প্লে অফ রাউন্ডের চতুর্থ দল খুলনা

আইপিএলের নিলামে ডু প্লেসিকে নিয়ে কাড়াকাড়ি হয়েছে। পরে ৭ কোটি রুপিতে তাকে কিনে নেয় রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু। কেন নিয়েছে তা নতুন করে বলার কিছু নেই। সেই ডু প্লেসিকে বড় আশা করে নিয়ে এসেছে বিপিএলে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসও। কিন্তু তিনি যেন ৎনামের প্রতি সুবিচার করতে পারছিলেন না।
আগের দিন একই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে মঈন আলী যখন ছক্কার বৃষ্টি শুরু করেছেন, তখন সঙ্গে থাকা ডু প্লেসি আঁধারে ঢাকা! কিন্তু পরের দিনই তিনি নিজের জাত চেনালেন। মাত্র ৫২ বলে তুলে নেন সেঞ্চুরি। তার এই সেঞ্চুরিতেই কুমিল্লা ৫ উইকেটে ১৮২ রান করে খুলনাকে বড় চ্যালেঞ্জে ফেলে দেয়। এই ম্যাচে কুমিল্লার হারানো কিছু নেই। প্লে অফ রাউন্ড নিশ্চিত হওয়ার পাশাপাশি তারা কোয়ালিফায়ার খেলাও নিশ্চিত করেছে।
জয়-পরাজয়ে তাদের কোনো কিছু আসবে যাবে না। কিন্তু খুলনার জন্য জীবন-মরণ। জিতলে চতুর্থ দল হিসেবে প্লে অফে গিয়ে চট্টগ্রামের বিপক্ষে খেলবে এলিমেনটর রাউন্ড। হেরে গেলে সেই সুযোগ চলে আসবে মিনিস্টার গ্রুপ ঢাকার। এমন কঠিন লক্ষ্যকে সামনে রেখে মুশফিকুর রহিমের খুলনা শেষ পর্যন্ত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পেরেছে আন্দ্রে ফ্লেচারের পাল্টা সেঞ্চুরিতে। তার ৬২ বলে অপরাজিত ১০১ রানে খুলনা ম্যাচ জিতেছে ৮ বলে হাতে রেখে ৯ উইকেটে। ১০ উইকেটেই তারা জয়ী হতে চলেছিল। কিন্তু রান সমান হওয়ার পর মেহেদি হাসান আউট হয়ে যান ৭৪ রানে। এলিমেনেটরে খুলনা খেলবে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে ১৪ ফেব্রুয়ারি।
খুলনার বিপক্ষে আগের দিন কুমিল্লা করেছিল ৬ উইকেটে ১৮৮। এবার সেখান থেকে ৬ রান কম। টস জিতে আবারও বড় সংগ্রহের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে কুমিল্লা শুরুতেই বিপদে পড়ে ৩১ রানে ২ উইকেট হারিয়ে। ফলে ব্যাটিং পাওয়ার প্লেতে তারা সংগ্রহ করে ২ উইকেটে ৪৮। মাহমুদুল হাসান জয়ের সঙ্গেহ জুটি বেঁধে ডু প্লেসি ৫.৫ ওভারে যোগ করেন ৪৯ রান। জয় ২৭ বলে ৩১ রান করে ফিরে যাওয়ার পর মঈন আলীও দ্রুত বিদায় নেন মাত্র ৮ রানে। এ সময় দলের রান ছিল ১৪ ওভারে ৪ উইকেেট ১১৭। অপরপ্রান্তে উইকেট পড়লে কি হবে ডু প্লেসি ছিলেন আপন মহীদায় উদ্ভাসিত। ৩০ বলে তুলে নেন ফিফটি।
মঈন আলী আউট হওয়ার পর মাইদুল ইসলাম অঙ্কন ভালো সঙ্গ দেন ডু প্লেসিকে। জুটিতে ৫০ রান আসে মাত্র ৪.৪ ওভারে। এর মাঝে তিনি সেঞ্চুরি তুলে নেন ৫২ বলে। তার পরের ফিফটি আসে মাত্র ২২ বলে। ৩ টি ছক্কার সঙ্গে ছিল ১২টি চার। সেঞ্চুরি করার পর তিনি ১০১ রানে আউট হয়ে যান নাভিন-উল-হকের বলে সৌম্য সরকারের হাতে ধরা পড়ে। তিনি আউট হওয়ার পর শেষ ৮ বলে অঙ্কন ও সুনিল নারিন ১৫ রান যোগ করেন। ডু প্লেসি তাণ্ডবে শেষ ৫ ওভারে রান আসে ৫৬।
লক্ষ্য যতোই বড় হোক। অতিক্রম করতেই হবে। না করতে পারলে বিদায়। খুলনা টাইগার্স যেন সত্যিকারের বাঘ হয়ে তাড়া করতে নামে। ওপেনিংয়ে আন্দ্রে ফ্লেচারের সঙ্গে মেহেদী হাসানকে দিয়ে শুরু করে। সফলও হয়। আসল খেলাটা খেলতে থাকেন ফ্লেচার। তাকে সাহচর্য্য দিয়ে যেতে থাকেন মেহেদী। ব্যাটিং পাওয়ার প্লেতেই রান চলে আসে বিনা উইকেটে ৬৯। ফ্লেচার ২৫ বলে তুলে নেন ফিফটি।
এ সময় মেহেদীর রান ছিল ১৫ বলে ২৩। ফ্লেচার-মেহেদী একটি একটি করে রান করতে থাকেন, আর তা বিদ্ধ হতে থাকে মাঠের বাইরে থাকা মিনিস্টার গ্রুপ ঢাকার খেলোয়াড়দের অন্তরে। ৯.১ ওভারে দলয়ি শতরান পূর্ণ হয়। ফ্লেচার ৬৫, মেহেদী ৩০ রান করে অবদান রাখেন। এরপর আরও পেছনে ফিরে থাকাতে হয়নি। ফ্লেভার সেঞ্চুরি তুলে নেন ৫৯ বলে। তার ইনিংসে ছিল ৬টি করে চার ও ছয়। মেহেদি হাসান হাফ সেঞ্চুরি করেন ৩১ বলে। তিনি ৪৯ বলে ৭৪ রান করে মঈন আলীর বলে ডুবে প্লেসির হাতে ধরা পড়েন। তার ইনিংসে ছিল ৪টি ছয় ও ৬টি চার। ম্যাচ সেরা হয়েছেন ফ্লেভার।
এমপি/এমএমএ/
