যাদের এটিই হতে পারে শেষ বিশ্বকাপ
আগামী ২০ নভেম্বর থেকে কাতারে শুরু হবে বিশ্বকাপ ফুটবলের মহাযজ্ঞ। এই বিশ্বকাপ হতে পারে অনেক ফুটবলারের শেষ আসর। পরের বিশ্বকাপে হয়ে যেতে পারেন দর্শক। তারকা ফুটবলারদের এই তালিকায় কারা থাকছেন, এক নজরে দেখা যাক।
ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো (পর্তুগাল): রোনালদোর বয়স এখন ৩৭। ২০১৮ বিশ্বকাপের পরই জানিয়েছিলেন কাতারে শেষ বিশ্বকাপ খেলবেন। শেষ বিশ্বকাপে নিজেকে উজাড় করে দিতে একটুও কার্পণ্য করবেন না রোনালদো। তা অনুমেয়। কতটা পারবেন তা সময় বলে দেবে। আগামী বিশ্বকাপে রোনালদোর বয়স দাঁড়াবে ৪১ বছরে। পর্তুগালের হয়ে ১১৭ গোল করে আন্তর্জাতিক ফুটবলে সর্বকালের সর্বোচ্চ স্কোরার এখন রোনালদো। পর্তুগালের হয়ে রেকর্ড ১৯১টি ম্যাচ খেলেছেন তিনি।
লিওনেল মেসি (আর্জেন্টিনা): আর্জেন্টিনার অনেক আশা রোজারিওর ছোট্ট শিল্পী লিওনের মেসির উপর। ৩৫ বছর বয়সে কাতার বিশ্বকাপে খেলবেন আর্জেন্টিনার ফুটবল জাদুকর। সাতটি ব্যালন ডি’অর খেতাব নিয়ে রোনালদোকে ছাড়িয়ে গেছেন তিনি। শেষটি বাদে সবগুলোই ছিল বার্সেলোনা ক্যারিয়ারে। গেল মৌসুমে ব্যালন ডি’অরের সংক্ষিপ্ত তালিকায় নাম না থাকলেও এই মৌসুমে ছন্দে ফিরেছেন মেসি। ২০১৪ সালে বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনাকে ফাইনালে তুলেছিলেন মেসি। কিন্তু ট্রফি মেসির হাতে উঠেনি। হতে পারে এটিই তার শেষ বিশ্বকাপ।
রবার্ট লিওয়ানদোস্কি (পোল্যান্ড): লিওনেল মেসি ও ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর ছায়ায় যে কৃতিত্ব পাওয়ার যোগ্য ছিলেন তা পাননি ৩৪ বছর বয়সী রবার্ট লিওয়ানদোস্কি। জার্মান বুন্দেস লিগায় বরুসিয়া ডর্টমুন্ডের হয়ে ৪ বছর, পরে বায়ান মিউনিখের ৮ বছর নীরবে গোল করে গেছেন লিওয়ানাদোস্কি। সম্প্রতি বার্সেলোনায় যোগ দেওয়ার আগে ডর্টমুন্ড ও মিউনিখের হয়ে ৩৮৪টি ম্যাচে ৩১২ গোল করেছেন লিওয়ানদোস্কি। পোল্যান্ডের অধিনায়ক লিওয়ানদোস্কি দেশের হয়ে ১৩৪টি ম্যাচে রেকর্ড ৭৬টি গোল করেছেন। এর মধ্যে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে ৯টি।
লুইস সুয়ারেজ (উরুগুয়ে): ১৩৪ গোল নিয়ে উরুগুয়ের সর্বকালের সর্বোচ্চ স্কোরার ৩৫ বছর বয়সী লুইস সুয়ারেজ। নিজের চতুর্থ বিশ্বকাপ খেলতে নামবেন তিনি। আয়াক্স, লিভারপুল, বার্সেলোনা এবং অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদে বিতর্কে জড়ানোর পর ক্যারিয়ারের এই অর্ধে উরুগুয়ের রাজধানী মন্টেভিডিওতে ছেলেবেলার ক্লাব ন্যাসিওনালের সঙ্গে যুক্ত থাকা অবস্থায় এটি তার প্রথম বিশ্বকাপ হবে। ২০১৪ সালের বিশ্বকাপের সময় গ্রুপ পর্বের ম্যাচে ইতালির ডিফেন্ডার জর্জিও চিয়েলিনির কাঁধে কামড়ানোর জন্য সুয়ারেজকে দেশে পাঠানো হয়েছিল।
লুকা মড্রিচ (ক্রোয়েশিয়া): ৩৭ বছর বয়স হওয়া সত্ত্বেও ক্রমেই আরও বেশি জ্বলে উঠছেন মড্রিচ। রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে নিজের দশম মৌসুমে খেলছেন তিনি। স্প্যানিশ ক্লাবের হয়ে এক দশকের সাফল্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন মড্রিচ। এ সময়ে ৫টি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা এবং ৩টি লিগ শিরোপা জিতেছেন মড্রিচ। এ ছাড়া ২০১৮ সালে ব্যালন ডি’অর জিতেছিলেন তিনি।
দানি আলভেস (ব্রাজিল): সর্বকালের সেরা আক্রমণাত্মক রাইট ব্যাকদের মধ্যে একজন ব্রাজিলের ৩৯ বছর বয়সী দানি আলভেস। আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারকে উচ্চতায় শেষ করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ তিনি। বিশেষ করে হাঁটুর ইনজুরির কারণে গত বিশ্বকাপ মিস করার পর এবার ভালো করতে মরিয়া আলভেস। এটি তার শেষ বিশ্বকাপ, এটা নিশ্চিত বলা যায়।
ম্যানুয়েল নয়্যার (জার্মানি): নিঃসন্দেহে জার্মানি থেকে উঠে আসা সেরা গোলরক্ষকদের একজন ৩৬ বছর বয়সী নয়্যার। ২০১৪ সালে জার্মানির বিশ্বকাপ জয়ে ছিল বড় ভূমিকা। ওই আসরে বিশ্বকাপের সেরা গোলরক্ষকের পুরস্কার গোল্ডেন গ্লাভসও জিতেছিলেন তিনি। বছর শেষে ব্যালন ডি’অরের সেরা তিনেও জায়গা করে নিয়েছিলেন নয়্যার। যা গত দুই দশকে আর কোনো গোলরক্ষকই করতে পারেননি।
থমাস মুলার (জার্মানি): ২০১০ বিশ্বকাপে ৫টি গোল করেছিলেন ৩৩ বছর বয়সী থমাস মুলার। এরপর থেকে জার্মানি এবং বায়ার্ন মিউনিখের নিয়মিত সদস্য ছিলেন তিনি। ২০১৮ সালে বিশ্বকাপে বাজে পারফরম্যান্সের অজুহাত দিয়ে ২০১৯ সালে মুলারকে বাদ দেন জোয়াকিম লো। কিন্তু গত বছর ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য দলে ফিরিয়ে আনা হয় মুলারকে এবং দলে নিজের জায়গা প্রতিষ্ঠিত করেন তিনি। ২০১০ সাল থেকে জার্মানির হয়ে ১১৮ ম্যাচে ৪৪ গোল করেন মুলার। পেশাদার লিগে বায়ার্ন মিউনিখের হয়ে ২০০৮ সালে খেলা শুরু করে এখন পর্যন্ত ৪২৩ ম্যাচে ১৩৯ গোল করেছেন তিনি।
এসজি