শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪ | ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

বিশেষ সাক্ষাৎকার

‘বাংলাদেশের মেয়েরা যেন সাবিনাকে ফলো করে’

সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে এক সপ্তাহেরও বেশি হয়েছে। কিন্তু তার ঢেউ এখনো আছে। চলছে সাবিনাদের সংবর্ধনার পর সংবর্ধনা। খেলোয়াড়দের নিশ্বাস ফেলার সময় নেই। এই ব্যস্ততার কারণ খেলোয়াড়দের এখনো ছুটি দেওয়া হয়নি। এই ঢেউ থামার পর তারা যাবেন নিজ নিজ বাড়িতে। এ রকম ব্যস্ততার মাঝেও অধিনায়ক বুধবার (২৮ সেপ্টেম্বর) প্রথমবারের মতো এককভাবে এসেছিলেন ঢাকাপ্রকাশ-এর অফিসে। দিয়েছেন অনেক সময়। হয়েছে অনেক কথা। সেই সব কথার উল্লেখযোগ্য অংশ ঢাকাপ্রকাশ-এর পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো। 

ঢাকাপ্রকাশ: ঢাকায় নামার পর বিমানবন্দরে এত মানুষ থাকবে, বিমানবন্দর থেকে বাফুফে ভবনে আসার পথে দুই পাশে এ রকম মানুষের ঢল থাকবে এটি কি আপনারা ধারণা করতে পেরেছিলেন?

সাবিনা: ম্যাচের দুই দিন আগে থেকে সবার প্রত্যাশা বেড়ে গিয়েছিল। সবাই এক্সাইটেড হয়ে পড়েছিল। আমিও একটা পর্যায়ে ইমোশনাল হয়ে পড়েছিলাম যে সবার মুখে হাসি ধরে রাখতে পারব কি না? ম্যাচ জেতার পর আমাদের ওমেন্স উইংসের চেয়ারম্যান কিরন (মাহফুজ আক্তার কিরন) আপা আমাদের বলেছিলেন তোমাদের জন্য অনেক কিছু অপেক্ষা করছে। তোমরা গেলেই বুঝতে পারবে। আসলে এইভাবে যে আমরা দেখব এটা আমাদের কাছে অপ্রত্যাশিত ছিল। মানুষ যেভাবে বিমানবন্দর থেকে বাফুফে ভবন পর্যন্ত ছিল, আমার ক্যারিয়ারে বা আমার বয়সে আমি এত মানুষ আগে দেখিনি। আমি বারবার বলে আসছি মানুষের এই ভালোবাসার প্রতি কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। এটা আসলে অনেক বড় একটা পাওয়া।

ঢাকাপ্রকাশ: ক্লান্তি ভর করেছিল কি?

সাবিনা: ক্লান্তি বলতে বিমানবন্দর থেকে আমরা ৫/৬ ঘণ্টার মতো দাঁড়িয়ে এসেছি। মানুষ যেভাবে আমাদের জন্য অপেক্ষা করছিল, রাস্তায় দাঁড়িয়েছিল, সেটার তুলনায় আসলে এটা কিছু না। তারা আমাদের জন্য এসেছে। ক্লান্তি অবশ্যই ছিল। মেয়েরা স্টিল নাউ টায়ার্ড। কারণ, বিশ্রাম ৬/৭ দিন পায়নি বলতে গেলে। ক্লান্তির সঙ্গে সঙ্গে ভালো লাগা, ভালোবাসা ছিল। এটাই বড় কথা।

ঢাকাপ্রকাশ: আপনারা তো চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য যাননি। কখন মনে হয়েছে চ্যাম্পিয়ন হতে পারবে?

সাবিনা: প্রথমত আমরা ওভার কনফিডেন্ট ছিলাম না। আমাদের লক্ষ্য ছিল ম্যাচ বাই ম্যাচ। আমি ভারতের খেলা দেখছিলাম। ওদের খেলা দেখার পর মনে হয়েছে এবার আমাদের একটা চান্স আছে। অন্য যে দলগুলো ছিল, তাদের থেকে আমাদের মেয়েরা ফিজিক্যালি অনেক ফিট। মেয়েরা সেটাই মাঠে ব্যবহার করেছে। অন্য দলের প্লেয়াররাও বলেছে বাংলাদেশ একই রিদমে ৯০ মিনিট খেলতে পারে। এটা একটা দলের জন্য অনেক বড় ব্যাপার। আমরা কমিটেড ছিলাম যে সুযোগ যখন আছে সেটা যেন কাজে লাগাই।

ঢাকাপ্রকাশ: আগে কখনো ভারত-নেপাল কোনো দলকেই হারাতে পারেননি। এবার দুই দলকেই হারিয়েছেন? কোন দলকে বেশি শক্তিশালী মনে হয়েছে?

সাবিনা: দুই দলের খেলার ধরন দুই রকম। ভারতের অভিজ্ঞতা বেশি। নেপালেরও আছে। কিন্তু ওদের বেশিরভাগ খেলোয়াড় আমাদের মতো আন্ডার নাইনটিন থেকে এসেছে। ফিজিক্যালি ওরাও অনেক ফিট। দুইটিই ভালো দল। দক্ষিণ এশিয়ায় ভারত তো অনেক শক্তিশালী দল।

ঢাকাপ্রকাশ: সংবর্ধনা পাচ্ছেন কেমন লাগছে?

সাবিনা: আগের কথায় যেতে হয়। কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। গত পরশু শহীদ মিনারে আমরা সাংস্কৃতিক জোট থেকে সংবর্ধনা পেয়েছি। গতকাল সেনাবাহিনী প্রধানের সংবর্ধনা পেয়েছি। এগুলো আসলে মেয়েদের উৎসাহিত করে। গতকালের অনুষ্ঠানে বাবা-মায়েরাও উপস্থিত ছিলেন। এ রকম স্টেজে যখন বাবা-মাকে যখন আনা হয়, তখন ‍তারও অনেক খুশি হন। তাদের মনে হয় যে মেয়েকে ফুটবল দিয়ে ভুল করেননি। মায়েরা, বাবারা যখন এ রকম স্টেজে মেয়েদের এভাবে দেখে এবং নিজেরাও সম্মানিত হয়, তখন বাবা-মাদের দৃষ্টিভঙ্গিও পরিবর্তন হয়। গ্রামের দিকে ১৪/১৫ বছর বয়সে মেয়েদের বিয়ে দেওয়া হয়। সেখান থেকে তারা বের হয়ে আসবে। তাদের দৃষ্টিভঙ্গিরও পরিবর্তন হবে। তারা বের হয়ে আসবে। এখানে যখন মেয়েরা ভালো করে, ভাববে নিজেদের ভবিষ্যৎগড়ছে, করুক।

ঢাকাপ্রকাশ: আপনাদের পরের টার্গেট?

সাবিনা: সাফে টার্গেট শিরোপা ধরে রাখা। কাজী সালাহউদ্দিন স্যার বলেছেন এশিয়া বা আশিয়ান পর্যায়ে খেলা। উইনের চেয়ে বেশিরভাগ ম্যাচ লস হতে পারে। কারণে এখানে ইউরোপ এশিয়ার ভালো ভালো দলের সঙ্গে খেলা। অভিজ্ঞতার দিক দিয়ে এখানে আমরা অনেক পিছিয়ে থাকব। আগে আমরা ভারতের কাছে ৬ গোল খেতাম। নেপালরে কাছে ৩ গোলে হারতাম। এখন আমরা একটা অবস্থানে এসেছি। আমার মনে হয় সময় দিলে আমরা আরও ভালো করতে পারব।

ঢাকাপ্রকাশ: আপনি দীর্ঘদিন ধরে ফুটবল খেললেও সাফ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর রাতারাতি অনেক পরিবর্তন এসেছে। আগে না বললেও এখন হয়তো অনেকেই বলে ওই যে সাবিনা যাচ্ছে। শুনলে আসলে কেমন লাগে?

সাবিনা: এটা অবশ্যই একটা বড় প্রাপ্তি। পরিশ্রমের ফসল যখন পাই তখন আমাদের কাজের প্রতি আরও আগ্রহ বেড়ে যায়।

ঢাকাপ্রকাশ: ছোটবেলা অনেক খেলাধুলা করতেন? ফুটবলকে কখন বেছে নিলেন বা আগ্রহ হলো?

সাবিনা: আমাদের কোচ ছিলেন আকবর স্যার। আমরা একটা ব্যাচ ছিলাম। উনার দুইটা মেয়েও ছিল সেই ব্যাচে। আমরা সব খেলাই খেলতাম। আমি কাবাডি থেকে শুরু করে হ্যান্ডবল, ভলিবল সব খেলতাম। মহিলা ক্রীড়া সংস্থায় যখন খেলা হতো স্যার আমাদের নিয়ে আসতেন। ২০০৮ সালে সিটি সেল ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়ন হতো । আমার ওটা দিয়েই শুরু। পরে সাফ গেমস হয় বাংলাদেশ। সেখানে আমাদের নিয়ে যাওয়া হয়। আমাদের সাতক্ষীরা থেকে ৫ জন ডাক পাই। ২০০৯ সালের ডিসেম্বর আমি ফাইনাল সিলেকশনে টিকে যাই। সেখান থেকেই শুরু। এখনো আছি।

ঢাকাপ্রকাশ: শুরুর পথে বাধা পেয়েছিলেন অনেক। সে সময়ের ঘটনা মনে পড়ে?

সাবিনা: আমি যখন শুরু করি আমার বয়স ১২/১৩ ছিল। খেলার বয়সই ছিল। সে রকম প্রতিবন্ধকতা পাইনি। আমার পরিবারের ভালো সমর্থন ছিল। আমার বড় আপু, আমার বাবা-মা। আমরা ৫ বোন। আমাদের বোনদের মধ্যে কেমিস্ট্রি খুব ভালো। আমি আমাদের কোচদের দেখতাম আমরা যেখানে অনুশীলন করতাম, তখন ওখানের লোকাল লোকেরা ঝামেলা করত। কোচকে দেখতাম তাদের সঙ্গে ঝগড়া করতেন। উনাকে গালাগালিও করা হতো। স্যারকে দেখতাম পুলিশেরও হেল্প নিতেন। যখন মনে পড়ে, তখন খারাপ লাগে।

ঢাকাপ্রকাশ: ওদের সঙ্গে দেখা হলে এখন কী বলে?

সাবিনা: ওরা হয়তো গিল্টি ফিল করে যে ওই সময় ওদের হেল্প করা প্রয়োজন ছিল। তাহলে হয়তো মেয়েগুলো আরও ভালো করতে পারত।

ঢাকাপ্রকাশ: আপনাকে দেখে আপনার এলাকার মেয়েরা কতটা উৎসাহী হয়েছে?

সাবিনা: ইতোমধ্যে আমি একটা একাডেমি করেছি, আমার এলাকার এক বড় ভাই আবু সাঈদ উনার হেল্প নিয়ে। উনি চেয়ারম্যান, আমি জেনারেল সেক্রেটারি। ইচ্ছে আছে সাতক্ষীরার ফুটবলকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার। ইতোমধ্যে দুই বছর হয়ে গেছে। এখন আমাদের এখানে ৬০/৭০ জন খেলোয়াড় আছে ছেলে মেয়ে মিলে।

ঢাকাপ্রকাশ: প্রথম নারী ফুটবলার হিসেবে দেশের বাইরে প্রফেশনাল লিগ খেলছেন। ছেলেদের ক্ষেত্রে সালাহউদ্দিন। সালাহউদ্দিনকে বলা হয় বাংলাদেশের কিংবদন্তি ফুটবলার। আপনি কি মেয়েদের ক্ষেত্রে কিংবদন্তি?

সাবিনা: আমি সেভাবে নিজেকে ভাবি না। মানুষ বলে থাকলে সেটা আমার জন্য অনেক বড় পাওয়া। আমি ২০১৪/১৫ সালের দিকে শুনেছি সালাহউদ্দিন স্যার দেশের বাইরে খেলেছেন। তার ৪৫/৪৭ বছর পর আমি খেলছি। এটা অবশ্যই আমার জন্য গর্বের বিষয়। এটা কন্টিনিউ করছি এখনো। ৩০ তারিখ যাব মালদ্বীপ।

ঢাকাপ্রকাশ: চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর কার কথা মনে পড়েছে প্রথম?

সাবিনা: আমার প্রথম মনে পড়েছে দেশের মানুষের কথা। অনেকে স্ট্যাটাস দিয়েছে ট্রফিটা দেশে নিয়ে আসুন ক্যাপ্টেন। এরকম কিছু ইমোশনাল স্ট্যাটাস আমি দেখেছি। আমার মনে হয়েছে দেশের মানুষ এখন হাসছে। শহীদ মিনারে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সংবর্ধনায় কেউ কেউ বলেছেন যে খুশিতে তারা কান্না করে ফেলেছিলেন। এটা আসলে আমার মনে ধরেছিল প্রথমে যে, আমি মানুষগুলোর মুখে হাসি ফুটাতে পেরেছি।

ঢাকাপ্রকাশ: আপনার ফুটবলার হওয়ার পেছনে আকবর আলী ছাড়া আর কার কার অবদান আছে?

সাবিনা: আমি মনে করি আমি নিজে। আমি যদি না যেতাম তাহলে আমি ফটুবলার হতাম না। আকবর আলী স্যার ছিলেন একট পন্থা। উনি আমাকে আমার বাসা থেকে উঠিয়ে নিয়ে এসেছিলেন। আমার বড় বোন অনেক সাপোর্ট দিয়েছিলেন। বাবা-মা সাপোর্ট দিয়েছিলেন সবচেয়ে বেশি। সাপোর্ট আমি আমার পরিবারের কাছ থেকে পেয়েছি।

ঢাকাপ্রকাশ: বাংলাদেশে প্রিয় ক্লাব কোনটা?

সাবনিা: সেরকম কোনো প্রিয় দল নেই। কারও খেলা সেভাবে ভালো লাগে না। তবে তারা উন্নতি করুক সেটা চাই। তবে একটা সময় আমিনুল ভাই, জয় ভাইরা যখন খেলতেন তাদের খেলা ভালো লাগত।

ঢাকাপ্রকাশ: এক সময় ফুটবল খুব জনপ্রিয় ছিল শুনেছেন। এখন খুলনার অনেকে ক্রিকেটার। এখন আবার আপনাকে দেখে কী উঠে আসছে?

সাবিনা: ট্রানজেশনটা মোমেন্টটা হবেই এটাই স্বাভাবিক। আমি শুনতাম। উনাদের খেলা দেখা হয়নি। উনাদের ব্যাকগ্রাউন্ড দেখলেই বোঝা যায় উনারা কোনো মাপের প্লেয়ার ছিলেন। আমরা লাকি যে উনারা এখনো আছেন আমাদের ফেডারেশনে।

ঢাকাপ্রকাশ: ইউরোপীয় ফুটবল দেখেন। কোন ক্লাব প্রিয়?

সাবিনা: মেসি যখন ছিল বার্সেলোনার খেলা দেখতাম। এখন পিএসজিতে চলে গেছে। বেশির ভাগ খেলা দেখা হয় না। মধ্যরাতে খেলা দেখায়। ভালো লাগে রোনালদো, নেইমারের খেলা ভালো লাগত। বেশি ভালো লাগে ইনিয়েস্তার খেলা। উনার প্লেমেকার খেলা আমি খুব ভালো উপভোগ করতাম।

ঢাকাপ্রকাশ: উনাদের খেলা কতটা অনসুরণ করে থাকেন?

সাবিনা: নিজের বুদ্ধিমত্তাটা কাজে লাগাতে চেষ্টা করি। কারণ, আমি মাঝে মাঝে যেহেতু প্লে মেকার হিসেবে খেলি, আমি ট্রাই করি ইনিয়েস্তাকে ফলো করার সেভাবে খেলে, পাস দেওয়ার।

ঢাকাপ্রকাশ: সামনে বিশ্বকাপ ফুটবল। কোন দলকে সমর্থন করেন?

সাবনিা: মেসির জন্য আর্জেন্টিাকে সাপোর্ট করি।

ঢাকাপ্রকাশ: আপনাকে যদি বলা হয় মেসি-নেইমার-রোনালদো কার মতো হতে চান, কাকে বেছে নেবেন?

সাবনিা: আমি এই বিষয়ে দ্বিমত করতে চাই। আমি আসলে নিজের অবস্থানকে এভাবে রেখে যেতে চাই, যাতে মানুষ আমাকে ফলো করে। বাংলাদেশের মেয়েরা সাবিনার মতো হতে চায়। উনাদের মতো হতে হয়তো পারব না। তবে উনাদের অনুসরণ করার চেষ্টা করি।

ঢাকাপ্রকাশ: এবারের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে শিরোপা থেকে শুরু করে সেরা খেলোয়াড়, সর্বোচ্চ গোলাদাতা, সেরা গোলরক্ষক, ফেয়ার প্লে সব কিছুই বাংলাদেশের। এ রকম সাফল্য আসবে ভেবেছিলেন, কেমন লাগছে?

সাবিনা: এটা একটা গ্রেট অ্যাচিভমেন্ট। বলে না আল্লাহ পাক যখন দেন পুরোটা ভরে দেন। ব্যাপারটা এ রকমই। আল্লাহর রহমত ছিল। অবশ্যই সষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতা। মাঝে মাঝে মনে হয় আমরা যে রকম পরিশ্রম করেছি এটা আমরা ডিজার্ব করি। এটার দাবিদার আসলে আমরাই।

ঢাকাপ্রকাশ: সানজিদার স্ট্যাটাস নিয়ে আপনার মতামত?

সাবিনা: আমি দেখেছি খেলার দিন। এত শর্ট টাইমে এভাবে ভাইরাল হয়ে যাবে ভাবিনি। ধন্যবাদ প্রধানমন্ত্রী ও ক্রীড়ামন্ত্রীকে বিষয়টি নোট করার জন্য।

এমপি/এসএন/এমএমএ/

 

Header Ad

খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করলেন মাহফুজ-আসিফ-নাহিদ

ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে কুশল বিনিময় করেছেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বিকেলে সেনাকুঞ্জে সশস্ত্র বাহিনী দিবসের অনুষ্ঠানে তাদের এ কুশল বিনিময় হয়।

সেনাকুঞ্জে খালেদা জিয়া পৌঁছালে উপস্থিত সবাই তাকে স্বাগত জানান। অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৩ সমন্বয়ক ও সরকারের উপদেষ্টা তার পাশে এসে দাঁড়ান এবং শারীরিক খোঁজখবর নেন। এ সময় খালেদা জিয়া তাদের অভিনন্দন জানান এবং দেশকে এগিয়ে নিতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার পরামর্শ দেন।

এ সময় এই ৩ উপদেষ্টা বিএনপি চেয়ারপারসনের কাছে দোয়া চান এবং সরকারের সংস্কার কাজে তার সর্বাত্মক সহযোগিতা চান।

এদিকে সেনাকুঞ্জে গেলে খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্ত্রী খালেদা জিয়া এখানে এসেছেন। একযুগ তিনি আসার সুযোগ পাননি। আমরা গর্বিত এই সুযোগ দিতে পেরে। দীর্ঘদিনের অসুস্থতা সত্ত্বেও বিশেষ দিনে সবার সঙ্গে শরিক হওয়ার জন্য আপনাকে আবারও ধন্যবাদ। আপনার আশু রোগমুক্তি কামনা করছি।

Header Ad

দেশের বাজারে আবারও বাড়ল স্বর্ণের দাম

ছবি: সংগৃহীত

আবারও স্বর্ণের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। এবার ভরিতে ১ হাজার ৯৯৪ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৩৯ হাজার ৪৪৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা আজকেও ছিল এক লাখ ৩৭ হাজার ৪৪৯ টাকা।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বাজুস। শুক্রবার (২২ নভেম্বর) থেকেই নতুন এ দাম কার্যকর হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) মূল্য বেড়েছে। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।

নতুন দাম অনুযায়ী, প্রতি ভরি ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম পড়বে ১ লাখ ৩৯ হাজার ৪৪৩ টাকা। এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৩৩ হাজার ৯৮ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১৪ হাজার ৮৬ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯৩ হাজার ৬৭৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বাজুস আরও জানায়, স্বর্ণের বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে আবশ্যিকভাবে সরকার-নির্ধারিত ৫ শতাংশ ভ্যাট ও বাজুস-নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি ৬ শতাংশ যুক্ত করতে হবে। তবে গয়নার ডিজাইন ও মানভেদে মজুরির তারতম্য হতে পারে।

স্বর্ণের দাম কমানো হলেও দেশের বাজারে অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। দেশে ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৫৭৮ টাকায়। এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ৪৪৯ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ১১১ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫৮৬ টাকায়।

এর আগে, সবশেষ গত ১৯ নভেম্বর দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম সমন্বয় করেছিল বাজুস। সে সময় টানা চার দফা কমার পর ভরিতে ২ হাজার ৯৪০ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৩৭ হাজার ৪৪৯ টাকা নির্ধারণ করেছিল সংগঠনটি।

এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৩১ হাজার ১৯৭ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১২ হাজার ৪৫৩ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯২ হাজার ২৮৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। যা কার্যকর হয়েছে গত ২০ নভেম্বর থেকে।

এ নিয়ে চলতি বছরে এখন পর্যন্ত দেশের বাজারে ৫১ বার স্বর্ণের দাম সমন্বয় করা হয়েছে। যেখানে ৩০ বার দাম বাড়ানো হয়েছে, আর কমানো হয়েছে ২১ বার।

Header Ad

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

ছবি: সংগৃহীত

দেশের জনপ্রিয় নির্মাতা আশফাক নিপুন। কাজের পাশাপাশি সামাজিক মাধ্যমেও বেশ সরব তিনি। কথা বলেন নানা ইস্যু নিয়ে। সেই ধারাবাহিকতায় সরকার পতনের পর অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠনেও বিভিন্ন সময় নিজের আকাঙ্ক্ষা, প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন। পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশ্যেও বিভিন্ন বার্তা দিয়েছেন। এবার এমনি একটি বার্তায় দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি জনগনের আস্থার বিষয়ে আক্ষেপ জানালেন এই নির্মাতা।

বুধবার (২০ নভেম্বর) আশফাক নিপুন তার ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে লেখেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সর্বস্তরের ছাত্র এবং সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছিল, বাসায় বসে বসে দোয়া করেছিল, যার যা সামর্থ্য দিয়ে সহায়তা করেছিল। কারণ, তারা দেখেছিল লড়াইটা আওয়ামী ফ্যাসিস্ট শাসক বনাম সাধারণ ছাত্র-জনতার। এটাও অস্বীকার করার কোনো উপায় নাই যে এই আন্দোলন বেগবান করতে বিরোধী সকল দলের কর্মীদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাদের সংগ্রামও গত দেড় দশকের। কিন্তু এটা যদি শুধুমাত্র রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার লড়াই হতো তাহলে সাধারণ মানুষ এই লড়াই থেকে দূরে থাকত। সেই প্রমাণ বিগত ১৫ বছরে আছে।

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

কারণ হিসেবে তিনি বলেন, দেশের সাধারণ মানুষ এখনো দেশের কোনো রাজনৈতিক দলকেই পুরোপুরি বিশ্বাস করতে পারে না। এটাই বাস্তবতা। এই বাস্তবতা মেনে সকল রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত কীভাবে সাধারণ জনগণের ভেতর নিজের দলের প্রতি আস্থা তৈরি করা যায় সেই বিষয়ে নিরলস কাজ করা। এই আস্থা ক্ষমতায় গিয়ে অর্জন করা সম্ভব না। কারণ, সাধারণ মানুষ আজীবন এস্টাবলিশমেন্টের বিপক্ষে। এই আস্থা অর্জন করতে হয় ক্ষমতা বলয়ের বাইরে থেকেই।

নিপুন আরও লিখেন, অরাজনৈতিক সরকার দিয়ে দীর্ঘদিন দেশ চালানো যেমন কাজের কথা না ঠিক তেমনি রাজনৈতিক সরকার হতে চাওয়া সকল রাজনৈতিক দলগুলোর বোঝা উচিত মুক্তিযুদ্ধের পরে বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় গণঅভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছে সকল প্রকার পূর্বানুমান (যেমন- বর্ষাকালে আন্দোলন হয় না, নির্বাচনের আগেই কেবল জোরেশোরে আন্দোলন হয়, ঘোষণা দিয়ে বিরোধী সকল পক্ষ আন্দোলনে শামিল না হলে সফল হয় না) অগ্রাহ্য করেই। সেটা সম্ভব হয়েছে সাধারণ মানুষের ন্যায্যতার আকাঙ্ক্ষা থেকেই।

সবশেষ এই নির্মাতা লিখেছেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষার দুই পয়সার দাম দেন নাই। সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষা, ইচ্ছা আর দেশপ্রেমকে পুঁজি করে অরাজনৈতিক এবং রাজনৈতিক যারাই রাজনীতি রাজনীতি খেলতে চাইবে, তাদের দশাও কোন একসময় যেন পলাতক শেখ হাসিনার মতো না হয়, সেই বিষয় নিশ্চিত করতে হবে তাদেরকেই।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করলেন মাহফুজ-আসিফ-নাহিদ
দেশের বাজারে আবারও বাড়ল স্বর্ণের দাম
‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’
‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা
নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু
২০২৬ সালের মাঝামাঝিতে নির্বাচন হতে পারে: উপদেষ্টা সাখাওয়াত
সেনাকুঞ্জে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে খালেদা জিয়ার শুভেচ্ছা বিনিময়
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ৫ জনকে রোবটিক হাত উপহার
সেনাকুঞ্জের পথে খালেদা জিয়া
সুযোগ পেলে শেখ হাসিনার পক্ষে মামলায় লড়ব: জেড আই খান পান্না
নির্বাচন কমিশন গঠন, সিইসি হলেন অবসরপ্রাপ্ত সচিব নাসির উদ্দীন
ডিএনএ টেস্টের ফলাফল: ভিনিসিয়ুসের পূর্বপুরুষ ছিলেন ক্যামেরুনের
জামিন পেলেন সাংবাদিক শফিক রেহমান
বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে আসা সেই শাহজাহান ওমর গ্রেপ্তার
মিরপুর ও মহাখালীতে অটোরিকশা চালকদের সেনাবাহিনীর ধাওয়া
‘শেখ হাসিনা এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী’, এমন কথা বলেননি ট্রাম্প
লেবাননে ৮ শতাধিক ইসরায়েলি সেনা নিহত
ভারতে সাজাভোগ শেষে দেশে ফিরল ২৪ বাংলাদেশি কিশোর-কিশোরী
ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে অবরোধ করে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের বিক্ষোভ
গাজায় ইসরায়েলের হামলায় আরও ৮৮ ফিলিস্তিনি নিহত