মেসির আর্জেন্টিনা কাউকে ভয় পায় না
ঘরভর্তি ট্রফি। সেখানে ছয়-ছয়টি ব্যালন ডি’অর। আর কত শত অর্জনের ছাপ! এমন মহানায়কের হাতের ছোঁয়া পায়নি বিশ্বকাপ ট্রফি। বলা হচ্ছে, লিওনেল মেসির কথা। যাকে নিয়ে হোর্হে সাম্পাওলির উক্তি ছিল এমন, ‘তার কাছে ঋণী ফুটবল’।
সাবেক আর্জেন্টাইন কোচের এমন আক্ষেপ কোটি কোটি ভক্তেরও। তাই তো বিশ্বকাপে মেসির শেষটায় আরও একবার আর্জেন্টিনার বিশ্বজয়ের স্বপ্ন হৃদয়ে ধারণ করছেন তারা। ভক্তদের সাহস যোগালেন পিএসজি সুপারস্টারও। বিশ্বকাপের আগে মেসির উচ্চস্বর, আর্জেন্টিনা কাউকে ভয় পায় না।
সাম্প্রতিক সময়ে দল হিসেবে সেরা ছন্দে আছে আর্জেন্টিনা। বার্সেলোনায় মেসির যে জৌলুস ছিল সেটাও ফিরেছে। বছরজুড়ে জাতীয় দলের জার্সিতে তার দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখেছে বিশ্ব। চলতি মৌসুমে পিএসজি শিবিরে তিনি অদ্বিতীয়। মেসির খেলা দেখে বোঝার উপায় নেই ৩৫ ছুঁয়েছে তার বয়স! এক কথায়, দুরন্ত মেসি আর দুর্দান্ত আর্জেন্টিনায় ভক্তরাও জেগে উঠেছে নব উদ্যোমে। এসব বুঝতে বাকি নেই আর্জেন্টাইন প্রাণভোমরার।
প্রত্যাশার ভিড়ে কিছু অপ্রিয় সত্য আগ থেকেই বলে রাখলেন মেসি, ‘এখন আমরা ভালো করছি এবং লোকেরা উত্তেজিত। ভাবছে যে আমরা কাপ নিয়ে ফিরে আসব, তবে এটি এমন নয়। বিশ্বকাপ খুব কঠিন, অনেক কিছু ঘটাতে হবে (এটি জিততে)। আমরা ভালো করছি, এটাই একমাত্র বিষয় নয়। অনেক কিছু আছে যা আপনাকে (টুর্নামেন্ট থেকে) বের করে দিতে পারে। অনেক দল আছে যাদের চাওয়াটা আমাদের মতোই এবং ভালো করছে।’
তবে মেসি যে তার শেষ বিশ্বকাপটা খুব করেই জিততে চান তা বেশিক্ষণ লুকিয়ে রাখতে পারেননি তিনি। একটি ব্রডকাস্টার চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বার্সার সাবেক মহানায়ক বলেছেন, ‘(কাতার বিশ্বকাপে) আমরা আগ্রহ নিয়েই লড়াই করতে যাচ্ছি। আমরা কাউকে ভয় পাই না। কারণ আমরা যে কারও সঙ্গে খেলতে প্রস্তুত, তবে মানসিক শান্তি নিয়ে।’
রাশিয়া বিশ্বকাপে মেসির শুরুটা ছিল দুঃস্বপ্নের মতো। ওই আসরে নিজেদের প্রথম ম্যাচে আইসল্যান্ডের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করেছিল আলবিসেলেস্তেরা। ওই ম্যাচে পেনাল্টি মিস করেছিলেন মেসি। সেই দুঃস্বপ্ন কাটিয়ে আর্জেন্টিনা তাদের গ্রুপের দ্বিতীয় দল হিসেবে নকআউট পর্ব নিশ্চিত করেছিল। কিন্তু ছুটতে পারেনি বেশি দূর। শেষ ষোলোতে বিদায় ঘণ্টা বাজে ফ্রান্সের কাছে হেরে। এবার কাতার বিশ্বকাপে শুরুতে ওইরকম ভুলের ছাপ রাখতে চান না মেসি।
মেসির পঞ্চম বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা পড়েছে কঠিন গ্রুপে। ‘সি’ গ্রুপে তাদের তিন প্রতিপক্ষ- মেক্সিকো, পোল্যান্ড এবং সৌদি আরব। বিশ্বমঞ্চে আলবিসেলেস্তেদের প্রথম ম্যাচ ২২ নভেম্বর। সৌদি আরবের বিপক্ষে নিজেদের উদ্বোধনী ম্যাচটিকে দলের সম্ভাবনার চাবিকাঠি হিসেবে দেখছেন মেসি, ‘প্রথম ম্যাচের প্রথম মিনিটে স্নায়ু এবং উদ্বেগ নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন। আমি মনে করি প্রথম খেলাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ একটি জয় দিয়ে (টুর্নামেন্ট) শুরু করা আপনাকে মানসিক শান্তি দেয়।’
আর্জেন্টাইন এই তারকা যোগ করেন, ‘গত বিশ্বকাপ আমরা একটি ড্র দিয়ে শুরু করেছিলাম এবং আমি সব সময় বলেছি যে আমি যদি পেনাল্টিতে গোল করতাম, তাহলে আমরা ওটা জিততাম এবং পুরো গল্পটাই বদলে দিতাম।’
সেই ভুল থেকে শিক্ষা নেওয়া মেসি ও তার বাহিনীর ‘নতুন গল্প’ কেমন হয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
এসজি