১৪৪ রানের পুঁজি নিয়েও জয়ের জন্য লড়ছে বাংলাদেশ

একদিকে পুঁজি মাত্র ১৪৪, অন্যদিকে ভারতের শক্তিশালী ব্যাটিং লাইন। বাংলাদেশের তাই জয়ের আশা ভাবাই যায় না। যতটা সম্ভব লড়াই করা যায়। কমিয়ে আনা যায় হারের ব্যবধান। কিন্তু সেই লড়াই করতে গিয়ে বাংলাদেশ খেলাকে এমনই জমিয়ে তুলেছে যে এখন জয়ের ভাবনাও ঈশান কোণে উঁকি দিতে শুরু করেছে। অসম্ভবকে সম্ভব করার পেছনে ছুটতে গিয়ে বাংলাদেশ ভারতের উইকেট তুলে নিয়েছে ৪টি। রান ৪৫। ভারতকে জিততে হলে করতে হবে আরও ১০০ রান।
বাংলাদেশের প্রয়োজন ৬ উইকেট। অক্ষর প্যাটেল ২৬ ও জয়দেব উনাতকাট ৩ রানে অপরাজিত।
আবহাওয়ার পূর্বাভাসই ছিল ঢাকা টেস্টের উইকেট সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বোলারদের পক্ষে কথা বলে উঠবে। টার্ন আসবে বেশি। সুবিধা পাবেন স্পিনাররা। তাই দৃশ্যমান হতে চলেছে তৃতীয় দিন দুই দলের উইকেট পড়েছে ১৪টি। বাংলাদেশের ১০টি ও ভারতের ৪টি। এর মাঝে শেষ সেশনে উইকেট পড়েছে ৭টি। বাংলাদেশের ১০ উইকেট ভারতের পেসার ও স্পিনাররা সমানভাবে ভাগাভাগি করে নিলেও ভারতের ইনিংসের পতন হওয়া ৪ উইকেটের সবকটি গেছে স্পিনারদের পকেটে। মিরাজ নিয়েছেন ৩টি ও সাকিব একটি।
উইকেট থেকে স্পিনাররা খুব বেশি টার্ন পাচ্ছেন। এর সুবিধা নিতে সাকিব ভারতের ইনিংসে যে ২৩ ওভার খেলা হয়েছে, মাত্র এক ওভার বোলিং করিয়েছেন পেসার দিয়ে। তাসকিন সেই এক ওভার করেছেন চতুর্থ বোলার হিসেবে বল হাতে তুলে নিয়ে।
সাকিব শুরুতেই বল হাতে তুলে নেন। অপর প্রান্তে তাইজুল। তিন নম্বরে আসেন মিরাজ। ইনিংসের প্রথম বলেই সাকিব উইকেট পেয়ে গিয়েছিলেন লোকেশ রাহুলকে
এলবিডব্লিউ ফাঁদে ফেলে। কিন্তু লোকেশ রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান। কিন্তু শুরুতেই ইনিংসে প্রথম বলে সাকিবের এমন টার্ন আর ব্যাটসম্যানের পরাস্ত হওয়া, পরে সংক্রামিত হয়ে পড়ে। যার ফায়দা পুরোটাই তুলে নিয়ে বাংলাদেশ এখন ম্যাচ জেতার স্বপ্নও দেখছে।
রিভিউ নিয়ে লোকেশ রাহুল সাকিবের হাত থেকে বেঁচে গেলেও পরে সেই সাকিবের হাতেই তাকে জীবন দিতে হয় পরের ওভারের প্রথম বলেই। সাকিবের বল পা বাড়িয়ে খেলতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ব্যাটের কানায় লেগে উইকেটের পেছনে নুরুল হাসান সোহানের গ্লাভসে গিয়ে জমা পড়ে। তবে ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের সবচেয়ে বেশি ভুগিয়েছেন মিরাজ। তাইজুলের চেঞ্জিং হিসেবে বল হাতে তুলেই সাফল্য পেয়ে যান তিনি। ভারতের ইনিংসের পতন হওয়া শেষ ৩ উইকেট যায় মিরাজের পকেটেই। যার দুটি ছিল স্টাম্পিং। স্টাম্পিং হওয়া দেখে যারা খেলা না দেখেছেন তারা ভাববেন আউট হওয়া দুই ব্যাটসম্যান শুভমান গিল ও চেতেশ্বর পূজারা ডাউন দ্য উইকেটে এসে খেলতে গিয়ে আউট হয়েছেন। দৃশ্যটা তা ছিল না। দু'জনেই মিরাজের বল পা বাড়িয়ে খেলতে গিয়ে পরাস্ত হন। তখন নুরুল হাসানের বিশ্বস্ত গ্লাভস দু'জনকেই স্টাম্পিং করে। প্রথমে আউট হন চেতেশ্বর পূজারা ৬ রানে, পরে শুভমান গিল ৭ রানে।
চারে সাধারণত বিরাট কোহলি ব্যাটিং করে থাকেন। কিন্তু দ্রুত উইকেট পতন হওয়ায় এবং দিনের খেলা শেষ সময় থাকায় বিরাট কোহলি না এসে নাইট ওয়াচম্যান হিসেবে অক্ষর প্যাটেলকে পাঠানো হয়। এখানে অক্ষর প্যাটেল সফল হলেও বিরাট কোহলিকে কিন্তু শেষ পর্যন্ত উইকেটে আসতে হয়েছে এবং আউটও হয়েছেন। কারণ তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে শুভমান গিল আউট হওয়ার পর বিরাট কোহলিকেই আসতে হয়েছে। মিরাজের একটি ডেলিভারি পা বাড়িয়ে খেলতে গিয়েছিলেন বিরাট কোহলি। বল চলে যায় ফরোয়ার্ড শর্ট লেগে দাঁড়ানো মুমিনুলের হাতে। একটু নিচুতে থাকা বলটি মুমিনুল ঝাঁপিয়ে পড়ে চমৎকারভাবে তালুবন্দী করেন। এমন আউট কোহলি মেনে নিতে পারেননি। পরে নিজের উপর নিজেই রাগ ঝাড়েন।
কোহলি আউট হওয়ার পর শ্রেয়াস আইয়ারকে না পাঠিয়ে আরেক নাইট ওয়াচম্যান হিসেবে পাঠানো হয় জয়দেব উনাদকাটকে। দুই নাইট ওয়াচম্যান কাটিয়ে দেন দিনের শেষ ৩ ওভার খেলে।
এমপি/এসজি
