পঞ্চম সেঞ্চুরি লিটনের

লিটন দাসের ব্যাটে আবার সুরের মূর্ছনা। গেয়েছেন রান সঙ্গীত। করেছেন ১৩৬ রান। তার রানের মূর্ছনায় ভেসে গেল আফগানদের বোলিং আক্রমণ। আড়াল পড়ে গেছে প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের টপ অর্ডারের ভয়াবহ ব্যর্থতা। ৪৫ রানে নেই ৬ উইকেট। তারপরও সেদিন বাংলাদেশ ম্যাচ জিতেছিল ৪ উইকেটে। আর আজ উইকেটই হারিয়েছে ৪টি। রান উঠেছে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সর্বোচ্চ ৪ উইকেটে ৩০৬ রান। লিটন ও মুশফিক মিলে গড়ে দেন ২০২ রানের জুটি। এই জুটি আবার তৃতীয় উইকেট জুটিতে বাংলাদেশের সেরা।
সাগরিকায় লিটন তিন অংকের যে মালা গেঁথেছেন তা কিন্তু তার ব্যাটিংয়ের শুরু দেখে বুঝার উপায়ই ছিল না। ভীষণ নড়বড়ে ছিলেন। মনে হচ্ছিল যেকোনো সময় সাজঘরমুখী হবেন। নিজেকে ধাতস্থ করার আগেই হারান সঙ্গি দলনেতা তামিম ইকবালকে। এরপর সাকিব এসে তাকে সঙ্গ দেওয়া শুরু করার পর লিটন নিজেকে ধীরে ধীরে জমাট করে নেন পিচে। পরবর্তিতে আফগানিস্তানের স্পিন ত্রয়ী রশিদ-নবী-মুজিবকে তিনি ভোতা করে দেন। চাপ তৈরি করতে দেননি আগের ম্যাচে গ্রাস ছড়ানো পেসার ফজলহক ফারুকীকেও।
শুরুতে নড়বড়ে থাকায় তার হাফ সেঞ্চুরি করতেও বলের ব্যবহার দ্বিতীয় হাফ সেঞ্চুরির তুলনায় বেশি ছিল। প্রথমে ৬৫ বল ব্যবহার করেন। পরে ব্যবহার করেন ৪২টি। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে রানের গতি আরো বেগবান করতে গিয়ে তিনি আউট হন ফরিদ আহমেদের বলে মুজিবের হাতে ধরা পড়ে। সেই সঙ্গে সাঙ্গ হয় তার ১২৬ বলে ২ ছক্কা ও আর ১৪ চারে সাজানো ইনিংসের।
লিটনের এই সেঞ্চুরির সঙ্গে তার আগের সেঞ্চুরিরগুলোর সাদৃশ্য ছিল কম। হোক ওয়ানডে কিংবা টেস্ট, লিটনের সেঞ্চুরি মানেই যেন স্ট্রোকের ফুলঝরি। এইতো গত মাসে নিউ জিল্যান্ড সফরে ক্রইস্টচার্চ টেস্টে বাংলাদেশ ইনিংস ও ১১৭ রানে হারলেও লিটন দ্বিতীয় ইনিংসে খেলেছিলেন ১০২ রানের ইনিংস। মাত্র ১১৪ বলে খেলেছিলেন তিনি। ১৪টি চারের সঙ্গে ছিল একটি ছক্কাও কিংবা তার একদিনের আগের চারটি সেঞ্চুরির কথাও উল্লেখ করা যায়।
বাংলাদেশের একদিনের ক্রিকেটে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের মালিকানাতো লিটনেরই। তিনি তা কেড়ে নিয়েছিলেন বর্তমান দলনেতা তামিম ইকবালের কাছ থেকে। ১৫৪ ও ১৫৮ রান করে তামিম ইকবালের এই দুইটি ইনিংসই ছিল বাংলাদেশের সর্বোচ্চ। কিন্তু লিটন দাস ২০২০ সালে সিলেটে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ম্যাচ খেলেন ১৭৬ রানের ইনিংস। এই সিরিজের প্রথম ম্যাচেও লিটন করেছিলেন ১২৬ রান। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তার আরেকটি সেঞ্চুরি আছে, যা তিনি করেছিলেন গত বছর জিম্বাবুয়ে সফরে। সেই সফরে হারারেতে করেছিলেন ১০২ রান। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা তিনটি সেঞ্চুরিতেই বাংলাদেশ জিতেছিল। কিন্তু লিটনের প্রথম সেঞ্চুরি আবার বৃথা গিয়েছিল। তার সেঞ্চুরির পরও বাংলাদেশ হেরেছিল। ২০১৮ সালে এশিয়া কাপ ক্রিকেটের ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে দুবাইতে তিনি খেলেছিলেন ১১৮ রানের ইনিংস। কিন্তু তারপরও বাংলাদেশ ম্যাচ জিততে পারেনি। শেষ বলে গিয়ে হেরেছিল ৩ উইকেটে।
এমপি/এসআইএইচ
