নাজমুল-জাকিরের ব্যাটে বাংলাদেশের আরামদায়ক সেশন
শীত এখনো জেঁকে বসেনি। শীতের সকালে রোদের মিষ্টি পরশে দেহ মনে অন্য রকম এক স্বস্তি এনে দেয়। তেমনি এক স্বস্তি আর আরামদায়ক অনুভূতি এনে দিয়েছেন নাজমুল হোসেন শান্ত ও অভিষিক্ত জাকির হাসান।
চট্টগ্রাম টেস্টের চতুর্থ দিনের প্রথম সেশন দুজনেই পার করে দিয়েছেন নির্বিঘ্নে। খেলেছেন হার না মানা ইনিংস। দেখা পেয়েছেন হাফ সেঞ্চুরি। নাজমুলেরটা ছিল তৃতীয়, জাকিরের অভিষেকেই। বাংলাদেশের রান বিনা উইকেটে ১১৯। দুজনের এইরান চতুর্থ ইনিংসে উদ্বোধনী জুটিতে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
সর্বোচ্চ রান জাভেদ ওমর ও নাফিস ইকবালের। ২০০৫ সালে জিম্বাবুয়ে বিপক্ষে তারা করেছিলেন। এই রানে আজ প্রথম সেশনে যোগ হয়েছে ৭৭ রান। নাজমুল ৬৪ ও জাকির ৫৫ রান নিয়ে লাঞ্চের পর আবার ব্যাট করতে নামবেন। জিততে হলে করতে হবে বিশ্ব রেকর্ড ৫১৩ রান! তার জন্য প্রয়োজন আরও ৩৯৪ রান। হাতে আছে ১০ উইকেট এবং পাঁচটি সেশন।
টেস্ট ক্রিকেটে চতুর্থ ইনিংসে সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড উইন্ডিজের। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তারা ৪১৮ রান করে ম্যাচ জিতেছিল। সেখানে বাংলাদেশের সামনে ৫১৩ রান করতে হবে। বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের যে রুগ্ন দশা, সেখানে ৫১৩ রান করা আকাশের চাঁদ হাতে ধরার মতনই। তবে বাংলাদেশ কেন বিশ্বের যেকোনো শক্তিশালী দেশের পক্ষেই এই রান করা অসম্ভবই!
দিনের প্রথম সেশনটি নির্বিঘ্নে পার করায়, বাংলাদেশ যে জয়ের ভীত রচনা করে ফেলেছে তা কিন্তু। দিতে হবে অনেক পথ পাড়ি। সামনে আছে ভয়ংকর বিপদ সংকল্প পথ। বল পুরানো হবে উইকেটে টার্ন করবে। যার প্রভাব দেখা যাবে তৃতীয় সেশনে গিয়ে কী রকম হয় ? তাই প্রথম সেশনে জাকির ও নাজমুল যে আস্তার পরিচয় দিয়েছেন সেটাকে ধরে রাখতে হবে। আপাতত দিতে হবে দ্বিতীয় সেশনে। তারা যদি নাও পারেন কিন্তু তাদের দেখিয়ে দেওয়া পথে চলতে হবে তখন পরবর্তী ব্যাটসম্যানদের। এখন দেখার পালা বাংলাদেশ ম্যাচটাকে কতটা জমি তুলতে পারে। যেতে পারে কতদূর?
তৃতীয় দিন শেষ বিকেলে নাজমুলও জাকির যেখানে শেষ করেছিলেন, চতুর্থ দিন তারা তা ধরে রাখার প্রত্যয় নিয়ে মাঠে নামেন সেখানে তারা সফল হন। কোনো রকম সুযোগ দেননি ভারতীয় বোলারদের। বাংলাদেশের দুই ব্যাটসম্যান ষকে কোনোভাবেই বিপদে ফেলতে না পারার কারণে ভারতে বোলাররা অন্য পথে হেঁটে ছিলেন। মোহাম্মদ সিরাজ ব্যাটসম্যানদের মন সংযোগে চিড় ধরানোর চেষ্টা করেছিলেন, যেমনটি করেছিলেন প্রথম ইনিংসে লিটনের ক্ষেত্রে এবং সফলও হয়েছিলেন। এবার তিনি চেয়েছিলেন নাজমুলকে উত্তেজিত করতে কিন্তু নাজমুল তার পাতা ফাঁদে পা দেননি। প্রথম ইনিংসে প্রথম বলেই আউট হয়া নাজমুল দেখিয়ে চলেছেন অসম্ভব দৃঢ়তা। ১০৮ বলে তুলে নেন ক্যারিয়ারের তৃতীয় হাফ সেঞ্চুরি। বাউন্ডারি ছিল ছয়টি। তাকে অনুসরণ করে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন অভিষেকেই জাকির হাসান। তিনি বল খেলেন ১০১টি। বাউন্ডারি ছিল সাতটি। তার প্রথম ফিফটি আসে বাউন্ডারি থেকে আকসার প্যাটেলের বলে।
এমপি/এসএন