মহারণে জয়ী ভারত
জয়ের লক্ষ্য ছিল ১৬০ রান। পাকিস্তানের বিপক্ষে রান তাড়ায় ৩১ রানে ৪ উইকেট খুইয়ে বসে ভারত। তখন রোহিত শর্মাদের হারই দেখছিল সবাই। সব ধারণা ভুল প্রমাণিত করলেন বিরাট কোহলি। মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে অতিমানবীয় ব্যাটিংয়ে পাকিস্তানের জয় ছিনিয়ে নিয়েছেন এই ভারতীয় ব্যাটার।
রবিবার (২৩ অক্টোবর) বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভে দুই দলের প্রথম ম্যাচে ভারতকে ৪ উইকেটের শ্বাসরুদ্ধকর জয় উপহার দিয়েছেন কোহলি।
এদিন হাইভোল্টেজ ম্যাচে স্নায়ুচাপ ধরে রাখতে পারেনি ভারতের টপ অর্ডার ব্যাটাররা। দুই ওপেনার লোকেশ রাহুল এবং রোহিত শর্মা সাজঘরের পথ ধরেন ৪ রান করে। রাহুলকে আউট করেন নাসিম শাহ। ভারতীয় অধিনায়ককে শিকার বানান হারিস রউফ। আলো ছড়ানোর আগেই সূর্যকুমার যাদবকে (১৫) থামান হারিস। রান আউট হয়ে দলের বিপদ আরও বাড়ান অক্ষর প্যাটেল (২)। এরপর ম্যাচের বাকি অংশে ছিল কেবল কোহলি-শো।
হার্দিক পান্ডিয়াকে সঙ্গে নিয়ে ভারতের রানের চাকার গতি সচল রাখেন কোহলি। এই যুগলের ১১৩ রানের (৭৮ বলে) জুটিতে ভারতের জয়ের স্বপ্ন তাজা হয়। কোহলিকে দারুণ সঙ্গ দিলেও এদিন বিধ্বংসী রূপে আবির্ভাব হতে পারেননি পান্ডিয়া। তবে ৩৭ বল খেলে দলের খাতায় যোগ করেন গুরুত্বপূর্ণ ৪০ রান।
ম্যাচের শেষ ওভারের প্রথম বলে পান্ডিয়াকে আউট করেন মোহাম্মদ নওয়াজ। তখন জয়ের জন্য ৫ বলে ১৬ রান প্রয়োজন ছিল ভারতের। উইকেটে নেমেই ওভারের দ্বিতীয় বলে ১ রান নিয়ে স্ট্রাইকে কোহলিকে পাঠান দিনেশ কার্তিক। তৃতীয় বলে ভারতের সাবেক অধিনায়ক নেন ২ রান। চতুর্থ বলে হাঁকান ছক্কা। সেটাও আবার ছিল নো বল। এরপর ওয়াইড। পরের বলে কোহলি ৩ রান নিলে স্ট্রাইকে যান কার্তিক। পঞ্চম বলে তাকে স্টাম্পিং করেন কিপার রিজওয়ান। শেষ বলে জয়ের জন্য ভারতের প্রয়োজন ছিল ২ রান। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ফের ওয়াইড ডেলিভারি নওয়াজের। পরে ম্যাচের শেষ বলে রবিচন্দ্রন অশ্বিন ১ রান নিতেই জয়ের উল্লাসে মাতে ভারত। উইকেটের অপরপ্রান্তে ৮২ রানে অপরাজিত ছিলেন কোহলি। ৫৩ বলে ৬ চার এবং ৪ ছক্কায় অবিশ্বাস্য এক ইনিংস খেলায় ম্যাচ সেরার খেতাব উঠেছে তার হাতেই।
এর আগে ম্যাচের প্রথম ইনিংসে বোলারদের নৈপুণ্যে ভারতের শুরুটা ছিল দারুণ। সাবেকরা বলেছিলেন, রোহিতদের জিততে হলে দ্রুত আউট করতে হবে বাবর আর মোহাম্মদ রিজওয়ানকে। দুরূহ এই কাজটা করেন আর্শদীপ সিং। ভারতীয় এই পেসারের তোপের মুখে গোল্ডেন ডাক মারেন পাকিস্তান অধিনায়ক। আর ১২ বল খেলে মাত্র ৪ রান করতে পারেন রিজওয়ান।
দলের বিপর্যয়ে শক্তভাবেই হাল ধরেন পরের দুই ব্যাটার শান মাসুদ ও ইফতিখার আহমেদ। ৫০ বলে এই যুগলের ৭৬ রানের জুটিতে ম্যাচে ফেরে পাকিস্তান। দুজনেই তুলে নেন হাফ সেঞ্চুরি। শান অপরাজিত ছিলেন ইনিংসের শেষ পর্যন্ত। ৪২ বলে ৫ চারে ৫২ রান করেন তিনি। ইফতিখার ছিলেন মারমুখী। ৩৪ বলে ৫১ রানের ইনিংস সাজান ২ চার ও ৪ ছক্কায়।
ইফতিখারকে আউট করেন মোহাম্মদ শামি। এরপর প্রতিপক্ষের মিডল অর্ডারে ধস ধরান হার্দিক পান্ডিয়া। একে একে শাদাব খান (৫), হায়দার আলি (২) এবং মোহাম্মদ নওয়াজকে (৯) আউট করেন ভারতীয় অলরাউন্ডার। আসিফ আলিকে (২) উইকেটে থিতু হতে দেননি আর্শদীপ। শেষ দিকে একটি করে চার ও ছক্কায় ৬ বলে ১৬ রান
করে ভুবনেশ্বর কুমারের শিকার হন শাহিন শাহ আফ্রিদি।
মূলত মিডল অর্ডারের ব্যর্থতায় মহারণে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৫৯ রানে থামে পাকিস্তানের ইনিংস। দারুণ বোলিংয়ে ৩টি করে উইকেট পান আর্শদীপ এবং
পান্ডিয়া। ভুবনেশ্বর ও শামি পান ১টি করে উইকেট।
এসজি