বিশ্বকাপে পানি নিয়ে এ কেমন নিষ্ঠুরতা!
সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ: আপনি যদি কাতারে ফুটবল বিশ্বকাপ দেখতে চান, তবে আপনার ওয়ালেটে সুপেয় পানির জন্য বাড়তি এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে অর্থ রাখুন।
কাতারে সফট ড্রিংকসের চেয়ে পানির দাম বেশি। লিটারপ্রতি তেলের দামও পানির নিচে। পুরোনো এই গল্প নতুন করে বলার কিছু নেই। কিন্তু দরজায় যখন কড়া নাড়ছে বিশ্বকাপ, তখন মধ্যপ্রাচ্যের দেশটিতে পানি নিয়ে অতিরিক্ত সতর্ক থাকার বিকল্প নেই ফুটবলপ্রেমীদের।
বৃহস্পতিবার (১৭ নভেম্বর) কাতারে তাপমাত্রা ছুঁয়েছিল ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যদিও সেখানে আর্দ্রতা কম, তবে ঘন ঘন গলা শুকিয়ে আসাটা স্বাভাবিক ঘটনা। তাই এই মুহূর্তে সেখানে পানির বোতলজাত ব্যবসাটা বেশ রমরমা, যা বাড়তি চাপ ফেলবে ভক্তদের ওয়ালেটে। আসুন কাতারের পানি নিয়ে বিজনেস পলিসিটা জেনে নেওয়া যাক।
রবিবার (২০ নভেম্বর) শুরু হবে বিশ্বকাপ। শনিবার (১৯ নভেম্বর) শুরু হবে ফিফার অফিসিয়াল ফ্যান ফেস্টিভ্যাল, যেখানে থাকবেন কলম্বিয়ান পপস্টার মালুমা। ম্যাচ হোক কিংবা ফেস্টিভ্যাল, দুই জায়গাতেই টুর্নামেন্টের অফিসিয়াল ওয়াটার ‘আরওয়া’ কিনতে হবে ভক্তদের। ৫০০ মিলিলিটার বোতলের পানির মূল্য ২.৩০ পাউন্ড, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২৮২ টাকা!
আশ্চর্যের বিষয় হলো, বোতলগুলো ওয়ান-টাইম ইউজের জন্য। কারণ সেগুলো রিফিলের কোনো ব্যবস্থা রাখা হয়নি। এমনকি ফিফার অফিসিয়াল ফ্যান পার্ক, ফ্যান জোন ও আটটি বিশ্বকাপ স্টেডিয়ামের কোথাও জলের ফোয়ারা পর্যন্ত সরবরাহ করা হয়নি। কাতারে তীব্র গরমের মধ্যে প্রবাহিত পানির অনুপস্থিতি ভক্তদের হিটস্ট্রোক ও মারাত্মক ডিহাইড্রেশনের ঝুঁকিতে ফেলেছে।
রাশিয়া বিশ্বকাপে খরচ হয়েছিল ১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। কাতারে খরচ ছাড়িয়ে গেছে ২০০ বিলিয়ন! সেখানে ৩২টি প্রতিযোগী দেশের প্রতিটির উপর ভিত্তি করে ক্যাফে, বার ও শিল্প স্থাপনা সমন্বিত সাত কিলোমিটারের দীর্ঘ পর্যটন আকর্ষণে রূপান্তরিত করা হয়েছে। ফিফা ফ্যান ফেস্টিভ্যালের বিপরীতে ফ্যান পার্কে প্রবেশ করা যাবে বিনামূল্যে এবং খোলা থাকবে ২৪ ঘণ্টা। কিন্তু সেখানেও নেই চলমান জলের সরবরাহ!
বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রণ সংস্থা কেবল ‘আরওয়া’র সঙ্গে চুক্তি করেনি, কোম্পানিটির ব্যবস্থার পথও সু-প্রশ্বস্ত করে দিয়েছে ফিফা। দুইপক্ষের ব্যাবসায়িক চুক্তির ফাঁদে ফুটবলপ্রেমীরা। যারা কাতারে এক বোতল সুপেয় জল কিনতে গিয়ে মনের অগোচরেই বলে উঠতে পারে- জল নিয়ে এ কেমন নিষ্ঠুরতা?
এসএন