মাঠে ফিরেই মরক্কোর চমক, হারাল ব্রাজিলকে
বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনাল খেলা আরবের প্রথম দল মরক্কো। প্রথম আফ্রিকান দল হিসেবে খেলেছে সেমিফাইনাল। কাতারে ফিফার মেগা ইভেন্টে জোড়া কীর্তি মরক্কান ফুটবলাররা। সফল সেই মিশনের পর মাঠে ফিরেই মরক্কোর চমক। এবার হারাল ব্রাজিলকে।
রবিবার (২৬ মার্চ) ভোরে দেশের মাটিতে প্রীতি ম্যাচে ব্রাজিলকে ২-১ গোলে হারিয়েছে মরক্কো। সর্বোচ্চ পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে এটাই প্রথম জয় তাদের। ট্যাঙ্গিয়ারে ঐতিহাসিক এই সাফল্যে মরক্কানরা বুঝিয়ে দিল যে তাদের স্বপ্নযাত্রা এখনো শেষ হয়নি, যা শুরু হয়েছে কাতারে।
সবশেষ বিশ্বকাপের পর এটাই ছিল দুই দেশের প্রথম ম্যাচ। ওই ইভেন্টে কোয়ার্টার ফাইনালে থমকে যাওয়া ব্রাজিল এদিন খেলতে নামে চোটাক্রান্ত নেইমারকে ছাড়া। সেরা তারকার অনুপস্থিতিতে কাসেমিরো তার সবটা নিংড়ে দেন। কিন্তু অধিনায়কের গোলেও হার এড়াতে পারেনি ব্রাজিল।
ইবনে বতুতা স্টেডিয়াম ৬৫ হাজার ভক্তের সরব উপস্থিতিতে চেষ্টার ত্রুটির ছিল না স্বাগতিক ফুটবলারদের। তবে শুরুতে শক্তিশালী ছিল ব্রাজিল। লড়াইয়ের শুরুতেই উত্তেজনা সৃষ্টি। মরক্কান ডিফেন্ডারদের একাধিক ফাউলে রেফারির কাছে অভিযোগও করেন ব্রাজিলিয়ানরা।
শুরুর উত্তেজনার পর ব্রাজিল আরও আক্রমনাত্মক হয়ে উঠে এবং বল দখলে আধিপত্য বিস্তার করে। আর মরক্কো পাল্টা আক্রমণে সবসময় বিপজ্জনক ছিল। ত্রয়োদশ মিনিটে দারুণ একটি সুযোগও পেয়েছিলেন অভিষেক ম্যাচ খেলতে নামা রনি। কিন্তু লক্ষ্যে স্থির থাকতে পারেননি পালমেইরাস উইঙ্গার।
২২ মিনিটে হাস্যকর ভুলে ব্রাজিল প্রায় একটি গোল উপহার দিতে বসেছিলেন গোলরক্ষক ইয়াসিন বুনো। কিন্তু ভিনিসিউস জুনিয়র বিপদ বাড়ানোর আগেই মরক্কোকে বিপদমুক্ত করতে সক্ষম হন তিনি। পরের মিনিটে একই ভুল আবার করেন বুনো।
আবারও খালি জালের সামনে ভিনিসিউসকে বল দিয়েছিলেন বুনো। সে যাত্রায় ঠিকই লক্ষ্যভেদ করেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড। কিন্তু সেটা বাতিল হয় অফসাইডের বাঁশিতে। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ভিএআর প্রযুক্তি ব্যবহার করে, যা নিয়ে ঘোর আপত্তি জানায় অতিথিরা। এমনকি তিউনিসিয়ান রেফারি সাদক সেলমীকে তিরস্কারও করে ব্রাজিলিয়ানরা।
ওই বাকবিতন্ডার পর মুহূর্তেই নিজেদের বক্সে বল হারান এমেরসন। অতিথি ডিফেন্ডারের উপহার দেওয়া এই সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করেনি মরক্কো। গোলমুখের কাছে থাকা সোফিয়ান বোফাল বিলাল সতীর্থ এল খানসের অ্যাসিস্টে এগিয়ে নেন মরক্কোকে। তখন ম্যাচের বয়স ২৯ মিনিট।
বিরতির আগে আরও দুটো সুযোগ পেয়েছিলেন হাকিম জিয়েখ। দুবারই ব্যর্থ হন তিনি। অপরদিকে, বুনোর দুর্দান্ত এক সেভে আশাহত হতে হয় রদ্রিগোকে। তাতে পিছিয়ে থেকেই প্রথমার্ধ শেষ করে ব্রাজিল। তবে দ্বিতীয়ার্ধে সমতায় ফেরে সেলেকাওরা।
৬৭ মিনিটে বুনোর তৃতীয় ভুলের মাশুল দেয় মরক্কো। কাসেমিরোর দুর্বল শট গ্লাভসবন্দী করতে পারেননি স্বাগতিক গোলরক্ষক, যা তার হাত ফসকে জড়ায় জালে। সৌভাগ্য বুনোর যে তার ওমন শিশুসুলভ ভুলে জয় হাতছাড়া হয়নি মরক্কোর।
৭৯ মিনিটে স্বাগতিকদের ফের গোলোৎসবে মাতান আবেদলহামিদ সাবিরি। প্রতিপক্ষের ভুলে বিপজ্জদক জায়গায় বলে পেয়ে মরক্কোকে ২-১ গোলের জয় উপহার দেন বদলি নামা এই ফুটবলার।
আরএ/