আট উইকেটের দুরন্ত জয়ে সিরিজ সমতায় ফিরলো বাংলাদেশ
ছবি: সংগৃহীত
সিরিজ বাঁচানোর ম্যাচে দাপুটে জয় পেল বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। ১৬৬ রানের টার্গেট তাড়ায় ১১ বল হাতে রেখেই ৮ উইকেটের দাপুটে জয় পেয়েছে টাইগাররা। এই জয়ে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে ১-১ সমতায় ফিরল স্বাগতিকরা।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম ডাচ বাংলা ব্যাংক বাংলাদেশ বনাম শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট সিরিজের দ্বিতীয়টিতে টসে জিতে সফরকারীদের ব্যাটে পাঠান বাংলাদেশ অধিনায়ক শান্ত। নির্ধারিত ওভার শেষে ৫ উইকেটে ১৬৫ রানের সংগ্রহ গড়েছে লঙ্কানরা। জবাবে নেমে ১১ বল ও ৮ উইকেট হাতে জয়ের বন্দরে নোঙর করে টিম টাইগার্স।
রানতাড়ায় আত্মবিশ্বাসী শুরু করেছিলেন লিটন দাস ও সৌম্য সরকার। দুরন্ত গতিতেই রান তুলেছেন তারা। তবে এরমধ্যে বিতর্কেরও সৃষ্টি হয়েছিল মাঠে। চতুর্থ ওভারের প্রথম বলে মাদুশঙ্কার শর্ট লেংথের পুল করেন সৌম্য। বটম-এজড হয়েছিলেন ভেবে আউট দেন ফিল্ড আম্পায়ার। রিভিউ নেন টাইগার ওপেনার। আল্ট্রা-এজে দেখা স্পাইকও দেখা যায়। তবে টিভি আম্পায়ার মাসুদুর রহমান নট আউট ঘোষণা করেন। তার মতে স্পাইক দেখানোর সময় বল ও ব্যাটের মধ্যে ‘গ্যাপ’ দেখেছেন তিনি। আউট ভেবে প্রায় বাউন্ডারির কাছে পৌঁছে যাওয়া সৌম্য ফিরে এসেছেন আবার।
এমন সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট হতে পারেনি শ্রীলঙ্কা। আম্পায়ার শরফুদ্দৌলাকে ঘিরে ধরেন তারা। ওদিকে কোচ ক্রিস সিলভারউড যান চতুর্থ আম্পায়ার তানভীর আহমেদের কাছেও। শেষ পর্যন্ত শুরু হয়েছে খেলা। সপ্তম ওভারে লঙ্কানদের প্রথম ব্রেক থ্রু এনে দেন মাথিশা পাথিরানা। ভাঙেন ৩৫ বলে ৬৮ রানের জুটি। শর্ট বলে পুল করতে গিয়ে ম্ডিউইকেটে ক্যাচ দেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজের হাতে। পাঁচটি চারে ২২ বলে ২৬ রান করেন এই ওপেনার।
নবম ওভারে দারুন শুরু করা লিটন উইকেট ছুড়ে আসেন। পাথিরানার শর্ট বলে মিডউইকেটে ক্যাচ তুলে দিয়ে ধরা পড়েন চারিথ আশালাঙ্কার হাতে। পাঁচটি চার ও এক ছক্কায় ২৪ বলে করেন ৩৬ রান। পরে শান্ত ও হৃদয়ের অবিচ্ছিন্ন ৫৫ বলে ৮৭ রানের দুর্দান্ত জুটিতে জয়ের বন্দরে নোঙর করে বাংলাদেশ। ৩৮ বলে ৫৩ রানে শান্ত এবং ২৫ বলে ৩২ রানে অপরাজিত থাকেন হৃদয়। লঙ্কানদের হয়ে দুটি উইকেটই নেন মাথিশা পাথিরানা।
এর আগে লঙ্কানদের ব্যাটে পাঠিয়ে ইনিংসের প্রথম ওভারে মেইডেন নেন শরীফুল। দ্বিতীয় ওভারে অভিস্কা ফের্নান্দোকে ফেরান তাসকিন। তৃতীয় ওভারে শরীফুল দেন ৩ রান। তিন ওভার পর্যন্ত লঙ্কানরা দেখেশুনে খেললেও পরে কুশল মেন্ডিস ও কামিন্দু মেন্ডিস ঝড় তোলেন।
চতুর্থ ওভারে ১৭ রান খরচ করেন তাসকিন। ওভারটিতে দুটি ছক্কা ও একটি চার আদায় করেন কামিন্দু মেন্ডিস। ৫ম ওভারে শেখ মেহেদী ৯ রান খরচ করেন। ষষ্ঠ ওভারে ১৫ রান দেন মোস্তাফিজ। দ্বিতীয় শিকারের জন্য টাইগারদের অপেক্ষা করতে হয়েছিল নবম ওভার পর্যন্ত। ৬৬ রানের জুটিতে ব্রেক থ্রু এনে দেন সৌম্য সরকার। লিটনের ক্যাচ বানিয়ে কুশলকে ফেরান। তিনটি ছক্কা ও দুটি চারে ২২ বলে ৩৬ রান করেন মেন্ডিস।
দশম ওভারে নিজের দ্বিতীয় ওভারে আসেন সৌম্য। ওভারটিতেও আরও একটি সাফল্য পায় বাংলাদেশ। কামিন্দু মেন্ডিস ফিরে যান রান আউট হয়ে। তিনটি চার ও দুটি ছক্কায় ২৭ বলে ৩৭ রান করেন এই ব্যাটার। ১২.২ ওভারে চতুর্থ সাফল্য এনে দেন মোস্তাফিজুর রহমান। ফিরতি ক্যাচে ফেরান সাদিরা সামারাবিক্রমাকে। ১১ বলে ৭ রান করেন সাদিরা।
১৪.৫ ওভারে ১১২ রানে চারিথ আশালাঙ্কাকে ফেরান শেখ মেহেদী। একটি চার ও তিন ছক্কায় ১৪ বলে ২৮ রান করেন লঙ্কানদের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক। পরে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ ও শানাকা ইনিংস শেষ করেন। ১৮ বলে ২০ রান করেন শানাকা। চারটি চারে ২১ বলে ৩২ রান করেন ম্যাথুজ।
টাইগারদের হয়ে তাসকিন, শেখ মেহেদী, মোস্তাফিজ ও সৌম্য সরকার একটি করে উইকেট নেন।