‘মিরাজ দুর্দান্ত এক চরিত্র’
অনূর্ধ্ব-১৯ দলে মেহেদি হাসান মিরাজ অধিনায়কের পাশাপাশি ছিলেন ব্যাটিং অলরাউন্ডার। কিন্তু জাতীয় দলে অভিষেকের পর তিনি হয়ে উঠেন বোলিং অলরাউন্ডার। এজন্য অবশ্য মিরাজ নিজেই দায়ী। কারণ তার অভিষেক হয়েছিল টেস্ট ম্যাচ দিয়ে। প্রতিপক্ষ ছিল ইংল্যান্ড। চট্টগ্রামে অভিষেক ইনিংসেই তুলে নেন ৬ উইকেট। এরপরও বাংলাদেশ ম্যাচ হেরেছিল ২২ রানে।
তবে মিরপুরে দ্বিতীয় টেস্টে বাংলাদেশ ১০৮ রানে জিতে সিরিজে সমতা এনেছিল। আর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ছিল প্রথম টেস্ট জয়। আর এটি সম্ভব হয়েছিল মিরাজের কারণেই। উভয় ইনিংসেই তিনি ৬টি করে ১২টি উইকেট নিয়েছিলেন। পরে হয়েছিলেন সিরিজ সেরা। কী রঙিন অভিষেক। কিন্তু এসময় তিনি ব্যাট হাতে মোটেই ভালো করতে পারছিলেন না। একে একে তার অভিষেক হয় বাকি দুই ফরম্যাটেও। কিন্তু ব্যাট হাতে ধারাবাহিক ভালো হতে পারেনি। যদিও তার টেস্টে সেঞ্চুরি আছে। ওয়ানডেতে ভারতের আগে আফগানিস্তানের বিপক্ষেও আছে একটি ম্যাচ উইনিং ইনিংস। দুটি ম্যাচই বাংলাদেশ নিশ্চিত হারের মুখে ছিল। এভাবেই তিনি ক্রমেই পরিণত হচ্ছেন এক জাত অলরাউন্ডার হিসেবে।
টাইগারদের কোচ রাসেল ডমিঙ্গো মিরাজকে নিয়ে বলেন, ‘দলের মাঝে সে (মিরাজ) এক দুর্দন্ত চরিত্র। দলের সবার সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করার ক্ষেত্রে সে দারুণ এক ছেলে।’
তিনি বলেন, ‘মিরাজ এমন নয় যে সে এবারই (ভারতের বিপক্ষে) প্রথম করেছে। এর আগেও আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৪৬ রানে ৬ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর সে দলকে জিতিয়ে ফিরেছে।’
মিরাজের এমন নৈপুণ্যকে কোচ আখ্যা দিয়েছেন দলের নীরব নায়ক হিসেবে। তিনি বলেন, ‘দলে সে একজন নীরব নায়কের মতো। তিন ফরম্যাটেই সে ধারাবাহিক। যেকোনো জায়গায় ব্যাটিং করতে পারে। টেস্ট ম্যাচে তার সেঞ্চুরি আছে। চাপ খুব ভালোভাবে সামলাতে পারে। খুব সম্ভবত ওয়ানডে র্যাঙ্কিংয়ে বোলিংয়ে একসময় দুই কিংবা তিনে ছিল। তার উপর সব সময় নির্ভর করা যায়।’
মিরাজের বর্তমানে ওয়ানডে র্যাঙ্কিং সাত। গত বছর মে-তে তিনি ছিলেন দুইয়ে। এ বছর জুলাইয়ে তিনি ছিলেন তিনে।
বল হাতে ভালো করা মিরাজের জন্য নতুন কিছু নয়। সর্বশেষ জিম্বাবুয়ে সফরে বাংলাদেশ সিরিজ হারলেও তিনি তিন ম্যাচেই উইকেট পেয়েছিলেন। এর আগে উইন্ডিজ সফরেও তিনি সফল ছিলেন। তিন ম্যাচে উইকেট পেয়েছিলেন ৭টি। তার আগে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরেও তার নামের পাশে উইকেট জ্বলজ্বল করছিল। তিন ম্যাচে উইকেট পেয়েছিলেন ৬টি। প্রথম ম্যাচে ৪ উইকেট পাওয়া ছিল বিশেষ কিছু। প্রথম চার ওভারে ৩৮ রান দিয়ে ছিলেন উইকেটশূন্য। পরের ছয় ওভারে ২৩ রান দিয়ে নিয়েছিলেন ৪ উইকেট।
ডমিঙ্গো বলেন, ‘এরকম পরিস্থিতিতে মিরাজ সব সময় নিজেকে মেলে ধরে। ও যদি রান বেশি দিয়েও ফেলে, পরে কঠিন সময়ে দলকে ঠিকই ম্যাচে ফিরিয়ে আনতে পারে। আমি তাকে সব সময় তালিকার প্রথম দিকেই রাখি। তাকে আমি যথেষ্ট মূল্যায়ন করি।’
এমপি/এসজি