লো-স্কোরিং ম্যাচে ঢাকার জয়
বিপিএলের উদ্বোধনী ম্যাচর মতো দ্বিতীয় দিনের প্রথম ম্যাচও হয়েছে লো-স্কোরিং। চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের করা ৮৯ রান সিলেট স্ট্রাইকার্স সহজেই জিতে নিয়েছিল।
শনিবার (৭ জানুয়ারি) কিন্তু খুলনা টাইগার্স ও ঢাকা ডমিনেটরসের ম্যাচটি কিন্তু হয়েছে হাড্ডাহাড্ডি। টস হরে ব্যাট করতে নামা খুলনার ৮ উইকেটে করা ১১৩ রান পাড়ি দিতে ঢাকাকে শেষ ওভার পর্যন্ত খেলতে হয়েছে। খরচ করতে হয়েছে ৪ উইকেট। তারপর ম্যাচ জিতেছে ৬ উইকেটে।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে মানেই চার-ছক্কার ফুলঝুরি হলেও বিপিএলে সব সময় তা উধায় থাকে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। আজকের ম্যাচটি যেন তার আরও একটি বার্তা দিয়ে রাখল। খুলনার রান ওভার প্রতি ছয়ের ( ৫.৬৫) নিচে। ঢাকার রান ছয়ের ( ৬.১০) সামান্য উপরে।
রানের খেলায় দাপট ছিল বোলারদের। ঢাকার দুইজন ও খুলনার একজন বোলার ওভার প্রতি ছয়ের উপরে রান দিয়েছেন। বাকি সবার রান ছিল ছয়ের নিচে। আবার ব্যাট হাতে দুই দলের ব্যাটসম্যানদের স্ট্রাইকরেট একশ’র উপরে ছিল খুলনার টপ অর্ডারের ব্যাটসম্যানদের মাঝে শুধু আজম খানের ১৫০.০০। ৎ
খুলনার ছিল তিন জনের। সৌম্য সরকার (১২৩.০৭), নাসির হোসেন (১০০.০০) আরিফুল হকের (১০০.০০)। গোটা ম্যাচে ছক্কা ছিল চারটি আর বাউন্ডারি ২১টি। খুলনার ইনিংসে তিনটিও ঢাকার ইনিংসে একটি ছক্কা । বাউন্ডারি খুলনার ইনিংসে ১০টি, ঢাকার ইনিংসে ১১টি।
ঢাকাকে জয় এনে দিয়েছেনম্যাচ সেরা নাসির হোসেন অলরাউন্ড নৈপুন্য দেখিয়ে। বল হাতে ৪ ওভারে ২৯ রানে ২ উইকেট নেওয়ার পর ব্যাট হাতে ৩৬ বলে ৪ বাউন্ডারিতে অপরাজিত ৩৬ রান করেন। তার এই ইনিংসের কারণেই ঢাকার জয় শেষ পর্যন্ত কঠিন প্রতিরোধের মুখে পড়েনি। দলীয় ১৬ রানে আহমেদ শেহজাদ ৪ রান করে রিটায়ার্ডহার্ট করলেও দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে দিলশান মুনাবীরা ও সৌম্য সরকার ৩১ রান যোগ করেন। সৌম্য ১৩ বলে১ ছক্কা ও ২ চারে ১৬ রান করে আউট হওয়ার পর মুনাবীরা ২৮ বরে ৩ চারে ২২ ও মোহাম্মদ মিঠুন ৮ রানে করে ফিরে যান। এরপর অধিনায়ক নাসির ও ওসমান গনি ৩৬ রান যোগ করে দলকে জয়ের কাছাকাছি নিয়ে যান। ওসমনা গনি ১৫ বরে ১৪ রান করে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের বলে ম্যাকরেনের হাতে ধরা পড়ে বিদায় নেওয়ার পর নাসির ও আরিফুল হক আর কোনো উইকেটের পতন হতে না দিয়ে দলকে জয়ী করে মাঠ ছাড়েন। মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ২২ রানে নেন ৭ উইকেট।
এর আগে খুলনার বড় ভরসা ছিলেন তামিম ইকবাল। কিন্তু তিনিই তাদের হতাশ করেন। দীর্ঘদিন পর টি-টোয়েন্টি খেলেতে নেমে তিনি মোটেই সুবিধা করতে পারেননি। এই ম্যাচ খেলার আগে তিনি জাতীয় দল থেকে অবসরও নেন ফেসবুকে ঘোষণা দিয়ে। তাকে বেশ অস্বস্তি লেগেছে। রান করার চেয়ে বলের ব্যবধান ছিল প্রায় দিগুন।
মাত্র ৮ রান করতে বল খেলেন ১৫টি। আরাফাত সানি বল হাতে নিয়েই তাকে সাজ ঘরমুখি করে দেন। তামিমের এই আউট ছিল খুলনার ব্যাটিংয়ের পতনের যাত্রা মাত্র। খুব দ্রুতই বিদায় নেন তামিমের সঙ্গে ইনিংসের উদ্বোধন করতে আসা শারজিল খান ও গত বিপিএলে চমক দেখানো ফরচুন বরিশালের হয়ে খেলা মুনিম শাহরিয়ার।
গতবার তিনি ইনিংসের উদ্বোধন করলেও আজ তিনি নেমেছিলেন ওয়ান ডাউনে। শারজিল ৭ ও মুনিম শাহরিয়ার ৪ রান করে আউট হন। ব্যাটিং পাওয়ার প্লের আগেই তারা ৫.৪ ওভারে মাত্র ২৮ রানে ৩ উইকেট হারিয় বড়[ সংগ্রহের পথে বড় ধাক্কা খায় খুলনা।
পাকিস্তানের বিশালদেহী আজম খান ও অধিনায়ক ইয়াসির আলী চতুর্থ উইকেট জুটিতে উইকেট পতন রোধ করে ইনিংস মেরামত করার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু খুব বেশি দূর যেতে পারেননি।
জুটিতে ২১ রান আসার পর আজম খান ফিরে যান ১২ বলে ৩ টারে ১৮ রান করে আরাফাত সানির বলে বোল্ডে হয়ে। তখনো দলের রান ৫০ পার হয়নি। পঞ্চম উইকেট জুটিকে ইয়াসির আলী ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন কিছুটা মন্থর ব্যাটিং করেন। বিশেষ করে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। তিনি মুলত মারমুখি ব্যাটিং করেন। কিন্তু আজ ২৮ বলে করেন ১৯ রান। ইয়াসিরের সঙ্গে জুটিতে ৩১ রান আসে ৫.৪ ওভারে। এই দুই জন টিকে থাকতে পারলে দলেল রান হয়তো কিছৃটা বাড়তে পারত। কিন্তু ৭ রানের ব্যবধানে দুই জনেই আউট হয়ে যান। ইয়াসির ২৫ বরে ২৪ রান করেন। দুই জনেই মাত্র একটি করে ছক্কা ও চার মারেন। শেষের দিকে ওয়াব রিয়াগ ৩ বলে একটি করে চার ও ছক্কায় ১০ রান করলে দলের রান শেষ পর্যন্ত ১১৩ পর্যন্ত যায়। সাব্বির রহমান ১১ রান করে অপরাজিত থাকেন। আল আমিন হোসেন ৪ ওভারে ২৮ রানে নেন ৪ উইকেট। আরাফাত সানিন ২৪ ও নাসির হোসেন ২৯ রানে ২টি করে উইকেট।
এমপি/এমএমএ/