চাকরি স্থায়ীকরণের দাবি আদায়ে আগামী ২৪ মার্চ থেকে একযোগে রেলপথ অবরোধ এবং অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন বাংলাদেশ রেলওয়ের গেটকিপার ও গেটম্যানরা। ঈদযাত্রা শুরুর দিন থেকেই তারা এই কর্মসূচি শুরু করবেন।
বুধবার (১৯ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টায় রেলভবনের সামনে অনুষ্ঠিত এক বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধনে এই হুমকি দেওয়া হয়। সমাবেশে রেলওয়ের কর্মচারীরা রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেন।
ঘরমুখো মানুষ ২৪ মার্চ থেকে রেলপথে ঈদযাত্রা শুরু করবেন। চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে সেদিন থেকেই কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনরত গেটকিপার/গেটম্যানরা।
এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত রেলভবনের সামনে বিক্ষোভ করছিলেন তারা। বিক্ষোভকারীরা জানান, গেটকিপার/গেটম্যানরা দাবি আদায়ে গত বছরের ১৮ আগস্ট রেলভবনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। ওইদিন তৎকালীন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিবের সভাপতিত্বে উচ্চ পর্যায়ের এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে রেলসচিব, রেলওয়ে মহাপরিচালক, পাবলিক সার্ভিস কমিশনের প্রতিনিধি, প্রশাসনের সব অ্যাডমিন ক্যাডার, বাংলাদেশ রেলওয়ের পূর্ব/পশ্চিম অঞ্চলের প্রকল্প পরিচালক, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রতিনিধি, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধি, বৈষম্যবিরোধী বাংলাদেশ রেলওয়ে পূর্ব এবং পশ্চিম অঞ্চলের প্রকল্পের দেড় হাজার গেটকিপার/গেটম্যানের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিসহ শ্লিষ্ট প্রশাসনিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সেদিন রেলওয়ের মহাপরিচালক সিদ্ধান্ত দেন, বৈষম্যবিরোধী বাংলাদেশ রেলওয়ে পূর্ব এবং পশ্চিম অঞ্চলের প্রকল্পের এক হাজার ৫০৫ জন গেটকিপার ও গেটম্যানের চাকরি স্থায়ীকরণের দাবি যুক্তিসঙ্গত।
বৈঠকে গেটকিপার/গেটম্যানের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিরা জানান, তারা যেহেতু দীর্ঘ আট বছর রেলওয়েতে চাকরি করে অভিজ্ঞ, এ বিষয়ে পাবলিক সার্ভিস কমিশন এক সপ্তাহের মধ্যে প্রয়োজনীয় আদেশ জারি করবে।
মানববন্ধনে তারা বলেন, ‘গত বছরের ১ নভেম্বর আমাদের অফার লেটার হাতে দেয়ার কথা থাকলেও এখনও দেয়া হয়নি। বৈঠকে আমাদের বলা হয়, স্থায়ী নিয়োগ প্রক্রিয়ার মতো ৪০ হাজার পরীক্ষার্থীর মধ্য থেকে পরীক্ষায় পাস করে এক হাজার ৮৮৯ জন প্রকল্পের গেটকিপার/গেটম্যান পদে যোগদান করেন। বর্তমানে কর্মরত এক হাজার ৫০৫ জন। আপনারা আট বছরের অভিজ্ঞ হয়ে উঠেছেন। দ্রুত চাকরি স্থায়ীকরণের আশ্বাসও দেন।’
গেটকিপার/গেটম্যানরা বলেন, ‘বারবার এ রকম আশ্বাস ও প্রতিশ্রুতি দেয়া হলেও আমাদের চাকরি স্থায়ীকরণ ও বেতন সমস্যার সমাধান হয়নি। আমরা এই অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে নতুন কোনো দাবি তুলছি না। ১৬০ বছরেরও অধিক সময় ধরে রেলের প্রচলিত বিধি মোতাবেক যে কোনো কর্মচারী তিন বছরের অধিক নিরবচ্ছিন্ন চাকরি করলে তাদের চাকরি সরাসরি স্থায়ীকরণ করা যায়। এজন্য পাবলিক সার্ভিস কমিশনের অনুমতি অনুযায়ী প্রকল্পের গেটকিপার/গেটম্যানদের চাকরি রাজস্ব করতে আইনি কোনো জটিলতা নেই।’