‘নো’ বল চোখে পড়েনি আম্পায়ারদের
একটি, দুটি নয়, গুনে গুনে বারোটি নো বল দৃষ্টি এড়িয়ে গেছে আম্পায়ারদের। আর এমন কাণ্ড ঘটেছে ‘আ্যসেজের মতো গুরুত্বপূর্ণ সিরিজে। ঘটনার নায়ক ইংল্যান্ডে বেন স্টোকস। তবে বারোটি ধরা না পড়লেও দুইটি ধরা পড়েছে। তাও ধরা পড়তো কি-না সন্দেহ ছিল, যদি না অস্ট্রেলিয়ার ডেভিড ওয়ার্নার আউট হওয়ার পর নো বল চেক করা না হতো। তখনই ধরা পড়ে বেন স্টোকসের বলটি ছিল নো বল। এরপর সম্প্রচার প্রতিষ্ঠান সেভেন ক্রিকেটে এই ঘটনা প্রকাশ করে।
ব্রিসবেনের গ্যাবায় অ্যাসেজ সিরিজের দ্বিতীয় দিন অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসের ১৩তম ওভারে ঘটে এই ঘটনা। বেন স্টোকসের ছিল আবার প্রথম ওভার। তার সেই ওভারের চতুর্থ বলে ওয়ার্নার আউট হয়ে যান। পরে টিভি রিপ্লেতে ধরা পড়ে ওভার স্টেপিং। জীবন পেয়ে ওয়ার্নার করেন ৯৪ রান।
বেন স্টোকসের ১৪টি নো বল ছিল তার প্রথম ৫ ওভারেই। যার বারোটি ধরা পড়েনি। একটি ধরা পড়ে ক্যামেরায়, একটি ধরা পড়ে আম্পায়ারের চোখে। এই টেস্টে আম্পায়ার ও ম্যাথার্ড আম্পায়ার সবাই অস্ট্রেলিয়ান। দুই আম্পায়ার হলেন পল রাইফেল ও রড টাকার। থার্ড আম্পায়ার পল উইলসন।
নো বল ধরার জন্য প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এটি শুরু হয় গত বছর পাকিস্তান-অস্ট্রেলিয়ার সিরিজ থেকে। ২০১৮ সালে অস্ট্রেলিয়া-পাকিস্তানের সিরিজে পাঁচটি নো বল ধরা পড়ার বিষয়টি পরে জানিয়েছিল ব্রডকাস্টাররা। ২০১৯-২০ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়া-পাকিস্তানের এই ব্রিসবেনেই ২১টি নো বল আম্পায়ারদের নজর এড়িয়ে গিয়েছিল। এটিও জানা গিয়েছিল সম্প্রচার প্রতিষ্ঠানের কল্যাণে।
নো ব্যবহার করেন থার্ড আম্পায়ার। প্রতিটি বলের পর তিনি এই নো বল পরীক্ষা করে থাকেন। কিন্তু চলমান টেস্টে সেই প্রযুক্তি টেস্ট শুরুর আগেই বিকল হয়ে যায়। পরে আর সচল করা সম্ভব হয়নি। তাই আম্পায়ারেদের নজর এড়িয়ে যায়। কিন্তু এভাবে এতোগুলো নো বল নজরে না আসাতে অনেক সাবেক ক্রিকেটারই বিষ্ময় প্রকাশ করেছেন।
অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়ক রিকি পন্টিং বলেন, ‘এগুলো পর্যবেক্ষণ করার পরেও কেউ যদি নো-বল না দেন, তাহলে সেটি খুব দুঃখজনক। ওভারের প্রথম বলে যদি আম্পায়ার নো বল ধরিয়ে দিতেন, তাহলে হয়তো স্টোকস নিজেকে শুধরে নিতেন।’
অস্ট্রেলিয়ার আম্পায়ার সাইমন টোফেলও আম্পায়ারদের এ রকম সিদ্ধান্তে অবাক হয়েছেন। তিনি বলেন, ‘প্রযুক্তির সাহায্যে এখন তো সব বল পর্যবেক্ষণ করা যায়। কিন্তু আমি বুঝতে পারছি না কেন এই বলগুলো পর্যবেক্ষণ করা হলো না।’
নো বল বিতর্ক টেস্টে দ্বিতীয় দিন শেষে ম্যাচে চালকের আসনে স্বাগতিকরা। প্রাভিস হেডের ঝড়ো সেঞ্চুরিতে অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ ৭ উইকেটে ৩৪৩। হাতে ৩ উইকেট নিয়ে তারা এগিয়ে আছে ১৯৬ রানে। হেড ৮৫ বলে তুলে নেন ক্যারিয়ারের তৃতীয় সেঞ্চুরি। অ্যাসেজ সিরিজে প্রথম। ৯৫ বলে ১১২ রান নিয়ে তিনি আজ আবার ব্যাট করতে নামবেন। হেড ছয়ে নেমে সেঞ্চুরি করলেও ওপেনার ওয়ার্নার কাছাকাছি গিয়ে ব্যর্থ হন। নো বল বিতর্কে ১৭ রানে বেঁচে যাওযার পর ওয়ার্নার সেঞ্চুরির কাছাকাছি চলে গিয়েছিলেন। কিন্তু ৯৪ রানে তাকে আউট করে সেঞ্চুরি বঞ্চিত করেন রবিনসন। লাবুশেন করেন ৭৪ রান। রবিনসন নেন ৩ উইকেট।
এমপি/এএন