লিটনের বছরে তামিম-মুশফিকের অবসর, জাকিরের আবির্ভাব

২০২২ সাল লিটন কুমার দাস নিজের করে নিয়েছিলেন। তিন ফরম্যাটেই তিনি বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী। ১০ টেস্টের ১৮ ইনিংসে তিনি রান করেছেন পাক্কা ৮০০। ২টি সেঞ্চুরির সঙ্গে আছে ৫টি হাফ সেঞ্চুরি। ওয়ানডে ক্রিকেটে ১৩ ম্যাচের ১৩ ইনিংসে রান করেছেন ৫৭৭। ১টি সেঞ্চুরি আর ৪টি হাফ সেঞ্চুরি আসে তার ব্যাট থেকে। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে তিনি ১৯ ইনিংসে রান করেন ৫৪৪। কোনো সেঞ্চুরি করতে পারেননি। হাফ সেঞ্চুরি আছে ৪টি। তিন ফরম্যাটে তার মোট রান ১ হাজার ৯২১। সেঞ্চুরি ৩টি, হাফ সেঞ্চুরি ১৩টি। টেস্টে লিটনের অবস্থান নয়ে, ওয়ানডেতে ১৯তম, টি-টোয়েন্টিতে ২২তম।
চলতি বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তিন ফরম্যাটে রান সংগ্রহের দিক দিয়ে লিটনের উপরে আছেন শুধু পাকিস্তানের বাবর আজম। করাচিতে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে চলমান টেস্টের আগে বাবর আজম তিন ফরম্যাট মিলে করেছেন ২ হাজার ৪২৩ রান। টেস্টে ১ হাজার ৯, ওয়ানডেতে ৬৭৯ ও টি-টোয়েন্টিতে ৭৩৫ রান।
তিন ফরম্যাটের মাঝে টি-টোয়েন্টি ছাড়া লিটন দাসের আশপাশেও নেই কেউ। টেস্টে তার পরই আছেন মুশফিকুর রহিম। ৭ টেস্টের ১৩ ইনিংসে তার রান ৪৬৫। ২টি সেঞ্চুরির সঙ্গে আছে ১টি হাফ সেঞ্চুরি। মুশফিকের একটি ইনিংস আছে আবার অপরাজিত ১৭৫ রানের। মিরপুরে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তিনি খেলেছিলেন এই ইনিংস। ওয়ানডেতে তার পরে আছেন ১৫ ম্যাচের ১৩ ইনিংসে ৪১০ রান করা মাহমুদল্লাহ রিয়াদ। টি-টোয়েন্টিতে আফিফ হোসেন অবশ্য তার কাছাকাছি চলে গিয়েছিলেন। বাংলাদেশের হয়ে সবকটি (২১টি) ম্যাচ খেলে আফিফ করেছেন ৫০০ রান।
টেস্ট ক্রিকেটে ২০২২ সালে সেঞ্চুরি হয়েছে ৭টি। লিটন দাস ও মুশফিকুর রহিম করেছেন ২টি করে। একটি করে সেঞ্চুরি করেছেন তামিম ইকবাল, মাহমুদুল হাসান জয় ও জাকির হাসান। লিটন দাসের ২টি সেঞ্চুরি ছিল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১৪১ ও নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ক্রাইস্টচার্চে ১০২ রান। মুশফিকুর রহিমের ২টি ছিল ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। মিরপুরে তার অপরাজিত ১৭৫ রানের ইনিংসটি ছিল ২০২২ সালে বাংলাদেশের হয়ে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ছিল ১২তম সর্বোচ্চ। মুশফিকের অপর ইনিংসটি ছিল চট্টগ্রামে ১০৫ রানের। এ ছাড়া মাহমুদুল হাসান জয় ডারবানে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ১৩৭, চট্টগ্রামে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তামিম ইকবাল ১৩৩ ও ভারতের বিপক্ষে নিজের অভিষেক ম্যাচে জাকির হাসান ১০০ রান করেছিলেন।
ওয়ানডেতে সেঞ্চুরি ছিল ২টি। বছরের শুরুতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে চট্টগ্রামে লিটন দাস করেছিলেন ১৩৬ রান। আর বছরের শেষের দিকে এসে মিরপুরে ভারতের বিপক্ষে মেহেদি হাসান মিরাজ অপরাজিত ১০০ রানের ইনিংস খেলে করেছিলেন ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি। টি-টোয়েন্টিতে ২০২২ সালে কোনো সেঞ্চুরি করতে পারেননি কোনো ব্যাটসম্যান। সর্বোচ্চ ৭৭ রানের ইনিংস খেলেছিলেন আফিফ হোসেন, দুবাইয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে।
মিরাজেরও বছর
লিটনের মতো করে না হলেও বোলিংয়ে মেহেদি হাসান মিরাজও ২০২২ সাল অনেকটা নিজের করে নিতে পেরেছেন। টেস্ট ও ওয়ানডেতে তিনি বাংলাদেশের সর্বোচ্চ শিকারি। টি-টোয়েন্টিতে নিয়মিত খেলার সুযোগ পান না। তারপরও এবার ৬টি ম্যাচ খেলে উইকেট পেয়েছেন ৪টি। সব মিলিয়ে তিন ফরম্যাটে তার মোট উইকেটসংখ্যা ৫৯টি। ৮ টেস্টের ১৪ ইনিংসে ৩৪৩.৩ ওভার বোলিং করে ১ হাজার ৩০ রান দিয়ে উইকেট নিয়েছেন ৩১টি। সেরা বোলিং ছিল ভারতের বিপক্ষে খেলা বছরের শেষ টেস্টে ৬৩ রান দিয়ে ৫ উইকেট প্রাপ্তি। ওয়ানডেতে ১৫ ম্যাচ খেলে ১২৪.২ ওভারে ৬৭৭ রান দিয়ে উইকেট প্রাপ্তির সংখ্যা ছিল ২৪টি। তার পরেই আছেন অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। তিন ফরম্যাটে সাকিবের উইকেট ৪৪টি- টেস্টে ১৬টি, ওয়ানডেতে ১৭টি ও টি-টোয়েন্টিতে ১১টি।
টেস্টে সাকিবের পরে আছেন তাইজুল ইসলাম। তিনি ৫ টেস্টে উইকেট নিয়েছেন ২২টি। ওয়ানডেতে ১৭ উইকেট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছেন সাকিব। টি-টোয়েন্টিতে সবার উপরে আছেন দলে অনিয়মিত থাকা মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। তার উইকেট সংখ্যা ১১টি।
টেস্টে ১০ উইকেট কেউ নিতে পারেননি। সর্বোচ্চ ৯ উইকেট নিয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে পোর্ট এলিজাবেথে তাইজুল। প্রথম ইনিংসে ৬ উইকেট নেওয়ার পর দ্বিতীয় ইনিংসে নিয়েছিলেন ৩ উইকেট। ইনিংসে ৫ উইকেট নেওয়ার কীর্তি আছে ৬টি। তবে কেউই দুবার এই কীর্তি দেখাতে পারেননি। ৬টি উইকেট নিয়েছিলেন এবাদত, নাঈম হাসান ও তাইজুল। এবাদত নিয়েছিলেন মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে বছরের শুরুতেই ৪৬ রান দিয়ে। নাঈমের কীর্তি ছিল চট্টগ্রামে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১০৫ রান দিয়ে। তাইজুলের কীর্তি পোর্ট এলিজাবেথে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ১৩৫ রান দিয়ে। এ ছাড়া মিরপুরে মিরাজ ভারতের বিপক্ষে ৬৩ রান, একই ভেন্যুতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সাকিব ৯৬ রান ও সেন্ট লুসিয়াতে উইন্ডিজের বিপক্ষে সৈয়দ খালেদ আহমেদ ১০৬ রান দিয়ে নিয়েছিলেন ৫টি করে উইকেট।
ওয়ানডেতে ৫ উইকেট নেওয়ার কীর্তি আছে তিনবার। গায়ানাতে উইন্ডিজের বিপক্ষে তাইজুল ২৮ রান, সেঞ্চুরিয়ানে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তাসকিন ৩৫ রান ও মিরপুরে ভারতের বিপক্ষে সাকিব ৩৬ রানে পেয়েছিলেন ৫টি করে উইকেটে। টি-টোয়েন্টিতে এই কীর্তি হয়েছে একবারই। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হারারেতে সিরিজে ফেরা ম্যাচে মোসাদ্দেক বল হাতে ইনিংসের সূচনা করে ২০ রান দিয়ে নিয়েছিলেন ৫ উইকেট।
খালেদের শূন্য প্রীতি!
০ একজন ব্যাটসম্যানের সবচেয়ে অপ্রিয় সংখ্যা। এমনকি বোলারেরও। ব্যাটসম্যান যেমন শূন্য রানে আউট হতে চান না, তেমনি বোলাররাও চান না উইকেটশূন্য থাকতে। ২০২২ সালে শূন্য রানে সবচেয়ে বেশি আউট হয়েছেন পেসার সৈয়দ খালেদ আহমেদ। ৮ টেস্টের ১৫ ইনিংসে তিনি শূন্য রানে আউট হয়েছেন ৮ বার। এ ছাড়া ৫ বার শূন্য রানে ছিলেন অপরাজিত। বাকি দুই ইনিংসে তিনি করেছিলেন ১ ও ৪ রান।
শূন্য রানে ৪ বার করে আউট হয়েছেন মুশফিকুর রহিম, এবাদত হোসেন ও মুমিনুল হক। এবাদত ওয়ানডেতেও শূন্য রানে আউট হয়েছেন ২ বার। ওয়ানডেতে সবচেয়ে বেশি ২ বার করে আরও আউট হয়েছেন নাজমুল হোসেন শান্ত, হাসান মাহমুদ ও আফিফ হোসেন। টি-টোয়েন্টিতে সবচেয়ে বেশি ৩ বার শূন্য রানে আউট হওয়া ব্যাটসম্যান হলেন মোসাদ্দেক।
চার-ছক্কায়ও এগিয়ে লিটন
তিন ফরম্যাটেই যখন বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী, তখন চার-ছক্কায় লিটন দাস এগিয়ে থাকবেন এটাই স্বাভাবিক। চার-ছক্কায় তার ধারেকাছেও কেউ নেই। লিটন ২২২টি চারের সঙ্গে ছক্কা মেরেছেন ২৬টি। ৮৪টি চার মেরে তার পরেই আছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। ছক্কায় লিটনের পরে আছেন আফিফ হোসেন। তিনি ছক্কা মেরেছেন ১৮টি।
লিটন টেস্টে ছক্কা মেরেছেন সবচেয়ে কম ৩টি। বাউন্ডারি হাঁকিয়েছেন ৯৮টি। ওয়ানেডতে এই সংখ্যা যথাক্রমে ৭ ও ৬৭। টি-টোয়েন্টিতে তিনি সবচেয়ে বেশি ১৬টি ছক্কা মেরেছেন। বাউন্ডারির সংখ্যা ৫৭টি। টেস্টে সবচেয়ে বেশি ছক্কা মেরেছেন সাকিব আল হাসান, ৮টি। এরপর ৫টি ছক্কা মেরে দ্বিতীয় স্থানে আছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। ওয়ানডেতে ছক্কা মারায় সবার উপরে মেহেদি হাসান মিরাজ। তার ছক্কার সংখ্যা ১০টি। এনামুল হক বিজয় মেরেছেন ৮ ছক্কা। টি-টোয়েন্টিতে ১৪ ছক্কা মেরে লিটনের পরেই আছেন আফিফ। ১২টি ছক্কা মেরেছেন নুরুল হাসান সোহান।
ডিসমিসালে সোহান, ক্যাচ ধরায় এগিয়ে লিটন
লিটন একাধারে ব্যাটসম্যান, উইকেটকিপার আবার ফিল্ডারও। দলে তার মতো আছেন আরও দুইজন- মুশফিকুর রহিম ও নুরুল হাসান সোহান। যে কারণে লিটনকে এখন খুব একটা কিপিং গ্লাভস পরতে হয় না। ২০২২ সালে তিনি টেস্টের ১০ ইনিংস ও টি-টোয়েন্টির ২ ইনিংসে কিপিং করেছেন। টেস্টে ১১টি ক্যাচ আর ১টি স্টাম্পিং করেছেন।
কিন্তু এখানে সবার উপরে নুরুল হাসান সোহান। তিনি ২২টি ক্যাচ আর ৮টি স্টাম্পিং করেছেন। মুশফিকের ক্যাচ ও স্টাম্পিংয়ের সংখ্যা ১৫ ও ৭। ফিল্ডিংয়ে ক্যাচ ধরার ক্ষেত্রে লিটন দাস আবার সবার উপরে। তিন ফরম্যাটে তিনি ক্যাচ ধরেছেন ১৫টি। ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতে ৬টি করে এবং টেস্টে ৩টি। ১৪ ক্যাচ ধরে তার পরেই আছেন ইয়াসির আলী। ১২টি করে ক্যাচ ধরেছেন আফিফ হোসেন ও নাজমুল হোসেন শান্ত।
টি-টোয়েন্টি থেকে তামিম-মুশফিকের অবসর
পঞ্চপাণ্ডবের দুই পাণ্ডব তামিম ইকবাল ও মুশফিকুর রহিম এ বছর টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে থেকে অবসর নেওয়ার ঘোষণা দেন। দুইজনের ঘোষণাই এসেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। প্রথমে অবসরের ঘোষণা দেন তামিম। উইন্ডিজ সফরে তার নেতৃত্বে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে স্বাগতিকদের হোয়াইটওয়াশ করার কিছুক্ষণ পরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তামিম এই ঘোষণা দেন ১৬ জুলাই। বাংলাদেশে তখন ১৭ জুলাই ভোর।
ফেসবুকে তামিম লিখেছিলেন, ‘আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে আজকে থেকে আমাকে অবসরপ্রাপ্ত হিসেবে বিবেচনা করুন। ধন্যবাদ সবাইকে।’ অবসরে যাওয়ার আগে তামিম দীর্ঘদিন টি-টোয়েন্টি খেলা থেকে দূরে ছিলেন। কখনো ইনজুরির কারণে, কখনো ছুটি নিয়ে। তিনি সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি খেলেছিলেন ২০২০ সালের ৯ মার্চ মিরপুরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। টি-টোয়েন্টিতে তামিম ৭৮ ম্যাচে রান করেছিলেন ১ হাজার ৭৯৮। একটি সেঞ্চুরির সঙ্গে ছিল ৭টি হাফ সেঞ্চরি। টি-টোয়েন্টিতে একমাত্র সেঞ্চুরি তামিম ইকবালেরই। ২০১৬ সালে ধর্মশালায় ওমানের বিপক্ষে তিনি করেছিলেন অপরাজিত ১০৩ রান।
তামিমের অবসর নেওয়ার প্রায় দেড় মাস পর ৪ সেপ্টেম্বর মুশফিকুর রহিমও একই ঘোষণা দেন। মুশফিক অবসর নিয়েছিলেন টি-টোয়েন্টিতে ভালো করতে না পারার কারণে। উইন্ডিজ সফর শেষে জিম্বাবুয়ে সফরে তাকে বিশ্রামে দেওয়া হয়েছিল। পরে আবার এশিয়া কাপে দলে ফিরিয়ে আনা হয়। কিন্তু ২ ম্যাচ খেলে রান করেন মাত্র ৫। বাংলাদেশ সেমিতেই উঠতে পারেনি। পরে দেশে ফিরে এসে তিনি ফেসবুকে বাংলা ও ইংরেজিতে এই ঘোষণা দিয়েছিলেন।
বাংলায় তিনি লিখেছিলেন, ‘সবাইকে সালাম এবং শুভেচ্ছা। দীর্ঘ ক্রিকেট ক্যারিয়ারের যাত্রায় আমি আপনাদের সবাইকে পাশে পেয়েছি। ভালো এবং খারাপ দুই সময়েই আপনাদের অকুণ্ঠ সমর্থন আমার প্রেরণা। টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ক্যারিয়ার থেকে আজ আমি অবসর নিচ্ছি। তবে বাংলাদেশের হয়ে টেস্ট এবং ওয়ানডে খেলা চালিয়ে যাব। আশা করছি এই দুই ফরম্যাটে আমি আরও কিছু নিয়ে আসতে পারব দেশের জন্য। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগসহ (বিপিএল) অন্যান্য ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে আমি আমার খেলা চালিয়ে যাব টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে (১০২ ম্যাচ খেলে ৬ হাফ সেঞ্চুরিতে তিনি রান করেছিলেন ১ হাজার ৫০০)। আলহামদুলিল্লাহ। সবার নিকট কৃতজ্ঞতা। ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।’
জাকিরের স্মরণীয় অভিষেক
একজন ব্যাটসম্যানের চির আরাধ্য তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগারের দেখা পাওয়া। যদি হয়ে যায় অভিষেক টেস্টেই তাহলে তো কথাই নেই। সেই কাজটিই করে দেখিয়েছেন ওপেনার জাকির হাসান। ভারতের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে তিনি ১০০ রান করেই আউট হয়ে যান। ২১৯ বল খেলে ১৩ বাউন্ডারি ও এক ছক্কায় সাজানো ছিল তার এই সেঞ্চুরির ইনিংস। ঢাকায় পরের টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে তিনি করেন ৫১ রান। সিলেটের ছেলে জাকির অভিষেকের দুই টেস্টেই সেঞ্চুরি ও হাফ সেঞ্চুরি করে সবার নজর কেড়েছেন। তাকে নিয়ে সবাই আশাবাদী হয়ে উঠেছেন।
অভিষেকে সেঞ্চুরি পাওয়া জাকির হলেন বাংলাদেশের চতুর্থ ব্যাটসম্যান। এর আগে অভিষেকে সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন আমিনুল ইসলাম বুলবুল, মোহাম্মদ আশরাফুল ও আবুল হোসেন রাজু। আমিনুল ইসলাম বুলবুল সেঞ্চুরি করেছিলেন বাংলাদেশের অভিষেক টেস্টে ভারতের বিপক্ষে ২০০০ সালে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে। তিনি করেছিলেন ১৪৫ রান।
মোহাম্মদ আশরাফুলের সেঞ্চুরি শুধু অভিষেকেই ছিল না, বিশ্ব ক্রিকেটের সর্বকনিষ্ঠ ব্যাটসম্যান হিসেবেও রেকর্ড বইয়ে এখনো অটুট। ২০০১ সালে কলম্বোর এসএসসি স্টেডিয়ামে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আশরাফুল ১১৪ রানের ইনিংস খেলেছিলেন।
আবুল হোসেন রাজু সেঞ্চুরি ছিল ২০১২ সালে খুলনায় উইন্ডিজের বিপক্ষে। তিনি করেছিলেন ১১৩ রান। তবে রাজুর সেঞ্চুরি একটি বিশেষত্ব ছিল। তিনি ছিলেন বোলার। ব্যাট করতে নেমেছিলেন ১০ নম্বরে।
আইপিএলে লিটন
২০২২ সালে রান ফোয়ারায় থাকায় তার শেষ সুফল লিটন পেলেন আইপিএলে প্রথমবারের মতো সুযোগ পেয়ে। তাকে দলে ভিড়িয়েছে বলিউড বাদশা শাহরুখ খানের কলকাতা নাইট রাইডার্স। লিটনকে ৫০ লাখ রুপির ভিত্তিমূল্যেই কিনে নেয় নাইট রাইডার্স।
আইপিএলে লিটন হলেন সপ্তম বাংলাদেশি ক্রিকেটার। এর আগে খেলেছেন সাকিব আল হাসান, মাশরাফি বিন মর্তুজা, আব্দুর রাজ্জাক, তামিম ইকবাল, মোস্তাফিজুর রহমান ও মোহাম্মদ আশরাফুল।
এবার লিটনের সঙ্গে ১ কোটি ৫০ লাখ রুপির ভিত্তিমূল্যে সাকিব আর হাসানকেও কিনে নিয়েছে নাইট রাইডার্স। আইপিএলে একসঙ্গে একই দলে দুই বাংলাদেশি ক্রিকেটারের খেলা এবারই প্রথম। এই দুইজন ছাড়া মোস্তাফিজকে তার দল দিল্লি ক্যাপিটালস ধরে রেখেছে। আইপিলের এক মৌসুমে তিন বাংলাদেশি ক্রিকেটারের খেলা এবারই প্রথম।
এমপি/এসজি
