হাই স্কোরিং ম্যাচে বরিশালের কাছে সিলেটের হার

এবারের বিপিএলে আরও একটি হাই স্কোরিং ম্যাচ দেখতে পেল দর্শকরা। যেখানে চলতি বিপিএলে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থাকা শক্তিশালী ফরচুন বরিশালের কাছে হার মানে পয়েন্ট টেবিলের তলানিতে থাকা সিলেট সানরাইজার্স।
মঙ্গলবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে বরিশাল ৪ উইকেট হারিয়ে ১৯৯ রান সংগ্রহ করে। জবাবে সিলেট সানরাইজার্স ৬ উইকেটে ১৮৭ রান করতে সমর্থ্য হয়।
এই ম্যাচ জিতে আগেই প্লে অফ রাউন্ড নিশ্চিত করা বরিশাল নিজেদের শীর্ষ স্থান আরও পোক্ত করেছে। ৯ ম্যাচে তাদের পয়েন্ট ১৩। অপরদিকে, আগেই প্রথম দল হিসেবে আসর থেকে বাদ পড়া সিলেট নিজেদের অবস্থানের কোনো পরিবর্তন আনতে পারেনি। ৮ ম্যাচে তাদের পয়েন্ট মাত্র ৩। দুই দলের প্রথম ম্যাচ বৃষ্টির কারণে পরিত্যক্ত হয়।
টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ক্রিস গেইল ও মুনিম শাহরিয়ারের উদ্বোধনী জুটিতে পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে রান ৬৭ পায় বরিশাল। উদ্বোধনী জুটিতে রান আসে ৭২। এখন যদি কাউকে ধাঁধাঁ দেওয়া হয় কার রান সিংহভাগ বেশি? যে কেউ চোখ বুঝেই বলে দেবেন গেইলের। এটাই স্বাভাবিক। গেইল যখন টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ব্যাট করেন, তখন তার তাণ্ডবের দিন এ রকম অনেক পার্টনারই ছায়া হয়ে পড়েন। দেখতে থাকেন গেইলের চার-ছক্কার উৎসব। কিন্তু আজ সিলেট স্টেডিয়ামে ঘটেছে উল্টোটা। মুনিম শাহরিয়ার তাণ্ডবে গেইলই দর্শক হয়েছিলেন। পাওয়ার প্লেতে সংগৃহীত ৬৭ রানের মধ্যে গেইলের অবদান ছিল মাত্র ১১ বলে ১৪। জুটি ভাঙার সময় মুনিম শাহরিয়ারের ৫১, গেইলের ১৫। গেইল পরে নিজেও মুনিম শাহরিয়ারের মতোই ৫১ রান করে আউট হয়েছেন। তবে সেখানে গেইলের স্বভাব-সুলভ ব্যাটিং ছিল না। তিনি ৪৪ বলে ফিফটি করেন। যেখানে মুনিম ফিফট করেন মাত্র ২৬ বলে। মুনিমের ২৮ বলে ৫১ রানের ইনিংসে ছিল ৩ ছক্কা ও ৬ চার। সেখানে গেইল ৫১ রান করতে বল খেলেন ৪৫টি। ২ ছক্কার সঙ্গে ছিল ৪টি চার। দু’জনের অবশ্য এক জায়গায় মিল ছিল। সেটি হলো চলতি আসরে দু’জনেরই এটি প্রথম ফিফটি।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে আমন্ত্রিত হয়ে বরিশাল এভাবেই সূচনা করে। দুই ওপেনারের ব্যাট থেকে যদি অর্ধশত রানের ইনিংস আসে, সেখানে দলীয় সংগ্রহ পেটমোটা হতে বাধ্য। হয়েছেও তাই। ৪ উইকেটে ১৯৯। এবারের আসরের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। আগের সর্বোচ্চ ছিল সিলেটের বিপক্ষে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের ৫ উইকেটে ২০২।
উদ্বোধনী জুটিতে ৬.৪ ওভারে ৭২ রান আসার পর রানের গতি আরও বাড়ানোর জন্য হার্ড হিটিং করতে পাঠানো হয়েছিল নুরুল হাসান সোহানকে। কিন্তু তিনি না পারলেও সাকিব ও ডোয়াইন ব্রাভোর ঝড়ে বরিশাল কাঙ্ক্ষিত টার্গেট পায়। সাকিব মাত্র ১৯ বলে ৪ ছক্কা ও ২ চারে ৩৮ রান করে আউট হলেও ব্রাভোকে আউট করা সম্ভব হয়নি। তিনি মাত্র ১৩ বলে ৪ ছক্কা ও ১ চারে ৩৪ রান করে অপরাজিত থাকেন। শেষ ৫ ওভারে রান আসে ৬১। শেষ ৩ বলে ব্রাভো সিরাজকে ৬, ৪ ও ৬ মারেন। এই ওভারে রান আসে ১৯।
বড় সংগ্রহের পেছনে ছুটে কলিন ইনগ্রামের ব্যাটে ভর করে সিলেট উড়ন্ত সূচনা করে। একপ্রান্তে উইকেট পড়তে থাকে, অপরপ্রান্তে ইনগ্রামের ব্যাটে সিলেট ম্যাচে টিকে থাকার পাশাপাশি বরিশালের টেনশন বাড়াতে থাকে। ২৪ বলে হাফ সেঞ্চুরি করে তিনি ছুটেন সেঞ্চুরির দিকে। কিন্তু ৯০ রানে গিয়ে তিনি থেমে যান। নাজমুল হোসেন শান্তর বলে ব্রাভোর হাতে ধরা পড়েন। তার ৪৯ বলের ইনিংসে ছিল ১ ছক্কা ও ১৬ চার। তার আউট হওয়াতে হাফ ছেড়ে বাঁচে বরিশাল। পরে মোসাদ্দেকের ২১ বলে ৩৪ ও আলাউদ্দিন বাবুর ১২ বলে অপরাজিত ২২ রান শেষ ওভার পর্যন্ত ম্যাচের আকর্ষণ বজায় ছিল। শেষ ওভারে সিলেটের প্রয়োজন ছিল ২৪ রানের। তারা সংগ্রহ করে ১১ রান। সাকিব, ব্রাভো ও নাজমুল শান্ত ২টি করে উইকেট নেন। টানা চতুর্থবারের মতো ম্যাচ সেরা হন সাকিব।
এমপি/আরএ
