ডাচ অঘটন, প্রোটিয়াদের হারে সেমির আশায় বাংলাদেশ
সুপার টুয়েলভের শেষ দিনটা আরও জমিয়ে তুলল নেদারল্যান্ডস। বিদায়ের প্রাক্কালে অঘটনের জন্ম দিল ডাচরা। রবিবার (৬ নভেম্বর) ১৩ রানে হারিয়েছে শক্তিশালী দক্ষিণ আফ্রিকাকে। তাতে বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সেমিফাইনাল খেলার আশা টিকে থাকল।
অ্যাডিলেড ওভালে প্রথমে ব্যাটিং করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৪ উইকেটে ১৫৮ রানের চ্যালেঞ্জিং পুঁজি পায় নেদারল্যান্ডস। রান তাড়ায় শেষ ওভার পর্যন্ত লড়ে প্রোটিয়ারা। কিন্তু চাপের মুখে জয়ের বন্দরে পৌঁছানোর সৌভাগ্য হয়নি তাদের। দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস থামে ৮ উইকেটে ১৪৫ রানে।
বিশ্বকাপে প্রোটিয়া পেসারদের গতির সামনে খড়কুটোর মতো উড়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ ও ভারতের ব্যাটাররা। ধস নেমেছিল পাকিস্তানের টপ-অর্ডারেও। তবে ডাচ ব্যাটাররা ভালোভাবেই সামলে নেন আনরিচ নর্টজে-কাগিসো রাবাদাদের। বিশেষ করে দুই ওপেনার স্টিফেন মাইবার্গ ও ম্যাক্স ও’ডাউড। দলকে ৫৮ রানের উদ্বোধনী জুটি উপহার দেন।
মাইবার্গ ও ম্যাক্স দুজনের মিলে খেলে দেন গুরুত্বপূর্ণ ৮.৩ ওভার। মাইবার্গকে শিকার বানিয়ে এই প্রতিরোধ ভাঙেন এইডেন মার্করাম। এরপর টম কুপারকে সঙ্গে নিয়ে জুটি গড়েন ম্যাক্স। এই যুগলের ২৫ বলের জুটিতে আসে ৩৯ রান। পরপর দুই ওভারে দুজনকেই মাঠছাড়া করেন কেশভ মহারাজ। ম্যাক্স আউট হন ৩১ বলে ২৯ রান করে। ১৯ বলে ৩৫ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন কুপার।
ডাচদের চতুর্থ উইকেটের পতন ঘটান নর্টজে। তিনি শিকার বানান ব্যাস ডি লিডকে (১)। তখন ১৭.১ ওভারে নেদারল্যান্ডসের সংগ্রহ ছিল ১২৩ রান। সেখান থেকে দলের পুঁজি ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে তুলেন কলিন অ্যাকারম্যান। ২৬ বলে ৩ চার ও ২ ছক্কায় ৪১ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। ৭ বলে ১২ রান করে উইকেটের অপরপ্রান্তে অপরাজিত ছিলেন ডাচ অধিনায়ক স্কট এডওয়ার্ডস।
রান তাড়ায় শুরু থেকেই চাপে ছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে প্রোটিয়া শিবিরে আঘাত হানেন ফ্রেড ক্লাসেন। কুইন্টন ডি কককে (১৩) এডওয়ার্ডসের ক্যাচ বানান এই বাঁহাতি পেসার। প্রতিপক্ষের অধিনায়ক টেম্বা বাভুমাকে থামান পল ফন মিকেরেন। ২০ বল খেলে দলের খাতায় ২০ রান যোগ করতে পারেন বাভুমা।
পাওয়ারপ্লেতে ২ উইকেট হারিয়ে ৩৯ রান সংগ্রহ করতে পারে দক্ষিণ আফ্রিকা। দলের বিপদের দিনে উইকেটে থিতু হয়ে মারমুখী হয়েছিলেন রাইলি রুশো। কিন্তু তাকে বেশিদূর এগোতে দেননি ব্র্যান্ডন গ্লোভার। ১৯ বলে ২৫ রান করে এই ডাচ পেসারের শিকার হন রুশো। ১৭ রান করা মার্করামকে প্যাভিলিয়নের পথ দেখান ক্লাসেন।
ইনিংসের ১৬তম ওভারে প্রোটিয়াদের সর্বনাশ করেন গ্লোভার। একে একে আউট করেন ডেভিড মিলার (১৭) এবং ওয়েন পারনেলকে (০)। তাতে শেষ ৩ ওভারে জয়ের জন্য ৪১ রান প্রয়োজন ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার। কিন্তু বাঁচা-মরার ম্যাচে শেষ পর্যন্ত কঠিন এই সমীকরণ মেলাতে পারেনি তারা। মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের আশা বাড়িয়ে।
এই হারে প্রোটিয়াদের সেমির ভাগ্য ঝুলে থাকলো পরের দুই ম্যাচে। একমাত্র বৃষ্টিই পারে তাদের বাঁচাতে। কারণ বাংলাদেশ-পাকিস্তানের মধ্যকার দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে ফল এলেই বিদায় নেবে। সমান ৪ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় গ্রুপ টেবিলে যথাক্রমে তৃতীয় ও পঞ্চম স্থানে আছে পাকিস্তান আর বাংলাদেশ। ৫ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে অবস্থান করছে দক্ষিণ আফ্রিকা।
আরএ/