যে জয়ে স্বস্তি আছে তৃপ্তি নেই
২০০৭ সালের ৯ সেপ্টেম্বর প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ উইন্ডিজকে ৬ উইকেটে হারিয়েছিল। এর আগে তারা তিনটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলে জয় পেয়েছিল দুইটিতে। তারপর উইন্ডিজের বিপক্ষে এই জয় টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বাংলাদেশের যাত্রালগ্নটা ছিল বেশ সাড়ম্বর। কিন্তু এরপর বাংলাদেশ খেই হারিয়ে ফেলে।
এমনই খেই হারায় যে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দ্বিতীয় জয় পেতে অপেক্ষা করতে হয়েছে প্রায় ১৫ বছর। সেই জয় এসেছে আজ নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ৯ রানে। সময়ের হিসেবে ১৫ বছর ১ মাস ১৫ দিন। মাঝে বাংলাদেশ খেলেছে একে একে আরও ৬টি বিশ্বকাপ। কিন্তু জয় অধরাই থেকে গেছে। যদিও এই ৬টি আসরে বাংলাদেশ প্রাথমিক পর্ব খেলে চূড়ান্ত পর্বে গিয়েছিল জয় পেয়েই।
এই একটি জয় বাংলাদেশের জন্য ছিল বহুল প্রত্যাশিত। একদিকে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে প্রথম জয় পাওয়ার পর আর জয় না পাওয়া, অন্যদিকে সাম্প্রতিক সময়ে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের দুদর্শা কাটানো। তাই এক জয়ে বাংলাদেশের দুইটি আশা পূর্ণ হয়েছে। এই দুই জয়ের মাঝে শেষেরটি বাংলাদেশের জন্য অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ। কারণ সাম্প্রতিক সময়ে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এতটাই বাজে সময় যাচ্ছিল যে প্রতিপক্ষ কোনো দল তা বিবেচ্য নয়, জয়টাই মূখ্য। সেটি এসেছে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে। এই জয়ে স্বস্তি আছে, কিন্তু তৃপ্তি নেই। কারণ জয়টা এসেছে অনেক কষ্টে। ব্যবধান যে শুধু ৯ রানের তা নয়, টস হেরে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশের সংগ্রহ ছিল ৮ উইকেটে ১৪৪ রান মাত্র। তাসকিন ইনিংসের প্রথম ২ বলেই ২ উইকেট না নিলে ম্যাচের গতিপথ ভিন্নও হতে পারত!
বল হাত এমন সূচনার পরও কিন্তু বাংলাদেশ আরামদায়ক জয় পায়নি। শেষ ২ ওভারে প্রয়োজন ছিল ৩২ রানের। শেষ ওভারে ২৪ রানের। নেদারল্যান্ডস শেষ ওভারে ১৪ রান সংগ্রহ করতে পেরেছিল। কিন্তু প্রশ্ন থেকে গেছে ব্যাটিং লাইন নিয়ে। ৮ জনের লম্বা ব্যাটিং লাইন। প্রতিপক্ষ আইসিসির সহযোগী সদস্য। এমন দলের বিপক্ষে এতে বড় লম্বা ব্যাটিং লাইন যদি মাত্র ১৪৪ রানের পুঁজি দাঁড় করায় তাহলে বড় দলগুলোর বিপক্ষে কী অবস্থা হবে?
কী হবে, তা পরের কথা। সেখানে শঙ্কা আছে, থাকবেও। তবে জয় দিয়ে আসর শুরু করতে পারাটা খুবই ইতিবাচক। ক্রিকেটারদের মনোবল চাঙা থাকে। আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায়। যে আত্মবিশ্বাসে বলীয়ান হয়ে অনেক ভালো কিছু করার সম্ভাবনার বীজও বপন হয়ে থাকে। এখন শুধু অপেক্ষার পালা। স্বস্তির জয় থেকে পরবর্তীতে তৃপ্তি আসে কি না?
এমপি/এসজি