আর্জেন্টিনার আটচল্লিশ, আটের পর ছত্রিশ

বিশ্বকাপ ফুটবল আর আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল যেন একই সুতোয় গাঁথা। দুই দেশের সমর্থক শুধু নিজ নিজ দেশের জনগণই নয়। বিশ্বের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অগণিত মানুষ এই দুই দেশের সমর্থক। দুই দেশের সাফল্য-ব্যর্থতায় অন্তর ছুঁয়ে যায় তাদের। বিশ্বকাপের ২২ আসরে এই দুই দেশ ফাইনাল খেলেছে ১৩ বার। ব্রাজিল ৭ বার খেলে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে পাঁচবার। আর্জেন্টিনা ৫ বার খেলে জয় পেয়েছে তিনবার।
ব্রাজিলের বিশ্বকাপ জয়ে লম্বা বিরতি পড়লেও আর্জেন্টিনার মতো দীর্ঘ হয়নি। ব্রাজিল প্রথম বিশ্বকাপ জিতেছিল ১৯৫৮ সালে। ১৯৩০ সালে প্রথম আসর খেলার পর সময়ের হিসেবে ২৮ বছর। সেখানে আর্জেন্টিনা প্রথম আসরে ফাইনাল খেলে রানার্সআপ হয়েছিল। কিন্তু তাদের শিরোপা জেতার জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছিল ৪৮ বছর। ১৯৭৮সালে নিজেদের মাটিতে তারা নেদারল্যান্ডসকে ৩-১ গোলে হরিয়ে শিরোপা জিতেছিল।
দ্বিতীয়বার শিরোপা জেতার জন্য তাদের খুব বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়নি। ম্যারাডোনা নামে এক ফুটবল জাদুকরের আগমনে তার একক নৈপুণ্যে ১৯৮৬ সালে আর্জেন্টিনা দ্বিতীয়বার শিরোপা জিতে পশ্চিম জার্মানিকে ৩-২ গোলে হারিয়ে। ১৯৯০ সালে পরের আসরেও ম্যারাডোনা আবারও একক প্রচেষ্টায় দলকে ফাইনালে নিয়ে গিয়েছিলেন। এবারও প্রতিপক্ষ ছিল পশ্চিম জার্মানি। এবার আর আর্জেন্টিনা পারেনি। জার্মানির কাছে হেরে যায় ১-০ গোলে। এরপর ১৯৯৪ সালের আসর খেলে ম্যারাডোনার বিদায় ঘটে। কিন্তু আর্জেন্টিনার বিদায়ের আগেই ম্যারাডোনার বিদায় ঘটে ড্রাগ কেলেঙ্কারিতে।
ম্যারাডোনার বিদায়ের সঙ্গে সঙ্গে যেন আর্জেন্টিনারও শিরোপা খরা বাড়তে থাকে। একটি করে আসর আসে, আর আর্জেন্টিনা দর্শকদের হতাশ করে। এভাবে কেটে যায় ৩৬ বছর। অবশেষে মেসির হাত ধরে তাদের ৩৬ বছরের খরার অবসান ঘটে কাতারের লুসাইল আইকনিক স্টেডিয়ামে ইতিহাসের সেরা ফাইনাল খেলা উপহার দিয়ে।
মেসির আগমনের আগ পর্যন্ত আর্জেন্টিনা ১৯৯০ সালের পর ২০১৪ সালের আগ পর্যন্ত ফাইনাল তো দূরের কথা, সেমি ফাইনালেও খেলতে পারেনি। মেসি বিশ্বকাপ খেলা শুরু করেন ২০০৬ সালে। প্রথম দুই আসরে আর্জেন্টিনা কোয়ার্টার ফাইনাল থেকেই বিদায় নেয়। ২০১৪ সালের আসরে ফাইনালে উঠলেও জামার্নির কাছে ১-০ গোল হেরে যায়। এরপর ২০১৮ সালের আসরে গ্রুপপর্ব থেকেই বিদায় নেয়। কিন্তু ২০২২ সালে মেসির শেষ বিশ্বকাপে আর আর্জেন্টিনার অপেক্ষার প্রহর দীর্ঘায়িত হয়নি।
এমপি/এসজি
