কুমিল্লার হাত ধরে রানের দেখা পেলো প্রথম ম্যাচ
অবশেষে সপ্তম দিন এসে বঙ্গবন্ধু বিপিএলে প্রথম ম্যাচে রান হয়েছে। আর এই রান করার করিগর কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের ব্যাটসম্যানরা। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে তারা ৩ উইকেটে করে ১৮৩ রান। জবাব দিতে নেমে স্বাগতিক চট্টগ্রাম ১৭.৩ ওভারে মাত্র ১৩১ রানে অলআউট হয়ে হার মানে ৫২ রানে। তিন ম্যাচের সব কয়টিতে জিতে কুমিল্লা ৬ পয়েন্ট নিয়ে আছে সবার উপরে। চট্টগ্রামের এটি ছিল ৬ ম্যাচে তৃতীয় হার। ৬ পয়েন্ট নিয়ে তারা আছে দ্বিতীয় স্থানে। ম্যাচ সেরা হয়েছেন ডু প্লেসি।
চলতি আসরে একমাত্র অপরাজিত দল কুমিল্লা মাঠে নেমেছিল আরও শক্তিশালী হয়ে। দারুন ফর্মে থাকা লিটন দাস যোগ দেন দলে। নিজে করেন ৩৪ বলে ৪৭ রান। তাতে ঢেউ তুলেন ডু প্লেসি ও ক্যামেরন ডেলপোর্ট। ডু প্লেসি ৫৫ বলে অপরাজিত ৮৩ ও ডেলপোর্ট ২৩ বলে অপরাজিত ৫১ রান করেন। কুমিল্লার ইনিংসে এই তিনজনই রান করেন ১৮৩ রানের মাঝে ১৮১ রান। ক্রিজে আসা অপর দুই ব্যাটসম্যান ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয় ও ইমরুল কায়েস ১ রান করে করেন। অতিরিক্ত থেকে কোনো রান আসেনি।
কুমিল্লা বড় ইনিংস গড়লেও শুরুতেই কিন্তু উইকেট হারিয়েছিল। মাহমুদুল হাসান জয় (১) দলীয় ৪ রানে ফিরে যান নাসুমের বলে সাব্বিরের হাতে ধরা পড়ে। এই ভাঙ্গন কুমিল্লার জন্য শাপেবর হয়ে উঠে। লিটন দাসকে প্রথমবারের মতো পেয়ে ডু প্লেসিও জ্বলে উঠেন। জুটিতে ৮০ রান আসে ৯.১ওভারে। লিটন ১ ছক্কা ৫ চারে ৩৪ বলে ৪৭ রান করে জয়ের মতোই আউট হন নাসুমের বলে সাব্বিরের হাতে ধরা পড়ে।
দলপতি ইমরুল কায়েস (১) দ্রুত বিদায় নেয়াটা আবারো কুমিল্লার জন্য শাপেবর হয়ে আসে। এবার ডু ব্লেসি ডেলপোর্টকে নিয়ে জুটি গড়ে দলের সংগ্রহকে আকাশ ছুঁয়া করে ফেলেন। জুটিতে ৮.১ ওভার খেলার সুযোগ পেয়ে তারা অবিচ্ছিন্ন থেকে যোগ করেন ৯৭ রান। ডু প্লেসি ৪০ বলে ফিফটি করলেও ডেলপোর্ট মাত্র ২২ বলে করেন ফিফটি। তিনি ফিফটি তুলে নেন শেষ ওভারে শরিফুলের ওভারে ৪, ৪, ৪, ৬, ৪, ১ করে ২৩ রান নিয়ে। শেষ ৫ ওভারে রান যথাক্রমে ১৬, ১৭, ১৮, ১৯ ও ২৩ রান করে মোট ৭৬। ডু প্লেসি ৩ ছক্কা ও ৮ চারে ৫৫ বলে ৮৩ ও ডেলপোর্ট ২৩ বলে ৩ ছক্কা ও ৪ চারে ৫১ রান করে অপরাজিত থাকেন। চট্টগ্রামের নাসুম ২৩ রানে ২টি ও বেনি হাওয়েল ৩১ রানে ১ উইকেট।
চট্টগ্রামের ব্যাটিং লাইন যে রকম শক্তিশালী সে হিসেবে কুমিল্লার ১৮৩ রানও নিরাপদ নয়। কারন এই আসরে এর চেয়ে বড় দুইটি ইনিংস আছে চট্টগ্রামের। কিন্তু এদিন শুরুতেই হোঁচট খায় তারা। কেনার লুইস (৪) আবারো ব্যর্থ হন নাহিদুলের বলে ডু প্লেসির হাতে ধরা পড়ে। আফিফও (৪) ফিরে যান মোস্তাফিজের শিকার হয়ে করিম জানাতের হাতে ধরা পড়ে। দলের রান তখন ২ উইকেটে ৯। সাব্বির রহমানও (৫) ফিরে যান নাহিদুলের শিকার হয়ে। মেহেদী হাসান মিরাজও টিকতে পারেননি। শুরু থেকেই রান বাড়ানোর প্রবনতা ছিল। একটি চার-ছয় মেরে ইংগিতও দিয়েছিলেন ঝড় তুলার। কিন্তু এই শেষ নাহিদুলের টানা ৪ ওভারের স্পেলের তৃতীয় শিকার হন লিটনের হাতে স্ট্যাম্পিং হয়ে ১০ রানে। দলের রান ৪ উইকেট ৫১। দলনেতা নাঈম ইসলামও (৮) ফিরে যান অল্পতেই।
একদিকে উইকেট পড়ছে, আর অপরপ্রান্তে ইনিংসের উদ্বোধন করতে আসা দুর্দান্ত ফর্মে থাকা জ্যাক উইল চেয়ে শুধু দেখতে থাকেননি, দলের রান বাড়াতে থাকেন। তবে নিজের স্বভাবজাত আক্রমণাত্বক ঢংয়ে আনেন পরিবর্তন। এটা তিনি করতে বাধ্য হয়েছিলেন লাগাতর উইকেট পতনের কারণে। কিন্তু অপরপ্রান্তের উইকেট পতন রোধ করতে পারেননি। দলের আরেক সফল ব্যাটসন্যান বেনি হাওয়েল ফিরে যান ২ রানে ষষ্ঠ ব্যাটসম্যান হিসাবে।
আগের ম্যাচ বল হাতে হ্যাটট্টিক করা পেসার মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী কিছুটা সময় দিয়ে দুই অংকের ঘরে গিয়ে আউট হন ১৩ রানে। সতীর্থদের বিদায় আর কতক্ষণ দেখবেন।৩৭ বলে নিজের হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করে পরে আউট হন ৬৯ রানে তানভীরের বলে। তার ৪২ বলের ইনিংসে ছিল ৩টি ছয় ৭টি চারের মার। এবারের আসরে এটি ছিল তারা টানা ফিফটি। তার আগের ৫টি ইনিংস ছিল
১৬, ৪১, ১৭, ২৯, ৫২।
অষ্টম ব্যাটসম্যান হিসেবে উইল জ্যাকস আউট পর ১৭.৩ ওভারে চট্টগ্রামের ইনিংস শেষ হয়ে যায় ১৩১ রানে। কুমিল্লার হয়ে নাহিদুলের ৩টি, মোস্তাফিজ, শহীদুল ও তানভীর ২টি করে উইকেট নেন।
এমপি/এএস