খুলনাকে হারিয়ে ঢাকার প্রতিশোধ
শেষ আটে যেতে হলে জয়ের বিকল্প নেই মিনিস্টার গ্রুপ ঢাকার। মোট ৮ ম্যাচে পয়েন্ট ৭। ঢাকার চেয়ে একটু সুবিধাজনক অবস্থানে আছে খুলনা টাইগার্স। তাদের ৭ ম্যাচে পয়েন্ট ৮।
তাইতো ঢাকা সেরা একাদশে আনে ব্যাপক পরিবর্তন। একটি দুইটি নয়, গুনে গুনে চারটি। একাদশে নেই মাশরাফি, নাঈম শেখ, এবাদত ও মোহাম্মদ শাহজাদ। তাদের জায়গায় সুযোগ দেওয়া হয় রুবেল হোসেন, শামসুর রহমান শুভ, জহুরুল ইসলাম অমি ও আজমত উল্লাহ ওমরজাইকে। সেখানে খুলনা পরিবর্তন আনে একটি। কামরুল ইসলাম রাব্বির পরিবর্তে রুহেল মিয়াকে সুযোগ দেওয়া হয়। শেষ পর্যন্ত চার পরিবর্তনের সুবিধা নিয়ে ঢাকা ম্যাচ নিজেদের করে নিয়েছে। শেষ ওভারের প্রথম দুই বলে শুভাগত হোমের পরপর দুই ছক্কায় ম্যাচ জিতে ৫ উইকেটে। খুলনা টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ৮ উইকেটে করে মাত্র ১২৯ রান। ঢাকা ৪ বল হাতে রেখে করে ৫ উইকেটে ১৩১ রান। দুই দলের প্রথম মোকাবেলাতে খুলনা জয়ী হয়েছিল ৫ উইকেটে।
জয়ের লক্ষ্যে ঢাকা যে চারটি পরিবর্তন আনে, তারা সবাই সুযোগ পেয়ে তার প্রতিদান দিয়েছেন। রুবেল হোসেন ৪ ওভারে ২৬ রান নেন ১ উইকেট। শামসুর রহমান শুভ ১৪ বলে ২ ছক্কা ও ১ চারে করেন ২৫ রান। আজমত উল্লাহ ওমরজাই বল হাতে ৪ ওভারে ২৫ রানে ২ উইকেট নেওয়ার পর ব্যাট করেন ৭ বলে ১০ রান। জহুরুল ইসলাম অমি করেন ২টি করে চার ও ছক্কা মেরে ৩৫ বলে করেন ৩০ রান। খুলনার হয়ে সুযোগ পাওয়া রুহেলও মিয়া বল হাতে ৪ ওভারে ২১ রানে ১ উইকেট নেওয়ার পাশাপাশি ব্যাট হতে করেন ৯ বলে করেন অপরাজিত ৮ রান। ৯ ম্যাচে ৯ পয়েন্ট নিয়ে ঢাকা উঠে এসেছে পয়েন্ট টেবিলের তিনে। ৮ ম্যাচে ৮ পয়েন্ট নিয়ে খুলনা নেমে গেছে চারে।
টস জিতে খুলনা যখন ব্যাটিংয়ের সিন্ধান্ত নেয়, তখন ঢাকার জন্য জরুরি হয়ে পড়েছিল খুলনাকে অল্প রানে আটকে রাখা। ঢাকা-চট্টগ্রামের পর সিলেটেও প্রথম ম্যাচে প্রথম দুইদিন বড় সংগ্রহ হয়নি। এই ম্যাচেও তাই হয়েছে। এদিন আরও কম সংগ্রহ ছিল। খুলনাকে ৮ উইকেটে ১২৯ রানে আটকে রেখেই ম্যাচ নিজেদের কব্জায় নিয়েছিল ঢাকা। খুলনা মাত্র ১২ রানে ৩.৩ ওভারে হারায় ৪ উইকেট। আরাফাত সানি জোড়া আঘাত হেনে পরপর দুই বল ফিরিয়ে দেন আন্দ্রে ফ্লেচার ও ইয়াসির আলীকে।
মুশফিকুর রহিম (১২) হাল ধরে মেহেদী হাসানকে নিয়ে এগুনোর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তাকেও দলীয় ৩২ রানে ফিরিয়ে দেন আজমতউল্লাহ ওমরজাই। তখন ওভার শেষ হয়েছে মাত্র ৭টি। এরপর খুলনার ইনিংন বড় হওয়ার কোনো সম্ভাবনাই থাকেনি। মেহেদী হাসানও (১৭) ফিরে যান দলীয় ৫৮ রানে। তারপরও সেখান থেকে দলের রান ১২৯ পর্যন্ত যাওয়ার পেছনে ছিল সিকান্দার রাজার ৫০ বলে ৪ ছক্কা ও ৫ চারে ৬৪ রানের কারণে। তিনি আউট হন ইনিংসের শেষ বলে ফজল হক ফারুকীর বলে। আরাফাত সানি ১৫ ও আজমতউল্লাহ ওমরজাই ২৫ রানে নেন ২টি করে উইকেট।
ছোট টার্গেটের পেছনে ছুটে ঢাকার শুরুটা ভালো ছিল না। দলীয় ১২ রানেই তারা দুই ওপেনার তামিম ইকবাল (৬) ও ইমরানউজ্জামানকে (৬)। এরপর তারা সাবধানী হয়ে যায়। জহুরুল ও মাহমুদউল্লাহ দেখে-শুনে খেলতে থাকেন। ফলে দ্রুত উইকেট পড়া বন্ধ হয়। রান সংগ্রহ হতে থাকে কিছুটা ধীরগতিতে। জুটিতে ৫৭ রান আসে ৯.১ ওভারে। জহুরুল ৩৫ বলে ৩০ রান করে রুহেল মিয়ার শিকার হওয়ার পর মাহমুদউল্লাহ ও শামসুর রহমান শুভ আবার ৩২ রানের জুটি গড়েন। শামসুর রহমানের মারমুখি ব্যাটিংয়ের কারণে এই জুটিতে ৩২ রানে আসে ৩.৩ ওভারে।
মাহমুদউল্লাহ ১টি করে চার ও ছয় মেরে ৩৬ বলে ৩৪ রান করে থিসারা পেরেরা বলে ইয়াসীর আলীর হাতে ধার পড়ে বিদায় নেন। দলীয় ৫ রান যোগ হওয়ার শামসুর রহমান শুভও আউট হয়ে যান ১৪ বলে ২টি ছক্কা ও ১ টি চারে ২৫ রান করে। শুভ আউট হওয়ার সময় ঢাকার জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ১৭ বলে ২৪ রানের । সেই টার্গেট আরও সহজ হয়ে যায় থিসারা পেরেরা করা শষ ওভারের প্রথম দুই বলেই শুভাগত হোম ছক্কা মারলে। শুভাগত ৯ বলে ১৮ ও আজমতউল্লাহ ৭ বলে ১০ রান করে অপরাজিত থাকেন। থিসারা পেরেরা ৩৯ রানে নেন ২ উইকেট।
এমপি/এমএমএ/