গাজীকে হারিয়ে সুপার লিগের লড়াই জমিয়ে তুলল ব্রাদার্স
৩০৫ রান করেও শেষ রক্ষা হয়নি গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের। তাদের সেই রান টপকে গেছে রেলিগেশন লিগ খেলার শঙ্কায় থাকা ব্রাদার্স ৫ উইকেট ও ১ ওভার হাতে রেখে। আজ (১৪ এপ্রিল) মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে এই ফলাফলে গাজী গ্রুপের সুপার লিগ খেলা যেমন শঙ্কায় পড়ে গেছে, তেমনি রেলিগেশন লিগ এড়িয়ে তারা এখন সুপার লিগে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে ব্রাদার্সের।
১০ ম্যাচে গাজী গ্রুপের পয়েন্ট ৯। পয়েন্ট টেবিলে তাদের অবস্থান ছয়ে। সমান ম্যাচে ব্রাদার্সের পয়েন্ট ৮। পয়েন্ট টেবিলে তাদের অবস্থান আটে। ৮ পয়েন্ট নিয়ে নেট রান রেটে সঙ্গে থাকা সিটি ক্লাবেরও সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে সুপার লিগে যাওয়ার। শেষ রাউন্ডে নিষ্পত্তি হবে। এই তিন দলের সঙ্গে আছে রূপগঞ্জ টাইগার্সও। এই চার দলের মধ্যে কোন দল যাবে সুপার লিগে।
টস হেরে ব্যাট করার আমন্ত্রণ পেয়ে শতভাগ ফায়দা নেয় গাজী গ্রুপের ব্যাটসম্যানরা। মেহেদি মারুফের (১০০) সেঞ্চুরিতে তারা রানের পাহাড় গড়ে করে ৭ উইকেটে ৩০৫ রান। মেহেদি মারুফের সঙ্গে রান সংগ্রহে ভূমিকা পালন করেন ফরহাদ হোসেন ৭০, মাহমুদুল হাসান ৪৯ রানের ইনিংস খেলে। এ ছাড়া এনামুল হক ৩৯ ও হাবিবুর রহমান ২৯ রান করেন।
গাজীর বড় সংগ্রহের মাঝেও কিন্তু ধস ছিল। হাবিবুর ও মারুফের উদ্বোধনী জুটিতে ৬৭ রান আসার পর হাবিবুর আউট হয়ে যান ২৯ রান করে আরাফাত সানি জুনিয়রের বলে। এরপর মারুফ ও ফরহাদ দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ১১৪ রান যোগ করেন। ২১.৩ ওভারে মেহেদি মারুফ ১০৪ বলে সেঞ্চুরি করার পর রিটায়ার্ড হার্ট হন পরের বল খেলেই। এরপরই গাজী ইনিংসে একটা ধস নামে। রাভি তেজা, আকবর আলী, মেহরাব হোসেন দ্রুত বিদায় নিলে দলের ব্যাটিং বিপর্যয় দেখা দেয়। ৮ রানে হারায় ৩ উইকেট। বিপর্যয় সামাল দেন ফরহাদ হোসেন, মাহমুদুল হাসান ও এনামুল হক। আরাফাত সানি জুনিয়র ৫৪ রানে নেন ৩ উইকেট। মেহেদি হাসান ২ উইকেট নিতে খরচ করেন ৩৬ রান।
জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ব্রাদার্স তানজিদ হাসান তামিমের ব্যাটে ভর করে ভালোই জবাব দেয়। তানজিদ ও মিজানুরের উদ্বোধনী জুটিতে ৪৯ রান আসার পর জুটি ভাঙে মিজানুর ২৩ রান করে আউট হলে। এরপর তানজিদ সাব্বির ও আনিসুলকে নিয়ে দিতে থাকেন জবাব। তাদের এক একটি রান গাজীর বুকে কাঁপন ধরিয়ে দেয়। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে সাব্বিরকে নিয়ে তানজিদ যোগ করেন ১৬ ওভারে ১০২ রান। সাব্বির ৪৬ বলে ৪৮ রান করে আউট হওয়ার পর তানজিদ আনিসুলকে নিয়ে যোগ করেন আরও ৬২ রান। এবার জুটি ভাঙে তানজিদ নিজে আউট হলে। আউট হওয়ার আগে তিনি তুলে নেন সেঞ্চুরি। ১১১ বলে ৪ ছক্কা ও ৬ চারে তিনি সেঞ্চুরি করার পর আর বেশি দূর যেতে পারেননি। মাহমুদুল হাসানের বলে একটি ছক্কা মেরে পরে সেই ওভারেই আউট হয়ে যান এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে পড়ে। তার ১১৪ বলের ইনিংসে ছিল ৫ ছক্কা ও ৬ চার।
তানজিম আউট হওয়ার সময় ব্রাদার্সের রান ছিল ৩ উইকেটে ৩৭.৩ ওভারে ২১৩ রান। জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ৭ উইকেটে ১২.৩ ওভারে ৯৩ রানের। সেই রান তারা তাড়া করে আনিসুল, সাদ নাসিম ও জাহিদুজ্জামানের ব্যাটে ভর করে। আনিসুল ৬২ বলে ১ ছক্কা ও ৭ চারে ৫৭ রান করে আউট হওয়ার পর মায়শাকুরও প্রথম বলেই রানআউট হয়ে গেলে সিটির হার এক প্রকার নিশ্চিত হয়ে যায়। কিন্তু তখন অন্য হিসাব করছিলেন সাদ নাসিম ও নতুন আসা জাহিদুজ্জামান মিলে। ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে এই দুইজন জুটি বাঁধার পর আর কোনো উইকেটের পতন হতে দেননি। দুইজনে ৫.১ ওভারে অবিচ্ছিন্ন থেকে ৫৩ রান যোগ করে দলকে জয় এনে দেন ১ ওভার হাতে রেখেই। সাদ নাসিম ৩০ বলে ৩৯ ও জাহিদুজ্জামান ১৮ বলে ৪ বাউন্ডারিতে ২৮ রান করে অপরাজিত থাকেন। টিপু সুলতান ৪১ রানে নেন ২ উইকেট।
এমপি/এসজি