টেস্টে ভালো করতে প্রথম শ্রেণির ম্যাচে বেশি খেলার পক্ষে সাকিব

বাংলাদেশে এখন প্রতিভাবান ক্রিকেটারে অভাব নেই। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে তারা প্রতিভার ঝিলিক দেখিয়ে আর্ন্তজাতিক ক্রিকেটে পথ চলা শুরু করার পর আর টিকে থাকতে পারেন না। অনেকটা ‘ওয়ান টাইম’ গ্লাসের মতো। বছরের শুরুতে বাংলাদেশ মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে টেস্ট জিতেছিল নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। সেই টেস্টে ক্যারিয়ারের মাত্র দ্বিতীয় টেস্ট খেলতে নামা মাহমুদুল হাসান জয় করেছিলেন ৭৮ রান।
ইনজুরির কারণে পরের টেস্ট তার আর খেলা হয়নি। এরপর দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে ডারবানে তিনি করেন সেঞ্চুরি। রান করেছিলেন ১৩৭। এ সময় তাকে নিয়ে বেশ উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন সবাই। এমন মন্তব্যও কেউ কেউ করেছিলেন দীর্ঘ সময় জাতীয় দলকে সার্ভিস দেয়ার মতো একজন ওপেনার পাওয়া গেল। কিন্তু সেই মাহমুদুল হাসান জয় নিজের সেই অবস্থান ধরে রাখতে পারেননি। জায়গা হারিয়েছেন একাদশে।
এবার ভারতের বিপক্ষে সিরিজে আবির্ভাব ঘটেছে জাকির হাসান নামে আরেক ওপেনারের। অভিষেকেই তিনি করেছেন সেঞ্চুরি। পরের টেস্টে হাফ সেঞ্চুরি। জাকির পরবর্তীতে কী করেন তা দেখার বিষয়। কিন্তু অধিনায়ক জাকির মনে করেন মাহমুদুল হাসান জয়ও হারিয়ে যায়নি। জাকিরও দলকে সার্ভিস দিবে অনেক দিন।
জাকিরকে নিয়ে তিনি বলেন, ‘ওকে খুব পরিণত মনে হয়েছে। আমার কাছে মনে হয়েছে, খুব ভালো টেম্পারমেন্ট আছে, টেস্ট ম্যাচের জন্য আদর্শ, যে ধরনের ব্যাটসম্যান আমরা খুঁজছিলাম। আমার মনে হয়, ও একটা বড় শূন্যস্থান পূরণ করার মতো সামর্থ্য রাখে। তবে এটা কেবলই শুরু। আশা করি, বাংলাদেশের হয় এমন ভালো ভালো ইনিংস ও খেলবে।’
জাকিরকে নিয়ে সাকিবকে একটু বেশিই আত্মবিশ্বাসী। তিনি বলেন, ‘জাকিরের জন্য একটা সুবিধা হচ্ছে, ও কিন্তু নতুন ক্রিকেটার নয়। অনেক অভিজ্ঞ ক্রিকেটার। ৭০টি ম্যাচ খেলেছে। খেলার মধ্যে ওই ব্যাপারটি দেখা যায়।’
তিনি বলেন, ‘যখন ১৯-২০ বছরের একটি ছেলে খেলবে, তার খেলার যে ধরন, একটা ৩০ বছরের ছেলে, জাতীয় দলের আশপাশ দিয়ে ছিল সবসময়, ৬০-৭০টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলে আসা ক্রিকেটার, তার টেম্পারমেন্ট দেখলেই পার্থক্য বুঝতে পারবেন। আমি যেটা চাচ্ছি, এরকম ক্রিকেটাররা যদি আসে, ৫-৬-১০ বছর যে সার্ভিস দেবে বাংলাদেশকে, তাদের ভালো সার্ভিস দেওয়ার সম্ভাবনা বেশি।’
‘মাহমুদুল হাসান জয় দলের নজরে আছে বরে জানান। ওর জন্য আরও সুযেগা আসবে। এইসব সুযোগ কাজে লাগিয়ে সে যাতে ১০০টি টেস্ট খেলতে পারে. এমনই প্রত্যাশা সাকিবের।
তিনি বলেন, ‘জানিয়ে সাকিব বলেন, জয় কিন্তু সিস্টেমের বাইরে নয়। অবশ্যই সিস্টেমে আছে। যখন ও ‘এ’ দলে রান পাওয়া শুরু করবে, ওর জন্য সুযোগ আসবে যখন, আমি চাই ও যেন ভালোভাবে নিতে পারে সুযোগটা, যেন ওর ক্যারিয়ারেও এরকম হয় যে ১০-১২-১৫ বছর খেলবে, বাংলাদেশ দলে, ১০০ টেস্ট খেলবে।’
টেস্ট ক্রিকেটে ভালো করতে হলে প্রথম শ্রেণির ম্যাচ বেশি বেশি খেলার পক্ষে মত দিয়েছেন অধিনায়ক। তিনি ভারতের বিষয়টি উদাহরণ হিসেবে সামনে এনে বলেন, ‘প্রথম শ্রেণির ম্যাচ আমাদের আরও বেশি খেলাতে হবে, যদি আমরা টেস্ট ক্রিকেটে সিরিয়াসলি উন্নতি করতে চাই। একজন ক্রিকেটারের ৫-৭-১০ ম্যাচের যে অভিজ্ঞতা, আর ৫০-৬০-৭০ ম্যাচ খেলার যে অভিজ্ঞতা, এটা অনেক পার্থক্য গড়ে দেয়। আমি নিশ্চিত, ভারতের যে ক্রিকেটাররা আসছে, ওদের প্রায় সবার একশর ওপরে প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলা আছে। যেখানে আমিই হয়তো এতদিন ধরে আছি… হয়তো আমি অনেক দিন ঘরোয়া খেলি না। তবে অন্যান্য যারা খেলে, একটা মৌসুমে কয়টা ম্যাচ খেলে? ৬টা থেকে ৮টা হয়তো। যদি এরকম খেলে, ১০ বছরে হবে ৮০টা ম্যাচ। আমরা যদি ৮০টা প্রথম শ্রেণির ম্যাচ কোনোভাবে ৫ বছরে খেলতে পারি, আমার কাছে মনে হয় অনেক ভালো টেস্ট ক্রিকেটার বের হবে।’
এমপি/এমএমএ/
