বাফুফের জিডি, প্রয়োজনে দেওয়া হবে ক্ষতিপূরণ
সুখ বেশি সময় থাকেনি। প্রথমবারের মতো দেশকে দক্ষিণ এশিয়ার সেরা নারী দলে পরিণত করে দেশবাসীকে আনন্দের সাগরে ভাসিয়েছিলেন সাবিনারা। জরুরি ভিত্তিতে ছাদখোলা বাস প্রস্তত করে বর্ণিলভাবে বরণও করে নেওয়া হয়। কিন্তু দেশের মাটিতে অবতরণের পরই সাবিনা-মারিয়াদের সেই আনন্দ-উচ্ছ্বাসে ভাটা পড়তে থাকে। নানান বিব্রতকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে থাকে একের পর এক। সেটি সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বাড়তেই থাকে।
শুরুটা হয় বিমানবন্দরে নামার পরই। যেখানে সাফল্যের সেনানীদের পেছনে রেখে কর্তারা ব্যস্ত হয়ে পড়েন ছবি তোলায়। তবে এ ঘটনার চেয়েও বেশি পীড়াদায়ক ছিল বাফুফে ভবনে ঘটনায়। বিমানবন্দরে খেলোয়াড়রা পেছনে থাকলেও সবাই ছিলেন দাঁড়িয়ে। কিন্তু বাফুফে ভবনেও তারা পেছনে ছিলেন। কিন্তু সেখানে তারা ছিলেন দাঁড়িয়ে। কর্তারা ছিলেন বসে। যদিও শুরুতে অধিনায়ক সাবিনা ও কোচ গোলাম রাব্বানি ছোটন চেয়ারে বসে ছিলেন। কিন্তু প্রচারপ্রিয় কর্তারা আসতে শুরু করলে তাদের বসার জায়গা দিয়ে ছোটন ও সাবিনা দাঁড়িয়ে পেছনে চলে যান। কিন্তু সৌজন্যতার জন্য হলেও সেই সব কর্তারা সাবিনা-ছোটনকে বারণ করেননি চেয়ার না ছাড়তে। এ নিয়ে তুমুল বিতর্ক চারিদিকে।
এদিকে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার উৎসব শেষ হয়ে আসার পর খেলোয়াড়রা যখন তাদের লাগেজের কাছে যান, সেখানে গিয়ে কোনো কোনো খেলোয়াড়ের চোখ কপালে উঠে যায়। কৃষ্ণা রানী সরকার ও শামসুন্নাহার সিনিয়রের লাগেজের তালা ভাঙা। লাগেজ থেকে ডলার খোয়া যাওয়ার বিষয়টি চোখে পড়ে। কৃষ্ণার লাগেজ থেকে ৯০০ মার্কিন ডলার ও ৫০ হাজার এবং শামসুন্নাহারের লাগেজ থকে ৪০০ মার্কিন ডলার পাওয়া যায়নি। সঙ্গে আরও কিছু মূল্যবান জিনিসপত্রও ছিল।
বিষয়টি নজরে আসার পর বাফুফের পক্ষ থেকে বিমানবন্দরে যোগাযোগ করা হয়। সেখান থেকে জবাব আসে সিসিটিভি পরীক্ষা করে দেখা গেছে বিমানবন্দরে এমন কোনো কিছু ঘটেনি। বাফুফে ভবনেও সিসিটিভি পরীক্ষা করে সেখানেও এরকম কোনো কিছু নজরে আসেনি। পরে বাফুফের পক্ষ থেকে মতিঝিল থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।
বাফুফের সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগ বলেন, ‘ইতোমধ্যে আমরা মতিঝিল থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছি। বিমানবন্দর থানায় সাধারণ ডায়েরি করার প্রক্রিয়া চলছে। সেখানে বাফুফে লিগ্যাল ডিপার্টমেন্টের লোকেরা কাজ করছে।’
এদিকে এই ঘটনায় তৎপর হয়ে উঠেছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষও। মাঠে নেমেছে বিমানবন্দরে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা গোয়েন্দা সংস্থা, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের একাধিক ইউনিট, এপিবিএন এবং র্যাব।
বিমানবন্দরে এবং বাফুফে ভবনের সিসিটিভি ফুটেজে কোনো কিছু ধরা না পড়ায় বাফুফে এখন নেপালে যোগাযোগ করছে, সেখানে এরকম কোনো কিছু ঘটেছে কিনা। বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বাফুফে ভবনে সংবাদ সম্মেলনে বাফুফের মহিলা উইংসের চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরন বলেন, ‘ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দরে ডলার চুরি ঘটনার যদি কোনো প্রমাণ না পাওয়া যায় তাহলে আমরা নেপালের কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সঙ্গে যোগাযোগ করব। ঘটনাটি সেখানে ঘটেছে কিনা তা খতিয়ে দেখার জন্য তাদের অনুরোধ জানাব।’
যদি শেষ পর্যন্ত না-ই পাওয়া যায় তাহলে বাফুফের পক্ষ থেকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে বলে জানান মাহফুজা আক্তার কিরন। তিনি বলেন, ‘দুই ফুটবলারের খোয়া যাওয়া ডলার যদি উদ্ধার করা না যায় তাহলে আমরা সমপরিমাণ অর্থ বাফুফের ফান্ড থেকে তাদের দিয়ে দেব।’
এমপি/এসজি