হার্ডম্যানের বেফাঁস মন্তব্যের জবাব দেবে ক্রোয়েশিয়া
প্রতিপক্ষকে ভয় দেখাতে বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করে দলগুলো। কিন্তু জন হার্ডম্যান যা করলেন তা মোটেও শালীন ছিল না। কানাডা কোচের অশালীন (প্রকাশের অযোগ্য) আক্রমণে সমালোচনার রীতিমত ঝড় উঠেছে ক্রোয়েশিয়ায়। তবে শান্ত থাকছে তাদের জাতীয় দল। হার্ডম্যানের বেঁফাস মন্তব্যের জবাব আগামীকাল মাঠে দিবেন লুকা মদ্রিচরা এমনই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন কোচ জ্লাটকো ডালিচ।
বেলজিয়ামের বিপক্ষে জয় দিয়ে বিশ্বকাপ শুরু করতে পারেনি কানাডা। তবে ম্যাচে বেলজিয়ানদের জীবন দুবির্ষহ করে তুলেছিল তারা এবং মাঠ ছাড়ে ১-০ গোলের হার নিয়ে। ওই ম্যাচের পরই ক্রোয়েশিয়াকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে কথা বলেন হার্ডম্যান। তার সেই বক্তব্যের পর কানাডার কোচের নগ্ন কার্টুন দিয়ে পত্রিকা ছাপিয়েছে ক্রোয়েশিয়ার কিছু সংবাদমাধ্যম।
কাল আল রায়ানে খলিফা স্টেডিয়ামে ‘এফ’ গ্রুপের ম্যাচে মুখোমুখি হবে ক্রোয়েশিয়া ও কানাডা। ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত ১০টায়, যা দুই দলের জন্যই বাঁচা-মরার লড়াই। কেন না, গতবারের রানার্সআপরা কাতার বিশ্বকাপ শুরু করে মরক্কোর সঙ্গে ড্র করে। এমনিতেই বিদায়ের শঙ্কা, তার ওপর আবার ‘বাকযুদ্ধ’- সবমিলে ম্যাচটি ঘিরে উত্তেজনার পারদ এখন তুঙ্গে।
শনিবার (২৬ নভেম্বর) সংবাদ সম্মেলনে হার্ডম্যানের বেফাঁস মন্তব্যের প্রসঙ্গ উঠতেই ডালিচ বলেন, ‘ক্রোয়েশিয়ান দল সবার কাছ থেকে সম্মান পাওয়ার যোগ্য। ওরকম কিছু বলা সত্যিই ভালো নয়, তবে এটা তার অধিকার (বাক-স্বাধীনতা)। আর আমাদের মাঠে দেখাতে হবে যে আমরা কতটা ভালো। কানাডা বেলজিয়ামের বিপক্ষে দুর্দান্ত খেলেছে। তাই আমাদের প্রথম খেলার চেয়ে অনেক বেশি শক্তি থাকা দরকার।’
হার্ডম্যান অবশ্য নিজের ভুল বুঝতে পেরেছেন। বলেছেন, ‘আমি ক্রোয়েশিয়ান দল এবং ক্রোয়েশিয়ান জনগণকে অসম্মান করিনি।’ একইসঙ্গে কালকের ম্যাচকে সামনে রেখে কানাডা কোচ বলেন, ‘এটি এই দলের জন্য নরক যন্ত্রণা। আমাদের একটি নরক ম্যাচ আসছে। তবে আমরাও প্রস্তুত।’
কানাডার সেই প্রস্তুতি বৃথা করতে মুখিয়ে ইভান পেরিসিচ। ক্রোয়াট মিডফিল্ডার শনিবার বলেন, ‘পরের দুই ম্যাচে আমাদের আরও অনেক বেশি কিছু দেখাতে হবে। (মরক্কো ম্যাচে) আক্রমণে আমরা ভালো ছিলাম না। রক্ষণে যা করেছি তা ধরে রাখতে হবে। আমাদের সত্যিকারের ক্রোয়েশিয়াকে দেখাতে হবে।’
ম্যাচ ফ্যাক্ট
* ফুটবলে প্রথমবার মুখোমুখি হবে ক্রোয়েশিয়া এবং কানাডা।
* বিশ্বকাপে তিনবার কনকাকাফের দলের বিপক্ষে লড়েছে ক্রোয়েশিয়া। ১৯৯৮ সালে জ্যামাইকাকে হারিয়েছে ৩-১ ব্যবধানে। এরপর ২০০২ এবং ২০১৪ সংস্করণে হেরেছে মেক্সিকোর বিপক্ষে।
* কানাডা বিশ^কাপে তাদের চার ম্যাচের প্রতিটিতে গোল না করেই হেরেছে। টুর্নামেন্টে গোল না করে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলার রেকর্ড এটাই।
* কাতারে মরক্কোর সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করেছে ক্রোয়েশিয়া। টুর্নামেন্টে টানা ১১ ম্যাচ পর গোলহীন ম্যাচ কাটিয়েছে তারা।
* বেলজিয়ামের বিপক্ষে হারের ম্যাচে ২২টি শট নিয়েছিল কানাডা, যা বিশ্বকাপের এক ম্যাচে তাদের আগের রেকর্ডের দ্বিগুন (১৯৮৬ সালে রাশিয়ার বিপক্ষে ১১টি শট নিয়েছিল)। যাইহোক, তাদের ২২ শটের মাত্র ৩টি ছিল লক্ষ্যে। শতাংশের হিসেবে যা ১৪।
* মরক্কোর বিপক্ষে ক্রোয়েশিয়া তাদের প্রথম ম্যাচে মাত্র পাঁচটি শট নেয়, যা বিশ^কাপের এম ম্যাচে তাদের সর্বনিন্ম। টুর্নামেন্টের ২০১৮ সংস্করণে ক্রোয়াটদের ম্যাচ প্রতি গড় শট ছিল ১৬.১।
* বিশ্বকাপে কানাডা তাদের চার ম্যাচে ৫০ শট থেকে এখনো গোল করতে পারেনি। শুধুমাত্র একটি দেশ তাদের প্রথম পাঁচ বিশ্বকাপ ম্যাচে গোল করতে ব্যর্থ হয়েছিল। সেই দেশটি হলো বলিভিয়া।
এমএমএ/