লেভানদোভস্কিকেই যত ভয় মেক্সিকোর
বিশ্বকাপে রবার্ট লেভানদোভস্কির কোনো অর্জন নেই। মাত্র একবার টুর্নামেন্ট খেলার সৌভাগ্য হয়েছে পোলিশ স্ট্রাইকারের। ২০১৮ সালে রাশিয়ায় সেই অভিযানে ২৭০ মিনিট খেলেও একটিবার জালের দেখা পাননি তিনি। আগামীকাল (২২ নভেম্বর) যখন লেভাকে নিয়ে আরেকটি বিশ্বকাপ শুরু করতে যাচ্ছে পোল্যান্ড, তখন লেভাকেই যত ভয় মেক্সিকোর।
দোহায় ৯৭৪ স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হবে পোল্যান্ড ও মেক্সিকো। এই ম্যাচ দিয়ে বিশ্বকাপ শুরু করবে ‘সি’ গ্রুপের দুই দল। তাদের লড়াই শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত ১০টায়।
এর আগে সোমবার (২১ নভেম্বর) সংবাদ সম্মেলনে মেক্সিকো গোলরক্ষক গুলের্মো ওচোয়া বলেন, ‘পোল্যান্ডের বিপক্ষে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ। তবে আমাদের একটি দল আছে যা নিয়ে আমরা পরের রাউন্ডে যাওয়ার জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারি। তিনটি পয়েন্ট দিয়ে শুরু করা গুরুত্বপূর্ণ।’
লেভার প্রসঙ্গ উঠতেই ওচোয়ার ভাষ্য ছিল এমন, ‘আমরা জানি লেভানদোভস্কি কেমন। তার প্রতিভা এবং তিনি কোথায় খেলেছে সে সম্পর্কে জানি। তিনি এমন একজন খেলোয়াড় যিনি আপনার জন্য ম্যাচ পরিবর্তন করার ক্ষমতা রাখে। তাকে সামলানোই আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ।’
এটা ঠিক নিজের প্রথম বিশ্বকাপে সেরা ছন্দে ছিলেন না লেভা, তবে ২০২২ বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে পোল্যান্ডের সেরা স্কোরার ছিলেন তিনি। সর্বমোট ১৩ গোলে সরাসরি সম্পৃক্ত ছিলেন তিনি (৯ গোল, ৪ অ্যাসিস্ট)। এটা অন্য যেকোনো পোলিশ খেলোয়াড়ের চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি।
পোল্যান্ড অবশ্য এক লেভার উপর সব চাপ দিচ্ছে না, উল্টো গোটা দলের উপর আস্থা রাখছেন চেসলা মিচনিউইচ। সংবাদ সম্মেলনে পোল্যান্ড কোচ বলেন, ‘এটি ওচোয়ার পঞ্চম বিশ্বকাপ। আমাদের কিছু খেলোয়াড়ের এই অভিজ্ঞতা নেই। আমাদের তাদের সম্মান করতে হবে।’
মিচনিউইচ যোগ করেন, ‘ফুটবলে অনেক সময় এমন হয় যে ফেবারিটরা শেষ পর্যন্ত জিততে পারে না। আমি মেক্সিকান দলের বিপক্ষে বা আর্জেন্টিনা ও সৌদি আরবের বিপক্ষে বড় ভারসাম্যহীনতা দেখছি না। আমরা সব দলকে সম্মান করি এবং নিজেদের উপর দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস রাখি।’
পোল্যান্ড কোচ স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন যে নকআউট খেলেই ফিরতে চান তারা, ‘বাড়ি ফেরা ১৬ দলের একদল হতে চাই না আমরা। আমাদের খেলোয়াড়দের দিকে তাকালে দেখা যায়, অনেক অভিজ্ঞ ও তরুণ আছে। এই সমন্বয়টি সন্তুষ্ট হওয়ার মতোই। সম্ভাব্য সেরা অবস্থানে পৌঁছাতে চাই আমরা।’
ম্যাচ ফ্যাক্ট
* পূর্বে বিশ্বকাপে একবার দেখা হয়েছে মেক্সিকো ও পোল্যান্ডের। ১৯৭৮ সংস্করণে গ্রুপপর্বের ম্যাচটিতে পোল্যান্ড জিতেছিল ৩-১ ব্যবধানে।
* এটা মেক্সিকোর ১৭তম বিশ্বকাপ এবং টানা অষ্টম। ফাইনালে না উঠা দলগুলোর মধ্যে মেক্সিকোই সর্বোচ্চ ৫৭টি বিশ্বকাপ ম্যাচ খেলেছে।
* নবমবারের মতো বিশ্বকাপ খেলবে পোল্যান্ড। ১৯৮৬ সালের পর কখনোই টুর্নামেন্টে গ্রুপপর্বের বাধা টপকাতে পারেনি তারা। ফুটবলের মেগা ইভেন্টে সবশেষ ১১ ম্যাচের ৮টিতে হেরেছে পোলিশরা।
* পোল্যান্ড তাদের সবশেষ ৮ বিশ্বকাপে মাত্র একবার উদ্বোধনী ম্যাচে জয়ের দেখা পেয়েছে (৩ ড্র, ৪ হার)। ১৯৭৪ সালে গ্রজেগর্জের লাতোর জোড়া গোলে আর্জেন্টিনাকে হারিয়েছিল ৩-২ ব্যবধানে।
* পোল্যান্ডের সবশেষ পাঁচ বিশ্বকাপ গোল এসেছে সেট পিস থেকে (৩টি কর্নার এবং ২টি পরোক্ষ ফ্রি-কিক থেকে)। টুর্নামেন্টে ওপেন প্লে থেকে তাদের শেষ গোলটি এসেছে দুই দশক আগে। যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে ওই গোলটি করেছিলেন পাওয়েল ক্রিসজালোভিজ।
* মেক্সিকোর গোলরক্ষক গুইলারমো ওচোয়া একমাত্র খেলোয়াড় যিনি ২০২২ বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে ১৪ ম্যাচের সবকটিতে খেলেছেন। তিনি আগের দুই সংস্করণে (২০১৪ এবং ২০১৮ সালে) দেশের হয়ে ৮টি ম্যাচ খেলেছেন এবং দ্বিতীয় মেক্সিকান গোলরক্ষক হিসেবে তৃতীয় বিশ্বকাপ খেলার অপেক্ষায় আছেন। প্রথমজন আন্তেনিও কারবাহাল।
* ২০২২ বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে ১৩ গোলে অবদান ছিল রবার্ট লেভানদোভস্কির (৯ গোল, ৪ অ্যাসিস্ট)। এটা অন্য যেকোনো পোলিশ খেলোয়াড়ের চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি। ২০১৮ সালে অংশ নেওয়া একমাত্র বিশ্বকাপে ২৭০ মিনিট খেলে একবারও জালের দেখা পাননি লেভানদোভস্কি।
এসজি