স্পেনকে হারিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন জাপান
দুই ম্যাচ শেষে ৪ পয়েন্ট নিয়ে স্পেন যেমন শেষ ষোল নিশ্চিত করতে পারেনি তেমনি আবার ১ পয়েন্ট নিয়ে ‘ই’ গ্রুপে সবার নিচে থাকা চারবারের চ্যাম্পিয়ন জামার্নির সম্ভাবনাও জাগ্রত। তবে স্পেনের রাস্তাটা যতটা সহজ, ততটাই কঠিন জামার্নির রাস্তা। জাপানের কাছে স্পেন হারলে আর জার্মানির বিপক্ষে কোস্টারিকা জয়ী হলে তবেই বাদ পড়বে স্পেন। তবে সেই সমীরণ কঠিন। কিন্তু জামার্নির জয়ে ভিন্ন আর কোনও রাস্তা নেই। আবার তাদের প্রতিপক্ষ কোস্টারিকা। জাপান হেরে গেলে তারা ড্র করলেই শেষ ষোল খেলবে। কিন্তু এসব হিসেব-নিকেশ কিছুই হয়নি। পাঁচ বারের চ্যাম্পিয়ন জামার্নির বিপক্ষে প্রথম গোল হজম করে পরে দুই গোল দিয়ে কাতার বিশ্বকাপে অন্যতম সেরা অঘটনের জন্ম দেওয়া জাপান এবার ২০১০ সালের চ্যাম্পিয়ন স্পেনকে হারিয়েছে জার্মানির মতোই। প্রথমার্ধে গোল হজম করে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই দুই গোল দিয়ে ম্যাচ নিজেদের করে নেয়। এর আগে তিনবার ২০০২, ২০১০ ও ২০১৮ সালে দ্বিতীয় পর্বে খেলার পর এবার গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে শেষ ষোলতে জায়গা করে নেয়। তবে হেরেও স্পেন গোল গড়ে গ্রুপ রানার্সআপ হয়ে উঠে গেছে শেষ ষোলতে। এদিকে
কোস্টারিকাকে ৪-২ গোলে হারিয়ে জার্মানিও নিজেদের পয়েন্ট ৪ করে নিয়েছিল। তবে কোস্টারিকার বিপক্ষে নিজেদের প্রথম ম্যাচে স্পেনের ৭-০ গোলে জয়ই তাদের হাতিয়ার হয়ে উঠে। গোল গড়ে বাদ পড়ল টানা দ্বিতীয়বারের মতো জার্মানি।
খলিফা আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে যখন জাপান মন ভুলানো এ রকম চিত্রনাট্য রচনা করেছে তখন আর বায়াত স্টেডিয়ামে চলছে কোস্টারিকা-জার্মানির শঙ্কার শেষ ষোলতে খেলা। ১০ মিনিটে গেনব্রের গোলে জামার্নির আশা জেগে উঠলে ৫৮ মিনিটে কোস্টারিকার টাদেজার গোলে তা আর নিভতে শুরু করে। ৭০ মিনিটে ভারগেজ গোল করে আবার কোস্টারিকার আশা জাগিয়ে তুলেন। শঙ্কায় পড়ে যায় স্পেনের শেষ ষোলতে যাওয়া। ৭৩ মিনিটে হারভেজ জার্মানির হয়ে গোল পরিশাধ করে কোস্টারিকার সম্ভাবনা আবার নিভিয়ে দিয়ে স্পেনের সম্ভাবনা জাগিয়ে তুলেন। ৮৫ মিনিটে হারভেজ আবারও গোল করে কোস্টারিকার সম্ভাবনার মৃত্যু ঘটিয়ে স্পেনের রাস্তা পরিষ্কার করে দেন। ৮৯ মিনিটে ফুলক্রগের গোলে জামার্নির আফসোস বাড়িয়ে তুলে। কারণ গোল গড়ে স্পেনকে পেছনে ফেলতে হলে তাদের সাত গোলের ব্যবধানে জিততে হতো। তাই তাদের প্রয়োজন ছিল। কিন্তু সেই সময় আর তাদের হাতে ছিল না। ফরে ৪-২ গোলে ম্যাচ জিতেও জার্মানিকে টানা দ্বিতীয়বারের মতো গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিতে হয়।
শেষ ষোলতে ৫ ডিসেম্বর এফ গ্রুপ রানার্সআপ ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে জাপান এবং পরের দিন একই গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন মরক্কোর বিপক্ষে খেলবে স্পেন।
খলিফা আর্ন্তজাতিক স্টেডিয়ামে ১১ মিনিটে সিজারের ক্রস থেকে মোরাতুয়া হেড করে নিশানা ভেদ করে স্পেনকে১-০ গোলে এগিয়ে নেন। এরপর ২৩ থেকে ২৫ মিনিটে মোরাতুয়ার দুই দুইটি প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। প্রথমার্ধে জাপান ছিল পুরোটাই কোনঠাসা। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে তারা জেগে উঠে।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই ৪৮ মিনিটে গোল পরিশোধ করে জাপান। স্পেনের রক্ষণভাগের একজন খেলোয়াড় গোলরক্ষক উনাই সিমনকে ব্যাক পাস দিলে তিনি সেই বল উঁচু শটে নিজেদের দলের আরেকজন খেলোয়াড়কে দিলে তিনি সেই বল নিয়ন্ত্রণে নিতে পারেননি। তার কাছ থেকে বল কেড়ে নিয়ে ২ মিনিট আগে বদলি হিসেবে মাঠে নামা ডোয়ান বাম পায়ের কোনাকুনি শটে গোল করেন। এ্ই গোলের উল্লাসের রেশ কাটতে না কাটতেই জাপান দ্বিতীয় গোল পেয়ে যায় ৫১ মিনিটে। বল মাঠের বাইরে আগ মুহূর্তে কোনও রকমে ক্রস করেন কাউরো মিটোমা। তার সেই ক্রস থেকে তানাকা হেড করে জাপানকে এগিয়ে নেন ২-১ গোলে। রেফারি ভিএআর পরীক্ষা করে গোলের নির্দেশ দিলে জাপানিরা আরেক দফা উল্লাস করে।
গোল গড়ে বড় ব্যবধানে স্পেন এগিয়ে থাকায় এবং অপর ম্যাচে জামার্নি জয়ের পথে থাকায় স্পেনের হারেও শেষ ষোলতে খেলায় সমস্যা ছিল না। তারপরও ইনজুরির টাইমে গিয়ে তাদের দুই দুইটি চেষ্টা সফলতার মুখ দেখতে পারেনি। স্পেন একটি গোল করলেই খেলা ড্র হতো। তখন জাপান বাদ পড়ত আর গোল গড়ে জামর্নি গ্রুপ রানার্সআপ হয়ে শেষ ষোলতে জায়গা পেত!
এসআইএইচ