম্বর) আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে পর্তুগালের প্রতিনিধি ছিলেন সান্তোস ও ফার্নান্দেস। ঘানার মুখপাত্র হিসেবে হাজির হন কোচ অটো অ্যাডো ও মিডফিল্ডার আন্দ্রে আয়ু।
প্রত্যেকের সামনেই চলে আসে রোনালদো ইস্যু। সান্তোস সোজাসাপ্টা জানিয়ে দিয়েছেন, ক্লাব বিষয়ক আলোচনা নেই জাতীয় দলে, ‘এটা এমন কিছু যা নিয়ে আলোচনাও করা হয়নি। এই কথোপকথন কোনো মুহূর্তে আসেনি, এমনকি তার কাছ থেকেও নয়। এটাই স্টার্টিং পয়েন্ট (বিশ্বকাপ শুরুর) এবং প্রথম ম্যাচ সবসময়ই বেশি গুরুত্বপূর্ণ।’
কিছুদিন আগে রোনালদো কড়া সমালোচনা করেছিলেন ক্লাব কোচ এরিক টেন হ্যাগ ও কর্মকর্তাদের। তারই পরিপ্রেক্ষিতে পর্তুগিজ যুবরাজের সঙ্গে চুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত জানিয়েছে ম্যানইউ কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে মোটেও চিন্তিত নন প্রিমিয়ার লিগ ক্লাবটির পর্তুগিজ মিডফিল্ডার ফার্নান্দেস, ‘আমি অস্বস্তিতে নেই। আমাকে কোনো পক্ষ বেছে নিতে হচ্ছে না। তার সঙ্গে খেলাটা একটা বিশেষত্বের বিষয়। আমরা জানি কোনো কিছুই চিরস্থায়ী হয় না।’
উল্টো রোনালদোকে সঙ্গে নিয়ে বিশ্বকাপ মাতানোর অপেক্ষায় ফার্নান্দেস, ‘আমরা সবাই জাতীয় দল এবং বিশ্বকাপে শতভাগ মনোযোগ দিচ্ছি। আমাদের করনীয় সম্পর্কে আমরা সবাই সচেতন। আমরা এমন একটি চ্যাম্পিয়নশিপে আছি যা প্রতিটি খেলোয়াড়ের স্বপ্ন এবং এটি এমন একটি টুর্নামেন্ট যেখানে প্রতিটি খেলোয়াড় খেলতে চায়।’
স্বপ্নের এই টুর্নামেন্টটাই জয়ের ছক কষছেন সান্তোস। একইসঙ্গে থাকছেন সতর্কও। পর্তুগাল কোচ বলেছেন, ‘ঘানা একটি সম্পূর্ণ দল। ৩ দিন আগেও আরব ছিল নিন্দিত এবং আজ গ্রুপপর্বে তারা শীর্ষস্থানে। এটা কঠিন হবে, কিন্তু আমরা আত্মবিশ্বাসী। আমরা বিশ্বজয়ের উচ্চাকাঙ্ক্ষা রয়েছে। আমি এতটুকু বিশ্বাস করি যে আমাদের এটির জন্য লড়াই করার সক্ষমতা আছে।’
রোনালদো ইস্যুতে পর্তুগাল দলের ভারসাম্য নষ্ট হবে- এমনটা মানতে নারাজ ঘানা কোচ অটো অ্যাডোও। তিনি বলেছেন, ‘সত্য বলতে এসব আমি তোয়াক্কা করি না। এটি আমাদের সমস্যা নয়। আমি মনেও করি না যে এটা একটি বড় সমস্যা। সবাই জিততে চায়। যাই ঘটুক না কেন, এটি একটি বড় মঞ্চ, বিশ্বকাপে একটি বড় ম্যাচ। তাই আমি মনে করি না যে এটি কারো মনোযোগে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।’
ম্যাচ ফ্যাক্ট
* বিশ্বকাপে এটা দ্বিতীয় দেখা পর্তুগাল-ঘানার। ২০১৪ সংস্করণের গ্রুপ পর্বে প্রথম মুখোমুখি লড়াইয়ে পর্তুগাল জিতেছে ২-১ ব্যবধান। উইনিং গোল করেছিলেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো।
* পর্তুগাল তাদের সবশেষ ১৪ বিশ্বকাপ ম্যাচে মাত্র ৩টিতে জয় পেয়েছে (৬ ড্র, ৫ হার)। প্রতিটি জয় এসেছে টুর্নামেন্টের গ্রুপ পর্বে। সবশেষ ২০০৬ জুনে নকআউট পর্বে জিততে পেরেছে দলটি। সেবার হল্যান্ডকে ১-০ গোলে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছিল পর্তুগাল।
* বিশ্বকাপে নিজেদের সবশেষ তিন উদ্বোধনী ম্যাচে জয় পায়নি পর্তুগাল (২ ড্র, ১ হার)।
* এটি ঘানার চতুর্থ বিশ্বকাপ, প্রত্যেকটি একবিংশ শতাব্দীতে। সবশেষ খেলেছে ২০১৪ সালে।
* ঘানা ২০১০ বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনাল খেলেছে, ১৯৯০ সালে ক্যামেরুন এবং ২০০২ সালে সেনেগালের পাশাপাশি টুর্নামেন্টে আফ্রিকান দলের জন্য যৌথ-সেরা ফিনিশিং।
* বিশ্বকাপে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো ৭ গোলের প্রত্যেকটি করেছেন গ্রুপ পর্বে। নকআউট পর্বে জালের দেখা না পাওয়া ৭ খেলোয়াড়দের মধ্যে এটাই সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড।
* চার বিশ্বকাপে গোল করা পাঁচ খেলোয়াড়ের একজন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। অপর চারজন হলেন- পেলে, ইউবে সিলার, মিরোস্লাভ ক্লোসা ও লিওনেল মেসি। পাঁচ সংস্করণে কোনো খেলোয়াড়ের গোল করার রেকর্ড নেই।
এসএন