‘তিন সিনিয়রের’ ব্যাটে ২৪৫ রানের পুঁজি বাংলাদেশের
ছবি সংগৃহিত
হিমালয়ঘেরা ধর্মশালায় এক জয় ও এক হারের মিশ্র অনুভূতির সাক্ষী। ভারতের দক্ষিণের শহর চেন্নাইয়ের সাগরপাড়ের এমএ চিদাম্বরমে আজ ভালো কিছুর স্বপ্নই বুনছিল বাংলাদেশ। তবে দুর্দান্ত ছন্দে থাকা নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা হয় দুঃস্বপ্নের মতোই। কিউই পেসারদের গতি আর বাউন্সে যেন অথৈ সাগরে হাবুডুবু খাচ্ছিল বাংলাদেশি ব্যাটাররা। স্কোরবোর্ডে ৫৬ রান তুলতেই টপ অর্ডারের চার ব্যাটারকে হারিয়ে ফেলে বাংলাদেশ। শঙ্কা ছিল আরও একটি ব্যাটিংয়ে বিবর্ণ দিন দেখার।
কথায় আছে, অভিজ্ঞতা বাজারে কিনতে পাওয়া যায় না। বাংলাদেশের ব্যাটিং ইনিংসে আজ সেটা পরিষ্কারভাবেই প্রমাণ হলো। কিউইদের বিপক্ষে সম্মানজনক পুঁজি পেলো বাংলাদেশ তিন সিনিয়র সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম আর মাহমুদউল্লাহর ব্যাটে চড়ে।
চেন্নাইয়ে টস জিতে প্রথমে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় নিউজিল্যান্ড। বরাবরের মতো শুরুতেই ধাক্কা। ট্রেন্ট বোল্টের বলে ফাইন লেগে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন লিটন। আগের ম্যাচে হাফসেঞ্চুরির পর এবার গোল্ডেন ডাকে (১ বলে ০) সাজঘরে টাইগার ওপেনার।
তরুণ তানজিদ হাসান তামিমও বড় মঞ্চে নিজেকে সেভাবে মেলে ধরতে পারছেন না। আজ সেট হয়ে গিয়েছিলেন, কিন্তু ইনিংস বড় করতে পারেননি। লুকি ফার্গুসনের বলে স্কয়ার লেগে সহজ ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন তামিম (১৭ বলে ৪ বাউন্ডারিতে ১৬)।
মেহেদী হাসান মিরাজ তিন নম্বরে নেমে বেশ রানের গতি সচল করেছিলেন। কিন্তু ব্যক্তিগত ৩০ রানে তিনিও ভুল করে বসেন। ফার্গুসনকে পুল করতে গিয়ে ফাইন লেগে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন এই অলরাউন্ডার। ৪৬ বলের ইনিংসে তিনি হাঁকান ৪টি বাউন্ডারি।
বাংলাদেশ দলের বিপদটা বেশি বড় হয় নাজমুল হোসেন শান্ত ফিরলে। ৫৬ রানে ৪ উইকেট খুইয়ে ফেলে দলটি। গ্লেন ফিলিপসের করা প্রথম বলেই কনওয়ের হাতে ক্যাচ দেন ৮ বলে ৭ রান করা শান্ত। সেখান থেকে একটু একটু করে ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। সেই পুরোনো সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিমের হাত ধরেই।
সাকিব শুরুতে কিছুটা অস্বস্তিতেই ছিলেন, সেটি আরও বাড়ে ক্র্যাম্প হলে। এরপর থেকে তিনি ব্যাট চালিয়ে দ্রুত কিছু রান করার চেষ্টায় ছিলেন। কিন্তু বেশিক্ষণ চালিয়ে যেতে পারেননি। ফার্গুসনের বাউন্সার পুল করতে যান সাকিব, কিন্তু ক্যাচ উঠে যায়। অনেকটুকু দৌড়ে ক্যাচ নেন লাথাম। ৯৬ রানের জুটিটি ভাঙে সাকিব ৩ চার ও ২ ছক্কায় ৫১ বলে ৪০ রান করে ফিরলে।
তার ফেরার পরও মুশফিকুর রহিম করছিলেন দারুণ। কিন্তু ম্যাট হেনরির নিচু হওয়া এক বলে বোল্ড হয়ে যান তিনি, বলতে গেলে কিছুই করার ছিল না অভিজ্ঞ ব্যাটারের। ৬ চার ও ২ ছক্কার ইনিংসে ৭৫ বলে ৬৬ রান করে আউট হতে হয় মুশফিকুর রহিমকে।
ব্যাটিং অর্ডারে রদবদলের শিকার তাওহীদ হৃদয়ও সাতে নেমে ভালো করতে পারেননি। ২৫ বলে ১৩ রান করে এই ব্যাটার বোল্ডের স্লোয়ারে আগে ড্রাইভ করে সহজ ক্যাচ দেন স্যান্টনারের হাতে। শেষদিকে ঝড় তোলার প্রত্যাশা নিয়েই আটে নামানো হয় মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে। কিন্তু দীর্ঘদিন মাঠের বাইরে থাকা এই অভিজ্ঞ ব্যাটার ঠিকমতো ব্যাটে-বলে করতে পারছিলেন না।
তবে শেষ পর্যন্ত মাহমুদউল্লাহর ৪৯ বলে অপরাজিত ৪১ রানের ইনিংসেই বলার মতো সংগ্রহ দাঁড় করায় বাংলাদেশ। ১৯ বলে ১৭ রান করে ভূমিকা রাখেন তাসকিন আহমেদও। ৫০ ওভার শেষে ৯ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশের সংগ্রহ ২৪৫ রান।