প্রথম ম্যাচ হারের পর এবার কতদূর যাবে আর্জেন্টিনা?
আর্জেন্টিনার পর জামার্নি প্রথম ম্যাচে হারের পর কাতার বিশ্বকাপে নতুন করে একটি বার্তা ভাসতে থাকে এরপর অঘটনের শিকার হবে কে?
জামার্নির হারের আগেই ফ্রান্স, ইংল্যান্ড, স্পেন নিজেদের প্রথম ম্যাচ বেশ ভালোভাবে পার হয়ে যাওয়াতে ইঙ্গিতটা ছিল ব্রাজিলের দিকেই। কিন্তু এমন বার্তা বাতাসেই ভেসে থাকতে দিয়েছে ব্রাজিল। মাটিতে নামতে দেয়নি। নান্দনিক ফুটবল শৈলী উপহার দিয়ে তারা সার্বিয়াকে বাধা হতে দেয়নি।
ব্রাজিল পর্ব শেষ হওয়ার পর এবার নতুন করে বার্তা ভাসছে আর্জেন্টিনাকে নিয়ে। সেই বার্তা আজই কি আর্জেন্টিনার বাজবে কাতার বিশ্বকাপের বিদায় ঘণ্টা, নাকি মেক্সিকোকে হারিয়ে টিকে থাকবে মেসির শেষ বিশ্বকাপের শিরোপা জেতার মিশনে।
বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে হারের ঘটনা আর্জেন্টিনার জন্য নতুন কিছু নয়। এবারের আগে আরও পাঁচবার তারা এভাবে প্রথম ম্যাচে হেরেছিল। এই সব হারের পরবর্তী অভিজ্ঞতা আবার আর্জেন্টিনার জন্য সুখকর ছিল না। ১৯৯০ সাল ছাড়া বাকি চারবারই তারা সর্বোচ্চ দ্বিতীয় রাউন্ড পর্যন্ত যেতে পেরেছিল। ১৯৯০ সালে তারা ফাইনালে গিয়ে হেরেছিল জামার্নির কাছে।
এবার কি আর্জেন্টিনা ১৯৯০ সাল ফিরিয়ে আনবে নাকি ১৯৩৪, ১৯৫৮, ১৯৭৪, ১৯৮২ সাল ফিরিয়ে আনবে? ১৯৩৪ ও ১৯৫৮ সালে তারা প্রথম পর্বই পার হতে পারেনি। ১৯৩৪ সালের খেলা ছিল নক আউট পদ্ধতিতে। সেখানে সুইডেনের কাছে তারা ৩-২ গোলে হেরে বিদায় নিয়েছিল। ১৯৫৮ সালে প্রথম ম্যাচে হেরেছিল পূর্ব জামার্নির কাছে ৩-১ গোলে। এরপর উত্তর আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ৩-১ গোলে জয়ী হলেও গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে চেকোশ্লাভাকিয়ার কাছে ৬-১ গোলে গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিয়েছিল।
১৯৭৪ সালে প্রথম ম্যাচে পোলােন্ডের কাছে ৩-২ গোলে হারলেও ইতালির সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র ও হাইতির বিপক্ষে ৪-১ গোলে জিতে দ্বিতীয় পর্বে জেতে পেরেছিল। দ্বিতীয় পর্বে নেদারল্যান্ডস (৪-১) ও ব্রাজিলের (২-১) হেরে পশ্চিম জামার্নির সঙ্গে (১-১) ড্র করে গ্রুপে সবার নিচে থেকে বিদায় নিয়েছিল। ১৯৮২ সালে আর্জেন্টিনা প্রথম ম্যাচ হেরেছি। প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন হিতেবে খেলেতে নেমে।
বেলজিয়ামের কাছে ১-০ গোলে হারের পরও হাঙ্গেরিকে ৪-১ ও এলসালাবদরকে ১-০ গোলে হারিয়ে উঠেছিল দ্বিতীয় পর্বে। দ্বিতীয় পর্বে তাদের যাত্রা সুখকর ছিল না। ইতালির কাছে ২-১ ও ব্রাজিলের কাছে ৩-১ গোলে হেরে ফিরেছিল রিক্ত হস্তে।
১৯৯০ সালে প্রথম হেরেছিল রানার্সআপ হিসেবে। প্রতিপক্ষ ছিল রজার মিলারের ক্যামেরুন। ১-০ গোলে হারের পর দ্বিতীয় পর্বে গিয়েছিল গ্রুপের সেরা তৃতীয় দল হিসেবে। গ্রুপেরর পর দুই ম্যাচে সোভিয়েত ইউনিয়নকে ২-০ গোলে হারালেও রুমানিয়ার সঙ্গে ড্র করেছিল ১-১ গোলে। এই দুই দলের পয়েন্টই সমান ৩ করে ছিল। গোল গড়ে আর্জেন্টিনার অবস্থান হয়েছিল তৃতীয়।
আর্জেন্টিনা দ্বিতীয় পর্বে গিয়েছিল ছয় গ্রুপের সেরা চার তৃতীয় দলের একটি হয়ে। এরপর আর তাদের পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। শেষ ষোলতে ব্রাজিলকে ১-০ গোলে হারানরো পর কোয়ার্টার ফাইনালে যুগশ্লাভাকিয়াকে টাইব্রেকারে ( নির্ধারিত সময় খেলা গোলশূন্য ড্র ছিল) ৩-২ গোলে পরাজিত করে পৌছে যায় সেমি ফাইনালে। এখানেও তারা জয়ী হয়েছিল টাইব্রেকারে। ইতালির সঙ্গে নির্ধারিত সময় ১-১ গোলে ড্র করার পর টাইব্রেকারে জয়ী হয়েছিল ৪-৩ গোলে। এরপর আসে কঙ্খিত ফাইনাল। ফাইনালে তারা জামার্নির কাছে হেরে গিয়েছিল ১-০ গোলে।
আর্জেন্টিনার আগের পাঁচ হারের একটি বৈশিষ্ট্য ছিল সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নিজেদের অবস্থানের উন্নতি করেছে। ড্রথম দুইবার প্রথম রাউন্ডে বিদায় নেওয়ার পর পরের দুইবার দ্বিতীয় পর্ব থেকে বিতায় নিতে পেরেছিল। শেষবারতো ফাইনালই খেলেছি। এবার কী?
আজ মেক্সিকোর বিপক্ষে ম্যাচ শেষে তার একটা চিত্র পাওয়া যাবে।
এমপি/এমএমএ/