দ.আফ্রিকার বিপক্ষেও ল্যাবরেটরিতে চলবে বাংলাদেশের পরীক্ষা?
টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে বাংলাদেশ দল কি ধীরে ধীরে কোমায় চলে যাচ্ছে? সাধারণ বেড থেকে সিসিইউ হয়ে আইসিইউতে। এখান থেকে সুস্থ হয়ে ফিরতে না পারলে সাধারণত একজন রোগী কোমায় চলে যান। হারতে হারতে বেহাল অবস্থায় থাকা বাংলাদেশ দলের অবস্থা অনেকটা কোমায় যাওয়ার মতো। কারণ দুই দিন পরই মূল পর্বে খেলতে নামবে বাংলাদেশ। অথচ এখনো চলছে ‘ল্যাবরেটরি’তে পরীক্ষা-নিরীক্ষা। এই পরীক্ষা-নিরীক্ষা কখন, কোথায় করা হচ্ছে? আইসিসির অফিসিয়াল প্রস্তুতি ম্যাচে।
আইসিসি এসব প্রস্তুতি ম্যাচে দলগুলোর জন্য ব্যবস্থা করে থাকে সাধারণত কন্ডিশন ও উইকেটের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি টুকটাক ভুল-ত্রুটি শুধরে নেওয়ার জন্য। সবগুলো দল যখন এসব করছে, সেখানে বাংলাদেশ নিজেদের সেরা একাদশের সন্ধানে অনবরত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে যাচ্ছে। একটি দলের অবস্থা কতটা বাজে হলে এরকম একটি মঞ্চে নিজেদের খুঁজে ফিরে? আগামী ২৪ অক্টোবর বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে মাঠে নামার আগে আগামীকাল বুধবার (১৯ অক্টোবর) ব্রিসবেনের অ্যালান বোর্ডার ক্রিকেট মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বাংলাদেশ খেলবে শেষ প্রস্তুতি ম্যাচ। নিজেদের হারিয়ে খোঁজা বাংলাদেশ দল এই ম্যাচেও পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাবে। আফগানিস্তানের কাছে হারের পর আজ মঙ্গলবার সারা দিন বিশ্রামে ছিল দল।
বাংলাদেশ দলের এই পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু হয়েছে এশিয়া কাপ থেকে। এরপর সংযুক্ত আরব আমিরাত ও নিউ জিল্যান্ডে হয়েছে আরেক দফা। ফলাফল পজেটিভ না আসায় চলছে বিশ্বকাপের প্রস্তুতি ম্যাচেও। প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে এমনই পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানো হয়। ফলাফল আসে যথারীতি ‘অশ্বডিম্ব’। আফগানিস্তানের রান যেমন বোলাররা আটকাতে পারেননি, তেমনি ব্যাটসম্যানরা নিজেরা রান করতে পারেননি। আফগানিস্তানের ৭ উইকেটে ১৬০ রানের জবাব দিতে নেমে বাংলাদেশ শতরানও করতে পারেনি। ৯ উইকেটে মাত্র ৯৮ রান করতে পেরেছিল।
ল্যাবরেটরিতে আরেক দফা উদ্বোধনী জুটিতে পরিবর্তন আনা হয় মিরাজ-নাজমুলকে দিয়ে। যথারীতি তারা ব্যর্থ। এই ব্যর্থতা পরে সংক্রমিত হয়ে পড়ে। যে সংক্রমণ রোধ করা আর সম্ভব হয়নি বাকি ব্যাটসম্যানদের। এই বিশাল শূন্যতার কারণে অন্য দলগুলো যেখানে নিজেদের সেরা একাদশ একরকম চূড়ান্ত করেই অনুশীলন করছে, সেখানে বাংলাদেশ অথৈ সাগরে খাচ্ছে হাবুডুবু। আসরের বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচের প্রতিপক্ষ যেমন এখনো চূড়ান্ত হয়নি, তেমনি বাংলাদেশেরও। তবে তা অনেক পরের কথা, আগামীকাল দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ম্যাচেও বাংলাদেশের সেরা একাদশে কারা খেলবেন তা নিশ্চিত নন।
প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নুও সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে এসে দিতে পারেননি কোনো আভাস। অনেকটা অন্ধকারে হাঁটার মতো তিনি বলেন, ‘এটা এই মুহূর্তে বলা কঠিন। সিদ্ধান্ত তো টিম ম্যানেজমেন্ট নেয়। আগামীকাল (বুধবার) আমরা বলতে পারব।’
মনকে বুঝ দিতে বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচের আগে বাংলাদেশ সেরা একাদশ পেয়ে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে মিনহাজুল আবেদীন নান্নু বলেন, ‘একটা ব্যাপার বলতে পারি, টুর্নামেন্টে আমাদের প্রথম ম্যাচের আগে দলকে পুরোপুরি প্রস্তুত করার জন্য আরও চারটি প্র্যাকটিস সেশন আছে। সেই হিসেবে আমি মনে করি, এর আগেই দল প্রস্তুত হয়ে যাবে। আশা করি, সবাই নিজেদের প্রস্তুত করে প্রথম ম্যাচ থেকেই সেরাটা দিতে মাঠে নামবে।’
এই সেরাটা দেওয়ার জন্য চেষ্টারও কমতি নেই বলে জানান প্রধান নির্বাচক। তিনি বলেন, ‘চেষ্টার তো কমতি রাখছি না। সবাই চেষ্টা করে যাচ্ছে ভালো করার জন্য। অস্ট্রেলিয়াতে কিন্তু অনেক দিন পর খেলা বাংলাদেশের… খেলোয়াড়দের জন্য একদম নতুন একটা অভিজ্ঞতা। আমাদের অনেক খেলোয়াড় এখানে কোনো ম্যাচই খেলেনি। সবাই কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। আশা করছি, আগামীকালের প্র্যাকটিস ম্যাচের পর বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচের আগে সবাই নিজেদের শুধরে নিয়ে পুরো প্রস্তুত হতে পারবে।’
নান্নুর কথার সারমর্ম হলো দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে আগামীকালের প্রস্তুতি ম্যাচ থেকেও সেরা একাদশ পাওয়া কঠিন। সর্বশেষ অবলম্বন, বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচের আগে চারটি অনুশীলন সেশন। এ যেন খড়কুটো ধরে বাঁচার চেষ্টা!
এমপি/এসজি