‘ক্ষুধার্ত’ ঘানাকে দমিয়ে রাখতে চায় কোরিয়া
হার দিয়ে বিশ্বকাপ শুরু করেছে ঘানা। দক্ষিণ কোরিয়া তাদের উদ্বোধনী ম্যাচ করেছে গোলশূন্য ড্র। এতে ‘এইচ’ গ্রুপে চাপে রয়েছে উভয় দল। চাপমুক্ত হতে জয়ের ক্ষুধা বেড়েছে ঘানার। অপরদিকে ‘ক্ষুধার্ত’ প্রতিপক্ষকে দমিয়ে রাখতে চায় দক্ষিণ কোরিয়া।
আগামীকাল বিশ্বকাপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে মুখোমুখি হবে ঘানা এবং দক্ষিণ কোরিয়া। বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭টায় আল রায়ানে এডুকেশন সিটি স্টেডিয়ামে গড়াবে দুই দলের লড়াই।
মাঠে ঘানা-দক্ষিণ কোরিয়ার ফুটবলারদের লড়াই শুরুর আগে ‘বাকযুদ্ধে’ ভালোই লড়লেন দুই দলের কোচ। রবিবার (২৭ নভেম্বর) সংবাদ সম্মেলনে কোরিয়া বস পাওলো বেন্তো বলেন, ‘আমি আগেই বলেছি যে আমি কোনো চাপ অনুভব করি না, কখনো করিনি এবং করব না। (ঘানার বিপক্ষে) দ্বিতীয় ম্যাচে জয়ের জন্যই মাঠে নামব আমরা।’
বেন্তোর মতে, নির্ভার রয়েছে তার শিষ্যরাও, ‘আমি কোনো চাপ অনুভব করি না। খেলোয়াড়রাও আমার মতো করে অনুভব করতে চায়, কিন্তু আমি জানি তারা ভিন্ন সংস্কৃতি থেকে এসেছে। আমাদের জন্য কঠিন একটি ম্যাচ। তবে ভালো করার সামর্থ্য আছে আমাদের।’
বেন্তোর শিষ্যদের সেই সামর্থ্যে ঘাটতি ফুটিয়ে তুলতে চান অটো অ্যাডো, ‘আমরা দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে ক্ষুধার্ত একটি দল দেখতে পাব। শেষ ম্যাচেও একই ক্ষুধা থাকবে। সবাই ভালো খেলতে এবং অনুশীলনের জন্য ক্ষুধার্ত। আমরা কোরিয়ার বিপক্ষে প্রতিটি আক্রমণ থামানোর চেষ্টা করব।’
নিজ পরিকল্পনা আড়ালেই রেখেছেন ঘানা কোচ অ্যাডো। তবে তাদের থামানোর পরিকল্পনা কিছুটা হলেও খোলাশা করেছেন বেন্তো, ‘ঘানা দারুণ একটি দল এবং শীর্ষ পর্যায়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী খেলোয়াড়ের প্রতি আমাদের মহান এবং পরম শ্রদ্ধা রয়েছে। আমাদের নিজেদের কৌশলের মাধ্যমে চেষ্টা করতে হবে।’
কোরিয়া কোচ যোগ করেন, ‘আমরা নিজেদের দক্ষতা সম্পর্কে সচেতন এবং জানি যে ঘানা কতটা ভালো। এটি এমন একটি ম্যাচ হবে যেখানে কিছু মুহূর্তের মধ্যে আমাদের খেলা নিয়ন্ত্রণ করা ক্ষমতা থাকবে। আমরা দ্রুত ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিতে চাই এবং সেই মুহূর্তগুলোও যখন তারা আক্রমণে থাকবে।’
ম্যাচ ফ্যাক্ট
২০১৪ সালের জুনে প্রীতি ম্যাচের পর প্রথমবার মুখোমুখি হবে দক্ষিণ কোরিয়া এবং ঘানা। সেই দেখায় জর্ডান আইউর হ্যাটট্রিক ব্ল্যাক স্টাররা জিতেছিল ৪-০ গোলে।
বিশ্বকাপে আফ্রিকান দেশের বিপক্ষে দক্ষিণ কোরিয়া তাদের তিন ম্যাচের প্রতিটিতে দুটি করে গোল করেছে—২০০৬ সালে টোগোকে হারায় ২-১ ব্যবধানে, ২০১০ সালে নাইজেরিয়ার সঙ্গে ড্র করে ২-২ গোলে এবং ২০১৪ সালে আলজেরিয়ার কাছে হারে ৪-২ গোলে।
বিশ্বকাপে টানা পাঁচ ম্যাচ জয়হীন ঘানা (২ ড্র, ৩ হার)। আরেকটি হারে টানা দ্বিতীয়বার টুর্নামেন্টের প্রথম রাউন্ড থেকে বিদায় নেবে। ২০১৪ সালে প্রথম রাউন্ডে থেমেছিল আফ্রিকান দলটি। রাশিয়া বিশ্বকাপে ছিল না ঘানা। তবে বিশ্বকাপে প্রথম দুই অংশগ্রহণে (২০০৬ এবং ২০১০ সংস্করণে) নকআউট খেলেছিল তারা।
দক্ষিণ কোরিয়া তাদের শেষ পাঁচ বিশ্বকাপ ম্যাচের তিনটিতে গোলের দেখা পায়নি। এ বছর সবশেষ চার ম্যাচের দুটিতে কোনো অন-শট ছিল না তাদের।
বিশ্বকাপে ঘানা তাদের সবশেষ ৬ ম্যাচের প্রতিটিতে গোল করেছে। টুর্নামেন্টে আফ্রিকান দলগুলোর মধ্যে শুধুমাত্র নাইজেরিয়া (১৯৯৪ থেকে ১৯৯৮ সালের মধ্যে ৮টি) টানা বেশি ম্যাচে গোল করেছে।
বিশ্বকাপে আগের ১০ অংশগ্রহণে দক্ষিণ কোরিয়া কখনোই গ্রুপপর্বে তাদের দ্বিতীয় ম্যাচ জিততে পারেনি (৪ ড্র, ৬ হার)। সবশেষ তিন সংস্করণেই হেরেছে দ্বিতীয় ম্যাচ: ২০১৪ সালে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ১-৪, ২০১৪ সালে আলজেরিয়ার বিপক্ষে ২-৪ গোলে এবং ২০১৮ সালে মেক্সিকোর বিপক্ষে ১-২ গোলে।
আরএ/