বাংলাদেশকে ৫১২ রানের টার্গেট দিয়েছে ভারত
যে উইকেটে বাংলাদেশের ব্যাটাররা ছটফট করেছেন, সেই উইকেটে ভারতের ব্যাটাররা রানের ফুলঝরি ছোটাচ্ছেন। তাদের রানের ফুলঝরিতে চাপে পড়েছে বাংলাদেশ। সেঞ্চুরি করেছেন শুভমান গিল ও চেতেশ্বর পূজারা। দুইজনের সেঞ্চুরিতে ভারত দ্বিতীয় ইনিংসে ২ উইকেটে ২৫৪ রান করে ইনিংস ঘোষণা করেছে। হতশ্রী ব্যাটিংয়ে নিমজ্জিত বাংলাদেশ দলকে তারা ৫১২ রানের টার্গেট দিয়েছে।
দিনের বাকি সময় ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ দল অবশ্য কোনো বিপদে পড়েনি। দুই ওপেনার জাকির হাসেন ও নাজমুল হোসেন নির্বিঘ্নে দিন পার করে দিয়ে করেছেন ৪২ রান। নাজমুল ২৫ ও জাকির ১৭ রানে অপরাজিত। জয়ের জন্য বাংলাদেশকে করতে হবে আরও ৪৭১ রান। প্রথম ইনিংসে ভারত করেছিল ৪০৪ রান। বাংলাদেশের সংগ্রহ ছিল ১৫০ রান।
প্রথম দুদিন উইকেটের যে চরিত্র ছিল তৃতীয় দিনে এসে সেখানে ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। প্রথম দিন ৬ উইকেট পড়লেও ভারতের ব্যাটাররা রান করতে বেশ সমস্যায় পড়েছিলেন। দ্বিতীয় দিন দুই দলের উইকেট পড়েছে ১২টি। সেখানে তৃতীয় দিন এসে দুই দলের উইকেট পড়েছে মাত্র ৪টি। রান উঠেছে ৩১৩। দিনের শুরুতে ১৭ রান যোগ করে বাংলাদেশের অবশিষ্ট দুই উইকেট পড়ে যাওয়ার পর ভারত দুই উইকেট হারিয়ে রান সংগ্রহ করে ২৫৪। এরপর বাংলাদেশ সংগ্রহ করে বিনা উইকেটে ৪২। অবশ্য দ্বিতীয় ইনিংসে ভারতের স্বাচ্ছন্দ্যে রান করার একটি অন্যতম কারণ ছিল বাংলাদেশের বোলার ঘাটতি।
পাঁচজন বোলারের মাঝে দু'জনই বল হাতে নিতে পারেননি। সাকিব কাঁধের ইনজুরি এবং এবাদত পিঠের সমস্যার কারণে বোলিং করতে পারেননি। সাকিব অবশ্য প্রথম ইনিংসেই কাঁধের সমস্যায় ভুগছিলেন। সাকিব প্রথমে বোলিং করলেও কাঁধের সমস্যার পর প্রথম ইনিংসে পরে আর বোলিং করেননি। যে কারণে খালেদ, তাইজুল ও মিরাজ এই তিনজনের পক্ষে সম্ভব হয়নি ভারতের শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনকে আটকে রাখা। অবস্থা সামাল দিতে ইয়াসির আলী, নাজমুল হোসেন শান্ত এমনকি লিটন দাসকে দিয়েও বোলিং করিয়েছেন সাকিব। কিন্তু তাতে কোনো ফায়দা হয়নি। ফলে ওভারপ্রতি চারের উপরে রান সংগ্রহ করে ভারত। পূজারার সেঞ্চুরি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তারা ৬১.৪ ওভারে ২ উইকেটে ২৫৪ রানে দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করে।
বাংলাদেশের বোলিং দুর্বলতার কারণে দ্বিতীয় ইনিংসে ভারতের যে ব্যাটারই এসেছেন, তারাই কম বেশি রান পেয়েছেন। লোকেশ রাহুল ও শুভমান গিলের উদ্বোধনী জুটিতেই আসে ৭০ রান। যা এ বছর ভারতের উদ্বোধনী জুটিতে সর্বোচ্চ। রাহুল ২৩ রান করে খালেদের বলে পুল করতে গিয়ে ফাইন লেগে তাইজুলের হাতে ধরা পড়ে বিদায় নিলেও শুভমান ফিরেন ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি করে। মিরাজের বলে পরপর দুই বাউন্ডারিতে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন তিনি। ১৪৭ বলে সেঞ্চুরি করার পর অবশ্য শুভমান গিল খুব বেশি দূর যেতে পারেননি।
পরের ওভারে উইকেট ছেড়ে বেরিয়ে এসে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে মিড উইকেটে বদলি ফিল্ডার মাহমুদুল হাসান জয়ের হাতে ধরা পড়েন। পূজারার সঙ্গে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে তিনি ১১৩ রান যোগ করেন। গিল আউট হওয়ার পর পূজারার সঙ্গে বিরাট কোহলি জুটি বেঁধে দলের রান ভারী করতে থাকেন।
পূজারা ৮৭ বলে হাফসেঞ্চুরি পূর্ণ করার পর এগুতে থাকেন সেঞ্চুরির দিকে। প্রথম ইনিংসে তিনি অল্পের জন্য সেঞ্চুরি পাননি। ৯০ রান করে আউট হয়েছিলেন। এবার আর ব্যর্থ হননি। পঞ্চাশ করার পর অনেকটা ওয়ানডে মেজাজে খেলে ১৩০ বলে করেন ১০২ রান। হাফ সেঞ্চুরির পর সেঞ্চুরিও করেন বাউন্ডারি মেরে। এটি ছিল তার ক্যারিয়ারের ১৯তম সেঞ্চুরি। সর্বশেষ দুই সেঞ্চুরির মাঝে পূজারার সময় ব্যবধান ছিল প্রায় ৩ বছরের মতো। ২৯ ম্যাচ খেলে ১৪ বার ৫০ পেরোনো ইনিংস খেললেও সেঞ্চুরি থেকে গিয়েছিল অধরাই। এমনকি প্রথম ইনিংসে তিনি ৯০ রান করে আউট হন। সেঞ্চুরি করার সঙ্গে সঙ্গেই অধিনায়ক লোকেশ রাহুল ইনিংস ঘোষণা করেন কোহলির সঙ্গে তৃতীয় উইকেট জুটিতে ৭৫ রান যোগ করেন ৭৩ বলে। ১৯ রানে অপরাজিত থাকেন কোহলি। খালেদ ৫১ ও মিরাজ ৮২ রানে নেন একটি করে উইকেট।
এমপি/এসজি